Ad-1

Wednesday, October 16, 2019

রবীন্দ্রনাথের 'নৌকাডুবি '- উপন্যাসের সার সংক্ষেপ

নৌকাডুবি (১৯০৬)
চরিত্র ও তথ্য সমূহ
১. রমেশঃকলকাতা/Law/বাবার চিঠি/
২. হেমনলিনীঃমাতৃহীন/
৩. কমলাঃ
৪. ডাক্তার নলিনাক্ষঃ
* গঙ্গার প্রবল ঘুর্ণিঝড় 
Oh what a climax! ধীরে ধীরে চরম উত্তেজনায় পৌঁছে দিতে রবী ঠাকুর অনবদ্য।নোবেল বিজয়ী রবীন্দ্রনাথের সামাজিক উপন্যাস নৌকা ডুবি(১৯০৬)।
.
উপন্যাসের নায়ক রমেশ কলকাতায় Law পড়তে গিয়ে পরিচয় ঘটে নায়িকা হেমনলিনীর সাথে। সংস্কৃতিমনা, শিক্ষিত, রুচিশীল মাতৃহীনা নারী হেম বাবার অতি আশকারার দুলালী।রবীন্দ্রনাথ হেমের বাবাকে বন্ধুর আসনে বসিয়ে তৎকালিন মার্জিত পিতার চমকপ্রদ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
.
হঠাৎ বাবার চিঠি পেয়ে নায়ক রমেশ বাড়িতে গিয়ে জানতে পারলো অশিক্ষিত দরিদ্র্য এক গ্রাম্য মেয়ের সাথে তার বিয়ে নির্ধারিত হয়েছে। হেমকে ভালবাসে এমন কথা রমেশ তার বাবাকে বললেও, পরিস্থিতি অতটাই জটিল হলো যে রমেশ ঐ নিরক্ষর মেয়েকেই বিয়ে করতে বাধ্য হলো। উপন্যাসের ক্লাইমেক্স শুরু এখান থেকেই। বিয়ে শেষে বরযাত্রী যখন কনে নিয়ে গঙ্গার পার হচ্ছিলো তখনই গঙ্গার প্রবল করাল ঘূর্ণিপাকে সব লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। রমেশ নিজেকে এবং পাশে তীরে পরে থাকা এক নববধূকে আবিষ্কার করে কলকাতায় গিয়ে সংসার শুরু করলো।
.
নায়কের নবপরিণীতার নাম কমলা। স্বল্পভাষী কমলার দাবি সে সংসারে রমেশের কাছ থেকে কখনো ভালবাসা পায়নি, পেয়েছে স্নেহ। সংসার জগতে ভালবাসা আর স্নেহের পার্থক্য উপন্যাসকে এক রহস্যের দিকে ধাবিত করে।
রমেশের হৃদয়পটে হেমের উপস্থিতি এতটাই গভীর যে কমলার সংসারে মনোযোগী হতে পারছিল না। রমেশ এক সময় বুঝতে পারে কমলা তার বাবার ইচ্ছেতে বিয়ে করা সে গ্রাম্য মেয়েটি না। গঙ্গার সেদিনের উত্তাল ঝড়ে সবাই ভেসে যায়।কমলারও সেদিন এক ডাক্তারের সাথে বিয়ে হয়েছিল।
.
কমলা রমেশের সাতপাকে বাধা স্ত্রী নয় বুঝতে পেরে চাতকের ন্যায় প্রহর কাটানো হেমকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় এবং কমলার কথা গোপন রাখে। এদিকে হেমকে পছন্দ করা তার ভাইয়ের বন্ধু জানতে পারে রমেশ বিবাহিত। এই সংবাদ জানাজানি হয়ে গেলে রমেশ কমলাকে নিয়ে কলকাতা ত্যাগ করে। এমন সংবাদে হেম বাকরুদ্ধ ও অসুস্থ হয়ে পড়ে।
.
কমলা এক বিজ্ঞপ্তি মারফত জানতে পারলো রমেশ তার স্বামী নয়। নিজের জীবন উৎসর্গে গঙ্গায় ঝাঁপ দিলে জেলেরা তাকে উদ্ধার করে এক বাড়িতে দাসী হিসেবে রেখে আসে।
.
হেমনলিনীকে তার ভাই বন্ধুর সাথে বিয়ে দিতে চেষ্টা করলে বাবা হেমের পক্ষাবলম্বন করেন। আসাধারণ সব যুক্তির সমাবেশ রচনা করেছেন রবীন্দ্রনাথ এই অংশে। হেমকে নিয়ে বাবা সফরে বের হলে পরিচয় ঘটে ডাক্তার নলিনাক্ষের সাথে। রমেশের জন্য হেমের প্রাণ অতিসয় বিয়োগগ্রস্ত। এদিকে ডা: নলীনাক্ষ হেমের অশান্ত মনে কিছুটা প্রণয়ের সুর তুলে। হেমের বিষাদ অসুস্থ মনের দায়িত্ব নিতে ডাক্তারবাবুকে হেম সম্মতি দেয়। উপন্যাসের এমত ক্ষণে পাঠক হৃদয়ে ভালোবাসার ভগ্ন চিত্র দৃশ্যত হয়। বিয়ের কথাও পাকাপাকি হয়ে গেল ডাক্তার আর হেমের। কি হবে রমেশের!
.
কি নিয়তি! কমলা আজ দাসী তার নিজ স্বামীর ঘরে। আর এদিকে রমেশ ব্যাকুলে হেমের জন্যে। রমেশ হঠাৎ করেই হেমের গৃহে হাজির হলে হেম সব কিছু ত্যাগ করে ভালবাসাকে নিরবধি চিত্তে সম্মান দেখিয়ে রমেশের পাণিগ্রহণ করে। রমেশ ডাক্তারবাবুকে কমলার পরিচয় দিলে বুঝতে পারে কমলাই ডাক্তারের সেই গঙ্গায় হারিয়ে যাওয়া বউ।
.
এক নৌকা ডুবি মানুষকে সামাজিকভাবে কতটা বৈচিত্রময় করে তুলে তার নিদারুণ কাহিনীই জায়গা করে নিয়েছে রবী ঠাকুরের এই নৌকা ডুবি উপন্যাসে।

No comments:

Post a Comment

Recent Post

ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯

১. ‘ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ ’ কবিতায় সালামের হাতে কেন অবিনাশী বর্ণমালা ঝরে ? ক. সংগ্রামী চেতনার কারণে     খ. দুঃখিনী মাতার অশ্রুজল দেখে গ. বরকত...

Most Popular Post