Ad-1

Showing posts with label এল এল.বি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কোর্স. Show all posts
Showing posts with label এল এল.বি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কোর্স. Show all posts

Thursday, July 1, 2021

আদালতের বিচারকরা ভেড়ার পশমের তৈরি পরচুলা পরে কেন?

ব্রিটিশ শাসন আমল থেকে ভারতীয় সংস্কৃতিতে মিশে রয়েছে ব্রিটিশ সংস্কৃতি। যুক্তরাজ্যের আদালতে ড্রেস কোডের প্রচলন শুরু হয় ১৭ শতাব্দীতে।
তখন বিচারক-আইনজীবীরা বিভিন্ন রঙের গাউন, ব্যান্ড ও পরচুলা পরতো। এর অনেক কিছুর এখনো প্রচলন রয়েছে।
পরবর্তীতে ব্রিটিশরা পৃথিবীর যেসব দেশ শাসন করেছে সেসব দেশে তাদের এসব সংস্কৃতির প্রচলন ঘটেছে। যার মধ্যে বাংলাদেশ একটি।
ব্রিটিশদের সাদা-লম্বা পরচুলা পরার রেওয়াজ আমাদের দেশ থেকে প্রায় উঠে গেছে। আগে সব বিচারকদের এই পরচুলা পরতে হতো। এখন শুধুমাত্র প্রধান বিচারপতি এই পরচুলা পরে থাকেন।
কিন্তু বিচারকের পরচুলা পরিধান ছাড়া যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে এখনও কোনো বিচারকাজ সম্পন্ন হয় না। তারা এখনও এর গুরুত্ব এবং নিগূঢ় দর্শন আঁকড়ে আছেন।
সাদা পরচুলার পেছনের রহস্য হলো, সাদা চুলের বৃদ্ধা মা-জননী সন্তানের প্রতি যেমন স্নেহপরায়ণ, তেমনি তার কাছে সব সন্তান একই এবং সমান।
কারও প্রতি অবিচার করার মানসিকতা তার থাকে না। সে আলোকে বিচারপ্রার্থী দু’পক্ষই (বাদী ও বিবাদী) বিচারকের সন্তান বলে বিবেচ্য।
তাই বিচারকার্যে যাতে সঠিক বিচারের পথ সমুন্নত থাকে এবং কোনো পক্ষপাতিত্বের অবকাশ না থাকে, এজন্য এজলাসে দু’পক্ষের কথা ও আবেদন মায়ের মত আন্তরিকভাবে শুনে, বিচারক ঠাণ্ডা মাথায় রায় দিয়ে থাকেন।
যাতে বিবাদীর আত্মপক্ষ সমর্থনের মৌলিক অধিকার (fundamental rights) ও ন্যায় পরায়ণতা (equity) বরখেলাপের এতোটুকু সুযোগ না থাকে। ফলশ্রুতিতে সকলের ন্যায়বিচার পাওয়ার পথ সুগম হয়।
_____________________________________
তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া।

Wednesday, May 5, 2021

ডিজিটাল সাক্ষ্য কি? সাক্ষ্য হিসেবে এর গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু?

ডিজিটাল সাক্ষ্য হচ্ছে,  সে সব সাক্ষ্য যা ডাটা, ফটোগ্রাফ, অডিও, ভিডিও, ডিভিডি, মেমরি কার্ড,  হার্ডডিস্ক, ই-মেইল, টেলিগ্রাম, টেলেস্ক, চিপস ইত্যাদি ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসে সংরক্ষিত থাকে।


বাংলাদেশের সাক্ষ্য আইন ১৮৭২ ডিজিটাল সাক্ষ্য  ব্যবহার নিয়ে কোন সুনির্দিষ্ট কিছু বলেনি, বলার কথাওনা কারন ১৮৭২ সালে ডিজিটাল সাক্ষ্যের উপস্থিতিও ছিলোনা। তবে ফৌজদারি (ধারা ৫৬১-এ) এবং দেওয়ানি কার্যবিধি (ধারা ১৫১) অনুসারে, ন্যায়বিচারের স্বার্থে সেখানে বিচারিক  ব্যাখ্যার (জুডিশিয়াল ইন্টারপ্রিটেশন) সুযোগ রেখেছে। 


বহুল আলোচিত খাদিজা হত্যা,  বিশ্বজিত হত্যা এবং রিফাত হত্যাকাণ্ডের বিচারকালে বিচারক অডিও-ভিডিওকে  সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করতে পারবে কি না তা গুরুত্বপূর্ণ আইনগত প্রশ্ন হিসেবে দেখা দেয়। এই ধরনের নতুন সমস্যায় জুডিশিয়াল  ইন্টারপ্রিটেশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি অপরাধ ও হত্যাকাণ্ড সংঘটনের সময় প্রত্যক্ষদর্শীর  দ্বারা ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউবসহ  অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশ ও ভাইরাল হয়েছে। আবার কিছু ক্ষেত্রে  অপরাধ সংঘটনের অভিপ্রায় বা প্রচেষ্টার অডিও-রেকর্ড একইভাবে প্রকাশ ও  ভাইরাল হয়েছে এবং প্রতিনিয়ত কোন না কোন ঘটনা ভাইরাল হচ্ছে। এসব ইলেকট্রনিক  রেকর্ড আদালতে অন্যতম নির্ভরযোগ্য দালিলিক সাক্ষ্য হিসেবে ব্যবহারের আইনের  প্রায়োগিক ও প্রক্রিয়াগত সুযোগ নিয়ে বর্তমানে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে।


ডিজিটাল সাক্ষ্য সম্পর্কিত বিধান ইতোমধ্যে যেসকল আইনসমূহে আনা হয়েছেঃ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন,২০১৮ (ধারা ৫৮), মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন,২০১২ (ধারা ৩০), আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ(দ্রুত বিচার)আইন,২০০২ (ধারা ১৪)।

Tuesday, April 6, 2021

নাবালক ও পাগলের সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়, আইন কি বলে?

 ১৯৭৫ সালের সাবালকত্ব আইন অনুযায়ী ১৮ বৎসরের কম বয়সী যে কোন ব্যক্তি নাবালক। ১৮৮২ সালের সম্পত্তি হস্তান্তর আইন এবং ১৮৭২ সালের চুক্তি আইনের বিধান অনুযায়ী তিনি নিজে কোন সম্পত্তি বিক্রি বা কোন চুক্তি করতে পারেন না। এছাড়া রেজিস্ট্রিশন আইনে ১৯০৮ এর ৩৫ ধারা অনুসারে কোন নাবালক দলিল সম্পাদন করতে পারে না। নাবালকের পক্ষে তার পিতা বা মাতা কিংবা অন্য কোন অভিভাবক সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারেন। পিতা স্বাভাবিক অভিভাবক, তাই পিতাকে নাবালকের অভিভাবক নিযুক্ত হতে হয় না। নাবালকের পক্ষে কোন কাজ সম্পন্ন করতে হলে পিতাকে আদালতের হুকুমের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। পিতা ব্যতীত অন্যরা নাবালকের সম্পত্তি বিক্রয় করতে চাইলে প্রথমে আদালত থেকে অভিভাবক নিযুক্ত হতে হয়। মেজরিটি এ্যাক্ট ১৮৭৫ এ জেলা জজকে এ ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। ১৮৯০ সালের গার্ডিয়ান এন্ড ওয়ার্ডস এ্যাক্ট এর ৮ নং ধারা মতে, নাবালকের অভিভাবক নিয়োগের জন্য আদালতে দরখাস্ত করতে হবে। আদালত সেই দরখাস্ত পরীক্ষা করে দেখবেন এবং প্রয়োজন মনে করলে নাবালকের কল্যাণের জন্য অভিভাবক নিযুক্ত করবেন। আদালত যাকে অভিভাবক নিয়োগ করবেন তিনি আদালতের অনুমতি ছাড়া নাবালকের সম্পত্তি বিক্রি বা বন্ধক দিতে পারবেন না। এবং ১০ নং ধারা অনুযায়ী অনুমোদিত ফরমে তা করতে হবে। আদালত কর্তৃক নাবালকের অভিভাবক নিয়োগ না করা হলে সেক্ষেত্রে নাবালকের বয়স ১৮ বছর পূর্ন হলেই সে সাবালক গণ্য হবে। কাজেই নাবালকের পক্ষে ওই সম্পত্তি বিক্রয়ের অনুমতি নিতে হয়। কোন মানসিক প্রতিবন্ধী বা পাগলের সম্পত্তি বিক্রয়ের জন্যেও একইভাবে আদালতের অনুমতি নিতে হয়। এক্ষেত্রে নির্বোধ, উন্মাদ বা অপ্রকৃতিস্থ বলতে যে কোনো বয়সের ব্যক্তিকেই বোঝাবে।

তবে নাবালকের অনুকূলে বা বরাবরে সম্পত্তি হস্তান্তর করতে আইনে কোন বিধি-নিষেধ নেই। অর্থাৎ অভিভাবক কোনো সম্পত্তি নাবালকের পক্ষে ক্রয় করলে তা বৈধ বলে বিবেচিত হবে। কোনো ব্যাক্তি নাবালকের কাছে কোন সম্পত্তি বিক্রয় করার পর নাবালকত্বের অজুহাতে তা অস্বীকার করতে পারবে না। সুতরাং একজন নাবালক হস্তান্তর গ্রহীতা হতে পারে। কিন্তু দাতা হতে পারে না। দাতা হতে হলে যথাযথ আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে তার পক্ষে তার অভিভাবক সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারেন।


কে হবেন নাবালকের অভিভাবক :

 নাবালক শিশুর অভিভাবক হিসেবে যেসব ব্যক্তির আইনগত স্বীকৃত রয়েছে তারা হলেন বাবা, বাবা কর্তৃক উইল দ্বারা নিয়োগকৃত ব্যক্তি, দাদা ও দাদা কর্তৃক উইল দ্বারা নিয়োগকৃত ব্যক্তি। আপন ভাই, রক্ত সম্পর্কের ভাই, আপন ভাইয়ের ছেলে, রক্ত সম্পর্কীয় ভাইয়ের ছেলে, বাবার আপন ভাইয়ের ছেলে, বাবার রক্ত সম্পর্কীয় ভাইয়ের ছেলে। যে ক্ষেত্রে এ রকম কোনো আত্মীয়ও নেই, সে ক্ষেত্রে আদালত তার স্ববিবেচনামূলক ক্ষমতাবলে যে কাউকে নাবালক, নির্বোধ, উন্মাদ বা অপ্রকৃতিস্থ ব্যক্তির অভিভাবক নিয়োগ করতে পারে। মুসলিম আইনে বাবা হলেন সন্তানের স্বাভাবিক আইনগত অভিভাবক। মুসলিম আইনে মা সন্তানের অভিভাবক হতে পারেন না। তবে মা ৭ বছর বয়স পর্যন্ত পুত্র সন্তানকে ও বয়ঃসন্ধিকাল পর্যন্ত কন্যা সন্তানকে কাছে রাখতে পারেন। এ অধিকারকে বলে ‘হিজানা’ বা জিম্মাদারিত্ব। কিন্তু মা কখনই সন্তানের স্বাভাবিক অভিভাবক হতে পারেন না। কিন্তু বিশেষ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি অভিভাবকত্বের আবেদন করতে পারেন, যেমন মা যদি দেখেন সন্তানের প্রকৃত অভিভাবক যিনি, তিনি ঠিকমতো দেখাশোনা করছেন না বা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হচ্ছেন তবে মা নিজ সন্তানের প্রকৃত কল্যাণের জন্য তার কাছে সন্তান থাকা উচিত মর্মে অভিভাবকত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য আবেদন করতে পারেন।


আদালত কখন অভিভাবক নিয়োগ করেন:

 যদি কোনো নাবালকের স্বাভাবিক অভিভাবক থেকে থাকে, তবে আদালতের মাধ্যমে অভিভাবক নিয়োগের কোনো প্রয়োজন নেই। তবে স্বাভাবিক অভিভাবক তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে বা স্বাভাবিক অভিভাবকের মৃত্যু হলে বা অভিভাবকত্বের অধিকার নিয়ে মা-বাবা বা দাদা বা নানি-বাবার মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি হলে ও সন্তানের অভিভাবকত্ব দাবি করে একাধিক আবেদনপত্র জমা হলে আদালত সমগ্র পরিস্থিতির পর্যবেক্ষণ শেষে নাবালকের কল্যাণের জন্য উপযুক্ত বলে বিবেচিত ব্যক্তিকে অভিভাবক নিয়োগ করতে পারেন।

Friday, March 26, 2021

৫৪ ধারা মনে রাখার কৌশল

৫+৪=৯  সুতারাং ফৌজধারি কার্যবিধির  ৫৪ ধারায় মোট ৯ টি ক্ষেত্রে পুলিশ বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারেন। আর এর সংক্ষিপ্ত রুপ হচ্ছে #CIPSODORR 

#CIPSODORR বলতে কি বুঝায়? 

আমলযোগ্য মামলা ছাড়া পুলিশ কার্যবিধির ৫৪ ধারা মোতাবেক কোন ব্যক্তিকে বিনা পরোয়ানা গ্রেফতার করতে পারে।সংক্ষেপে এই নয়টি উপাদানকে #সিপসডর (CIPSODORR) বলে।

যাহা নিম্ন রুপঃ

#প্রথম-C-Cognizable offence আমলযোগ্য অপরাধের সাথে জড়িত বাক্তি   

#দ্বিতীয় I-Implement of House Breaking ঘর ভাঙ্গার সরঞ্জাম যার নিকট পাওয়া যায়। 

#তৃতীয় P-Proclaimed offender ঘোষিত অপরাধী 

#চতুর্থ S-Stolen Property চোরাই মাল যার নিকট পাওয়া যায়।

#পঞ্চম O-Obstructs of Police Officer পুলিশ অফিসারের বাধা প্রদানকারী বাক্তি 

#ষষ্ট D-Deserter প্রতিরক্ষা বাহিনী হতে পালনকারী 

#সপ্তম O-Outside Bangladesh বাংলাদেশের বাহিরে কৃত অপরাধ

#অষ্টম R-Released Convict মুক্তি প্রাপ্ত কয়েদী কতৃক বিধি লঙ্ঘন 

#নবম R-Requisition Slip অন্য কোন পুলিশ অফিসার হতে অভিযোগ পত্র গ্রহন করলে ।

Masudul Islam

Sunday, November 1, 2020

দেওয়ানী মামলার ধাপ বা পর্যায় সমূহ

আদালত সম্পর্কে বিচার প্রার্থীদের অনভিজ্ঞতা এবং ভয় ভীতি পরোক্ষভাবে আদালতের দাড়গোড়ায় তাদের ভোগান্তি বৃদ্ধি করে। মামলা সাধারণত ফৌজদারী বা দেওয়ানী এই দুই প্রকারের হয়। জমি জমা বা সম্পদ এবং পদ সংক্রান্ত মামলাকে দেওয়ানী মামলা বলা হয়। দেওয়ানী মামলা বিচারে কয়েকটি ধাপ আছে এবং প্রতিটি ধাপের জন্য আইনের কিছু নির্দিষ্ট বিধান রয়েছে। দেওয়ানী মামলার পূর্ব শর্ত আরজি গঠন। বাদীর নালিশের লিখিত বিবরণকে আরজি বলা হয়।

১। মামলা দায়ের ও আরজি গ্রহণ:
দেওয়ানী মামলা শুরু হয় আরজি গ্রহণের মাধ্যমে। দেওয়ানী আদালতের সেরেস্তাদার বা তার অনুপস্থিতিতে সেরেস্তাদার হিসেবে কর্মরত কর্মচারী মামলার আর্জি গ্রহণ করে আরজির গায়ে বা তার সাথে যুক্ত অর্ডারশিটে বা স্লিপে মামলার ফাইলিং নম্বর লিখবেন। যেমন- দেওয়ানী মামলা নং - ১০০/২০১২(এর অর্থ হল ঐ আদালতের ২০১২ সালের ১০০ নম্বর দেওয়ানী মামলা)।
এরপর সেরেস্তাদার অর্ডারশিটে আলাদা করে এবং সিল মোহর লাগিয়ে যিনি আর্জি উপস্থাপন করবেন তার কাছে ফেরত দিবেন। এরপর আর্জির সাথে দাখিল হতে পারে এরূপ সকল কাগজ পত্রে মামলার নম্বর উল্লেখ করতে হবে। সেরেস্তাদার আর-১২ ফাইলিং রেজিষ্টারে (যাকে সু্ট রেজিষ্টারও বলা হয়) আর্জির বিষয় বস্তু ক্রমানুসারে লিপিবদ্ধ করবেন। সাধারণত যেদিন আর্জি গ্রহণ করা হয়, সেদিনই তা নিবন্ধকৃত হয়।
সেরেস্তাদার আর্জি পরীক্ষা করে আর্জির প্রথম পৃষ্ঠার বাম প্রান্তের উপরিভাগে ষ্ট্যাম্প পর্যাপ্ত হয়েছে কিনা তা লিখবেন। অপর্যাপ্ত ষ্ট্যাম্প থাকলে তাও উল্লেখ করবেন এবং বাকী ষ্ট্যাম্প আদায়ের পর ২য় বার তা উল্লেখ করে প্রত্যায়ন করবেন(সি. আর. ও, ভলিউম -১, বিধি-৫৫)। ২১ দিনের মধ্যে বাকী ষ্ট্যাম্প প্রদান করতে হয়। এইভাবে একটি দেওয়ানী মামলা দায়ের করা হয়।
২।আর্জি ফেরত বা প্রত্যাখ্যান:
আর্জি ফেরত বা প্রত্যাখান হওয়া উচিত মনে করলে সেরেস্তাদার তা বিচারকের নিকট উল্লেখ করবেন। বিচারক আইন অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্তা গ্রহণ করবেন (সি. আর. ও, ভলিউম-১, বিধি-৫৫)। কোন কারণে আর্জি সঠিকভাবে মূল্যায়িত না হলে তা সংশোধনের জন্য পক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয় যার সময়সীমা ২১ দিন।
৩।সমন জারী
একটি মামলা দায়েরের পরের ধাপ সমন জারী। সমন দু'ভাবে জারী করা হয়। আদালতের জারীকারকের (পদাতিকের) মাধ্যমে এবং আদালতের সেরেস্তা কর্তৃক ডাকযোগে। সমনের সাথে মামলার আর্জি, বাদীর ফিরিস্তিযুক্ত কাগজের কপি (আর্জির বিষয়ের সাথে সংগতিপূর্ণ কাগজপত্র যা আর্জির দাবীকে সমর্থন করে), ওকালতনামা, তলবানা (বিবাদীর নামীয় সমন জারীর ক্ষেত্রে সরকারের দেয়া কোর্ট ফি) দাখিল করতে হয়।
মামলার সমন বিবাদী সরাসরি গ্রহণ করলে তা সরাসরি জারী হিসেবে গণ্য হবে। আদালতের জারীকারক (পদাতিক) যখন বিবাদীর উপর সমন জারীর জন্য যাবে তখন সমন নোটিশের অপর পৃষ্ঠায় সংশ্লিষ্ট এলাকার দু'জন নিঃস্বার্থ ব্যক্তির স্বাক্ষর বা টিপ গ্রহণ করবেন।
সাধারণত সমন বিবাদীর উপর ব্যক্তিগতভাবে জারী হতে হয়। তার অনুপস্তিতে তার পক্ষে তার ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধির উপর সমন জারী হতে হবে। যদি তার ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন প্রতিনিধি পাওয়া না যায়, তবে তার পরিবারের প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ সদস্যের উপর সমন জারী করতে হয়। এক্ষেত্রে ভৃত্য পরিবারের সদস্য হিসেবে গণ্য হবেন না। (দেওয়ানী কার্যবিধি, আদেশ-৫, বিধি-১২ ও ১৫)।
বিবাদী বা তার পক্ষে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন প্রতিনিধি বা তার পরিবারের কোন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ পাওয়া না গেলে বা সমন গ্রহণ না করলে বিবাদীর বাস গৃহের বহির্দ্বারে বা অন্য কোন প্রকাশ্য স্থানে লটকিয়ে সমন জারী করতে হবে (দেওয়ানী কার্যবিধি, আদেশ-৫, বিধি -১৭)। এক্ষেত্রেও জারীকারক সমন নোটিশের অপর পৃষ্ঠায় সংশ্লিষ্ট এলাকার দু'জন নিঃস্বার্থ ব্যক্তির স্বাক্ষর বা টিপ গ্রহণ করবেন।
বিবাদীর সাময়িক অনুপস্থিতিতে তার বাসগৃহের বহির্দ্বারের সামনে সমন লটকিয়ে জারী করা যুক্তিসংগত নয়। যদি ঐ বিবাদীকে তার বাসগৃহে পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তবে পুণরায় তার বাড়ীতে সমন জারী করতে হয় (সি. আর. ও, ভলিউম-১, বিধি-৭৬)।
জারীকারক সমন জারী রিটার্ণ ফেরত দিলে নাজির যথাসম্ভব দ্রুত এবং কমপক্ষে মামলার ধার্য্য তারিখের দু'দিন পূর্বে সংশ্লিষ্ট কোর্টে ফেরত দিবেন (সি. আর. ও, ভলিউম-১, বিধি-১০৫)।
অপরদিকে ডাকযোগে প্রেরণের পর ডাকরশিদ (একনলেজমেন্ট ডিউ) থাকলে এক মাস অতিবাহিত হওয়ার পর এ. ডি (ডাক সমন) জারী হিসেবে গণ্য হবে।
বিবাদী একের অধিক হলে প্রত্যেকের উপর সমন জারী হতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন জেলার বিবাদীদের উপর সমন সংশ্লিষ্ট জেলার নেজারত বিভাগের মাধ্যমে প্ররণ করতে হবে।
৪।জবাব দাখিল
বিবাদী মামলা ১ম শুনানীর তারিখ বা তৎপূর্বে বা আদালতের অনুমোদিত সময় দুই মাসের মধ্যে লিখিত জবাব দাখিল করবেন (দেওয়ানী কার্যবিধি, আদেশ -৮, বিধি-১)। তা না হলে মামলাটি একতরফা শুনানীর জন্য নির্ধারিত হবে। তবে দেওয়ানী কার্যবিধির ৮০ ধারার নোটিশ জারী না হলে সরকার জবাব দাখিলের জন্য ৩ মাস সময় পাবে।
বিবাদী যদি তার দাবীর সমর্থনে কোন দলিলাদির উপর নির্ভর করে, তবে তা ফিরিস্তি সহকারে ঐ দলিলাদি দাখিল করবেন।
৫।প্রতিদ্বন্দ্বিতা বহির্ভূত শূনানী
১ ম শুনানীর তারিখে যদি দেখা যায় যে, মামলার পক্ষদের মধ্যে কোন বিরোধীয় বিষয় নেই তবে তা অবিলম্বে নিষ্পত্তি করতে হবে। এক্ষেত্রে মামলা মূলতবি করার কোন সুযোগ নেই।
৬।ইস্যু গঠন
মামলার ১ম শুনানীর তারিখ বা জবাব দাখিলের মধ্যে যেটি পরে, তা হতে ১৫ দিনের মধ্যে ইস্যু গঠন করতে হবে(দেওয়ানী কার্যবিধি আদেশ-১৪, বিধি-১)। যেসব বিরোধীয় বিষয়ের উপর মামলা নিষ্পত্তি হবে সেসড বিষয় বস্ত নিয়ে ইস্যু গঠন করা হবে।
৭।উদঘাটন ও পরিদর্শন
ইস্যু গঠনের ১০ দিনের মধ্যে বাদী বা বিবাদী আদালতের অনুমতি নিয়ে অপর পক্ষকে প্রশ্ন দাখিল করতে পারবেন। তবে একটি পক্ষকে একবারই লিখিত প্রশ্ন দাখিল করতে পারবেন (দেওয়ানী কার্যবিধি আদেশ-১১, বিধি-৮)
৮।৩০ ধারার তদ্বীর
ইস্যু গঠনের পর উভয় পক্ষের কোন তদ্বীর আছে কিনা তার জন্য এই পর্যায়টি রাখা হয়।
৯।চূড়ান্ত শুনানীর তারিখ নির্ধারণ (এস. ডি)
ইস্যু গঠনের ১২০ দিনের মধ্যে মামলার চূড়ান্ত শুনানীর দিন ধার্য করতে হয় (দেওয়ানী কার্যবিধি আদেশ-১৪, বিধি-৮)
১০।চূড়ান্ত শুনানী
চূড়ান্ত শুনানীর (পি. এইচ) তারিখ হতে ১২০ দিনের মধ্যে মামলার শুনানী শেষ করতে হয় (দেওয়ানী কার্যবিধি আদেশ১৮, বিধি-১৯)। চূড়ান্ত শুনানী (পি. এইচ) ও পরবর্তী চূড়ান্ত শুনানী (এফ. পি. এইচ বা পার্ট হার্ড) পর্য্যায়ে বিচারক জবানবন্দী, জেরা, দলিলাদি গ্রহণ এবং যুক্তিতর্ক শুনবেন।
১১।রায় ঘোষণা
মামলা শুনানী সমাপ্ত হওয়ার পরে অনধিক ৭ দিনের মধ্যে আদালত রায় ঘোষণা করবেন (দেওয়ানী কার্যবিধি আদেশ-২০, বিধি-১১)।
১২।ডিক্রি প্রদান
রায় ঘোষণার তারিখ হতে ৭ দিনের মধ্যে ডিক্রি প্রদান করতে হবে (দেওয়ানী কার্যবিধি আদেশ-২০, বিধি -৫)
তাছাড়া মামলার যেকোন পর্যায়ে পক্ষগণ আর্জি, জবাব সংশোধণ, অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা, স্থানীয় পরিদর্শন এবং স্থানীয় তদন্তের জন্য আদালতের দরখাস্ত প্রদান করতে পারবেন। মামলার জবাব দাখিলের পর প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী পক্ষগণ যে কোন সময় আপোষ নিষ্পত্তির জন্য আদালতের মধ্যস্ততায় বা আদালতের বাইরে বসতে পারেন। দেওয়ানী কার্যবিধির ৮৯(ক) ধারা অনুযায়ী আপোষ নিষ্পত্তির কথা বলা হয়েছে, যা এ. ডি. আর নামে পরিচিত।

Friday, May 1, 2020

পৃথিবীর প্রথম আইনজীবী কে?

ইতিহাসের প্রথম আইনজীবীকে খুঁজতে হলে একশত দুইশত বছর আগে নয় পাক্কা ২৫০০ বছর আগে চলে যেতে হবে । প্রাচীন ইরাকের বিখ্যাত শহর সেই ব্যবিলনে । যা শাসিত হতো আসিরীয় সম্রাট নেবুচাঁদনেজারের হাতে । তাদের লোকাল বিচার ব্যবস্থা ছিল অনেকাংশে আমাদের মতই । গ্রাম্য পঞ্চায়েত বা ইউনিয়ন পরিষদ মতো ছোট ছোট অংশে বিভক্ত করে বিচার কার্য চালানো হতো ‘কাউন্সিল অব এল্ডার্স’ তথা স্থানীয় মুরব্বীদের দিয়ে ।
.
এই নগরীর এক অংশে সুজানা নামক এক অপূর্বা রমণীর বসবাস । যার রূপ , সৎচরিত্র ও ধার্মিকতা ছিল সর্বজনবিদিত । তাঁর স্বামী , মাতা-পিতা , শ্বশুর- শাশুড়ি নিয়ে তার সুখের সংসার । ঘটনাক্রমে তাঁর উপর দুই কাউন্সিল অব এল্ডার্সের সদস্যের কুদৃষ্টি পড়ে । ঘটনাক্রমে সুজানা পার্শ্ববর্তী এক বাগানবাড়িতে স্নান করছিলেন । তার ব্যক্তিগত দাসীর অনুপস্থিতিতে তারা তাকে কুপ্রস্তাব দেন । সুজানা স্বাভাবিকভাবে অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে তা প্রত্যাখ্যান করেন । ফলে তারা তাকে ধর্ষণে উদ্যত হলে সুজানা চিৎকার করলে তারা পালিয়ে যান এবং পরে তাকে দেখে নেওয়া হবে হুমকি দেওয়া হয় ।
.
পরবর্তীতে 'কাউন্সিল অব এল্ডার্স' সুজানার বিরুদ্ধে নিজেদের আদালতে ব্যভিচারের অভিযোগ আনে এবং উক্ত দুই সদস্য নিজেরাই মামলার চাক্ষুষ সাক্ষী হিসেবে আদালতে বলেন, সুজানা জনৈক যুবকের সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হবার দৃশ্যটি তারা স্বচক্ষে দেখেছেন এবং তাতেই সুজানাকে দোষী মর্মে রায় প্রচার করা হয় । ব্যস আর যায় কই ! এতদিন যারা সুজানার প্রশংসায় পঞ্চমুখ আজ তারই বিনা প্রশ্নে সুজানার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করে । সে যুগে নারীদের ব্যভিচারের শাস্তি ছিল পাথর ছুঁড়ে হত্যা করা (এই যুগে ব্যভিচারের শাস্তি হয় কেবল পুরুষের) । সেদিন পুরো ব্যাবিলন নগরী চলে এসেছিল তাদের কথিত (!) সৎ-ধার্মিক সুজানার মৃত্যু দেখতে । সেদিন কেউ কোন প্রশ্ন তুলেনি । সুজানার স্বামীও কোন প্রতিবাদ করেনি । জনতার উল্লাসধ্বনির মাঝে হঠাতই দানিয়েল নামক এক যুবক চিৎকার করে বললেন -'আমি বিশ্বাস করি না সুজানা অপকর্মটি করেছেন ।' জনতার উল্লাসধ্বনি থেমে গেল । দানিয়েল এই দুই 'কাউন্সিল অব এল্ডার্স'-এর সদস্যকে পৃথকভাবে কিছু প্রশ্ন করার অনুমতি চান । জনগণ অনুমতি দিল ।
.
দানিয়েল উভয় জনকে পৃথকভাবে দুটো প্রশ্ন করলেন । তারা সুজানাকে কখন এবং কোথায় ব্যভিচারে লিপ্ত হতে দেখেছেন। উত্তরে একজন জানালেন 'তিনি চাঁদনী রাতে একটি গাছের নিচে সুজানাকে অপকর্ম করতে দেখেছেন । এরপর দ্বিতীয়জন জানালেন 'দিনের আলোতে ফসলের মাঠে অপকর্মটি হয়েছিল। যথারীতি উপস্থিত জনতা ক্ষোভ ফেটে পড়ল। জনগণের চাপে উক্ত দুই বৃদ্ধকেই মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করা হয় । এইভাবেই দুই চরিত্রহীন এবং লম্পট বৃদ্ধের রক্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেল ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার সাক্ষ্যগ্রহণের পদ্ধতি ।
.
সর্বশেষঃ এই বিখ্যাত ঘটনাটি লিখা আছে বাইবেলে ।
ঐতিহাসিকগণ তাকে একজন সাহসী যুবক হিসেবে আখ্যা দিয়ে থাকেন।
ইহুদি ও খ্রিস্টানরা তাঁকে স্রষ্টা প্রেরিত বিশেষ মানব বলে এবং মুসলমানেরাও তার অবদান স্বীকার করেন।

অন্যদিকে আইন বিজ্ঞানের শিক্ষক,আইন পেশার লোকজন এবং বিচারাঙ্গনের বিচারকগণ তাকে লিখিত ইতিহাসের নির্ভীক মানবিক সাহস সম্পন্ন একজন স্পষ্টভাষী বাকপটু মানুষরূপে মানব জাতির প্রথম আইনজীবী হিসেবে সম্মান দেন।
.
💜ভালোবাসা রইলো পৃথিবীর প্রথম আইনজীবী দানিয়েলের প্রতি💜
#সংগৃহীত_পোস্ট

Friday, January 17, 2020

২য় বর্ষ ভাইবা প্রস্তুতি

দেওয়ানি আদালতের এখতিয়ারকে তিনটি বিশেষ শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়।যথা -
১। বিষয়বস্তুর উপর এখতিয়ার
২। আর্থিক এখতিয়ার ও
৩। আঞ্চলিক এখতিয়ার।

দেওয়ানি আদালতের আর্থিক এখতিয়ার মামলা দাবীর মূল্যমান সমূহ:-
১৮৭৭ এর ১৯ ধারা অনুযায়ী বর্নিত:
১। সহকারী জজ্ আদালত - ২ লক্ষ টাকা হতে ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
২। সিনিয়র সহকারী জজ্ আদালত - ১৫ লক্ষ ১ টাকা হতে ২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
৩। যুগ্ম জেলা জজ্ আদালত ২৫ লক্ষ টাকা হতে যেকোন মূল্যমান।
৪। জেলা জজ্ আদালত সর্বোচ্ছ ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত।
৫। পারিবারিক আদালতের মূল্যমান অনির্দিষ্ট।

#দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে দন্ডের বিধান -
দন্ডবিধি বর্নিত ধারা - ৫৩ মতে
১। মৃত্যুদণ্ড ( সর্বোচ্ছ)
২। যাবজ্জীবন কারাদন্ড
৩। মেয়াদকালীন কারাদন্ড
৪। সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও
৫। অর্থদণ্ড।

আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় --- আনিসুল হক।
বর্তমান এটর্নি জেনারেল - মাহবুবে আলম
প্রধান বিচারপতির নাম কি -
বর্তমান কে নিয়োগপ্রাপ্ত হন-

Monday, November 18, 2019

এলএল.বি(শেষ বর্ষ), পরীক্ষা, ২০১৬,ভূমি ও রেজিষ্ট্রেশন আইন

বাংলাদেশে ভূমি আইন, রেজিষ্ট্রেশন আইন ও
সরকারী দাবি আদায় আইন।
বিষয় কোড : ৫১৩১১৩
সময়: ৪ ঘন্টা
পূর্ণমান: ১০০
[প্রতিটি প্রশ্নের মান সমান। ক বিভাগ থেকে তিনটি এবং খ বিভাগ থেকে একটি এবং গ বিভাগ থেকে একটি মােট পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।]

ক-বিভাগ
১। (ক) কেন ১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত রেগুলেশন গৃহীত হয়েছিল?
(খ) “চিরস্তায়ী বন্দোবস্ত ব্যবস্থা ছিল ভূ-সম্পত্তির অধিকারী অভিজাত শ্রেণীর অভিজাত্যের ম্যাগনাকার্টা পক্ষান্তরে রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন ছিল কৃষক প্রজাদের জন্য ম্যাগনাকার্টাস্বরূপ- এই উক্তিটির সত্যতা কতখানি? তােমার জবাবের যৌক্তিকতা প্রদর্শন কর।।
২.ব্রিটিশ ভারতে প্রবর্তিত এলুভিয়ন ও ডিলুভিয়ন সম্পর্কিত আইন আলােচনা কর। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে এই আইনের কি কি পরিবর্তন সাধিত হয়েছে? এ পরিবর্তনসমূহের যৌক্তিকতা কি ছিল? নদী বা সমুদ্রগর্ভে আস্তে আস্তে বিলীন হয়ে যাওয়া একটি জমি একইস্থানে পুনরুত্থিত এবং তা সনাক্ত করার উপযােগী হলে তুমি কিভাবে তার দাবি নির্ধারণ করবে?
৩.১৯৫০ সালের রাষ্ট্রীয় অর্জন ও প্রজাস্বত্ব আইন অনুযায়ী কোন কোন শ্রেণীর জমি একজন প্রজা দখলে রাখতে পারবে তা বর্ণনা কর। এ আইনের ওয়াকফ, ওয়াকফ-
আল-আওলাদ ও দেবােত্তর সম্পত্তির অবস্থা কি? এ প্রকারের সম্পত্তি কি অধিগ্রহণ করা
যায়? প্রখ্যাত মামলার আলােকে আলােচনা কর।
৪। (ক) ১৯৫০ সালের রাষ্ট্রীয় অর্জন ও প্রজাস্বত্ব আইনের বিধান অনুযায়ী অগ্রক্রয়ের মামলায় কোন কোন ব্যক্তি আবশ্যকীয় পক্ষ? একজন আবশ্যকীয় পক্ষ বাদ গেলে তার
ফলাফল কি হবে?
(খ) ১৯৫০ সালের রাষ্ট্রীয় অর্জন ও প্রজাস্বত্ব আইন এবং ১৯৪৯ সালের অ-কৃষি
প্রজাস্বত্ব আইনে বর্ণিত অগ্রক্রয় সম্পর্কিত বিধানের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় কর।
৫.১৯৪৯ সালের অকৃষি প্রজাস্বত্ব আইনের বিধানমতে অকৃষি প্রজার সংজ্ঞা দাও। যে সকল উদ্দেশ্যে একজন অ-কৃষি প্রজা অকৃষি জমি দখলে রাখতে পারে তা উল্লেখ কর।
বারাে বছরের কম সময়ের জন্য এবং বারাে বছর এর জন্য অধিকৃত অকৃষি প্রজাস্বত্বের
পরিণতিসমূহের গুরুত্ব উল্লেখ কর।

খ-বিভাগ।
৬.কি কি কারণে একটি দলিল নিবন্ধন প্রত্যাখান করা যায়? সাব-রেজিস্ট্রার যার দলিল নিবন্ধন করতে অস্বীকার করেছেন এমন একজন ক্ষুব্ধ ব্যক্তির আপীল বা আবেদন। রেজিস্ট্রার কর্তৃক না মঞ্জুরের ক্ষেত্রে দেওয়ানী আদালতের হস্তক্ষেপের এখতিয়ার কতখানি তা আলােচনা কর।
৭.(ক) ১৯০৮ সালের রেজিস্ট্রেশন আইনের পরিধি ও উদ্দেশ্য সংক্ষেপে আলােচনা কর।
(খ) একজন অনধিকারী ব্যক্তির দাখিলকৃত বাধ্যতামূলক রেজিস্ট্রেশনযােগ্য দলিল সাব-
রেজিস্ট্রার রেজিস্ট্রি করে দিলে এ রেজিস্ট্রেশন কি রেজিস্ট্রেশন আইন বৈধ হবে?এক্ষেত্রে দলিলের দাবিদার ব্যক্তির প্রতিকার কি?

গ-বিভাগ।
৮.১৯১৩ সালের সরকারী দাবী আদায় আইন পাসের উদ্দেশ্যগুলি কি? এই উদ্দেশ্যগুলি কি পূর্ণ হয়েছে? এই আইনের ৭ ধারায় নােটিশ জারীর ফলাফল কি? কখন এবং কিভাবে
একটি সার্টিফিকেট নাকচ বা সংশােধিত হতে পারে? তুমি কি এই আইনের কোন সংশােধন নির্দেশ কর? যদি কর তবে সেগুলি কি?
৯। (ক) ‘ডিমান্ড নােটিশ ' বলতে কি বুঝায়? এটা কিভাবে ৭ ধারার নােটিশ থেকে পৃথক?
(খ) সাটিফিকেট জারীতে নিলাম হলে কখন এবং কিভাবে সার্টিফিকেট অফিসার তা রদ
করতে পারেন?


এলএল, বি (শেষ বর্ষ) প্রশ্ন-২০১৬ সাক্ষ্য আইন

বিষয় : সাক্ষ্য আইন

১.ক) সাক্ষ্য আইন, ১৮৭২ কি স্বয়ংসম্পূর্ণ সংহিতা?খ)সাক্ষ্য আইন প্রয়ােগে প্রধান প্রধান নীতি উল্লেখ কর।
গ) অপরাধ প্রমাণে সাক্ষ্যের গুরুত্ব সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ।
২.ক) সাক্ষ্য আইন, ১৮৭২ অনুযায়ী চরিত্র বলতে কি বুঝ?
খ) পূর্ববর্তী দণ্ডাদেশ কি খারাপ চরিত্রের সাক্ষ্য হিসাবে প্রাসঙ্গিক? আলােচনা কর।
গ) কখন দেওয়ানী ও ফৌজদারী মামলায় চরিত্র সংক্রান্ত সাক্ষ্য প্রাসঙ্গিক?
৩. ইংগিতবাহী প্রশ্ন বলতে কি বুঝ? সাক্ষীকে কখন ইংগিতবাহী প্রশ্ন করা যায়? সাক্ষীর বিশ্বাসযােগ্যতা কিভাবে হরণ করা যায়? কি কি কারণে একজন বিচারক এ প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করতে পারেন ? প্রশ্ন আইনসম্মত ও প্রাসঙ্গিক হওয়া সত্ত্বেও কখন সাক্ষীকে প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য করা যায় না?
৪. ক) মৃত্যুকালীন ঘােষণা কি? এটা কিভাবে প্রমাণ করা যায়?
খ) কী কারণে মৃত্যুকালীন ঘােষণা সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণ করা হয়?
গ) মৃত্যুকালীন ঘােষণাদানকারী যদি দৈবাৎ বেঁচে যায় তাহলে তার ঘােষণা কি সাক্ষ্য আইন ১৮৭২ এর বিধান অনুযায়ী সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণযােগ্য ?
ঘ) মৃত্যুকালীন ঘােষণা বিষেয়ে ইংলিশ আইন এবং বাংলাদেশের আইনের মধ্যে পার্থক্য লিখ।
৫.ক) জনশ্রুতি কোন সাক্ষ্য নয়-সংক্ষেপে এই নীতির ব্যতিক্রমসমূহ আলােচনা কর।
খ) জবানবন্দী ও জেরার প্রকৃতি ও উদ্দেশ্য আলােচনা কর।
গ) জেরার সময় আইন-সংগতভাবে কি কি প্রশ্ন করা যায় বর্ণনা কর।
৬। ক) সাক্ষ্য আইনে প্রাসঙ্গিকতা বলতে কি বুঝ?
খ) ঘটনার প্রাসঙ্গিকভাবে তার ক্ষেত্রে সাক্ষ্য আইনের নীতিসমূহ কি কি?
গ) কোন ঘটনা আদালতে প্রমাণের প্রয়ােজন নেই?
৭.ক) বিশেষজ্ঞ কে ? একজন বিশেষজ্ঞ ও সাধারণ সাক্ষীর মধ্যে পার্থক্য কি?
খ) কখন একজন বিশেষজ্ঞের মতামত প্রাসঙ্গিক ? তার মতামত কি আদালত মানতে বাধ্য?
গ) হস্তলেখা প্রমাণের বিভিন্ন পদ্ধতি বর্ণনা কর।
৮. নিম্নের যে কোন পাঁচটি বিষয়ের উপর টীকা লিখ :
ক) স্বীকৃতি এবং স্বীকারােক্তি;
খ)বিদ্রোহী সাক্ষী;
গ) এসটোপেল;
ঘ) জুডিসিয়াল নােটিশ;
ঙ) মৌখিক সাক্ষ্য;
চ)প্রমাণের দায়িত্ব;
ছ) সরকারি দলিল।

Monday, October 21, 2019

দেওয়ানী কার্যবিধি ও তামাদি আইন প্রশ্ন - ২০১৬

১. (ক)“প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে নিষেধ না থাকলে দেওয়ানী আদালত সমূহ শুধুমাত্র দেওয়ানী প্রকৃতির মামলার বিচার করবে” - উক্তিটি ব্যাখ্যা করো[pg-181]
(খ)দেওয়ানী কার্যবিধির কোন কোন ধারা 1887 সালের “স্মল কজ কোর্টস" এ্যাক্ট এর অধীনে গঠিত আদালতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় ব্যাখ্যা করো।[pg-261]
২. রায়, ডিক্রি ও আদেশের সংজ্ঞা দাও এদের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করো। রায় পূর্ববর্তী এবং রায়-পরবর্তী ক্রুক বলতে কি বুঝ? মূল ডিক্রির বিরুদ্ধে কিভাবে আপিল করা যায় ব্যাখ্যা করো।[pg--320]
৩. প্রতিনিধিত্বমূলক মামলা বলতে কী বোঝায়?
কোন ধরনের বিষয়ে এবং কিভাবে এরূপ মামলা করা যায়? সরকারের বিরুদ্ধে এরূপ মামলা রুজু করা যায় কি?যদি যায় তবে কখন এবং কি প্রকারে?
৪. বাংলাদেশের দেওয়ানী আদালত সমূহের অবকাঠামো গঠন ও এখতিয়ার আলোচনা করো। অধিকতর কম খরচ ও দ্রুত বিচারের জন্য তুমি কি আদালত ব্যবস্থার অবকাঠামো কোনো পরিবর্তনের প্রস্তাব করবে?[pg-260]
৫. একতরফা ডিক্রি বলতে কী বোঝো? মামলার শুনানির দিন উভয় পক্ষের কিংবা যে কোন একপক্ষের অনুপস্থিত থাকার ফলাফল কি? যে বিবাদীর বিরুদ্ধে একতরফা ডিক্রি দেওয়া হয়েছে কিংবা অনুপস্থিত থাকার কারণে যে বিবাদীর বিরুদ্ধে মামলা খারিজ হয়েছে তারা কি কি প্রতিকার লাভ করতে পারে? একটি পক্ষের অনুপস্থিতির জন্য সাধারণত কি কি কারণ হিসেবে গণ্য করা হয়?[Pg-284]
৬. একটি মামলার বিচার্য বিষয় বলতে তুমি কি বুঝ? প্রকারভেদ আলোচনা করো। কোন কোন বিষয়ের ভিত্তিতে একটি মামলার বিচার্য বিষয় প্রণীত হয়? বিচার্য বিষয় সংশোধন ও বাদ দেয়ার ক্ষেত্রে আদালতের ক্ষমতা বর্ণনা করো Pg - 300
৭. প্লিডিংস কি?একটি মামলার আরজিতে কি কি বিষয় উপস্থাপন করা প্রয়োজন?কখন একটি মামলার আরজি ফেরত প্রত্যাখ্যান করা যায়?আরজি প্রত্যাখ্যানের ফলাফল কি? [Pg-201]

খ- বিভাগ
৮. একটি আপিল ভুলক্রমে একটি ভুল আদালতে দায়ের করা হয়। পরে আপেলটি সঠিক আদালতে দায়ের করা হয়, কিন্তু ইতিমধ্যে আপিল দায়ের সময়সীমা পার হয়ে যায়। এক্ষেত্রে তামাদি আপিলকারী এর কোন প্রতিকার আছে? আলোচনা করো।[pg--338]
৯. তামাদি হওয়া কোন দাবি পরিশোধ করিলে উহা কি পুনরুদ্ধারে তামাদি আইনে কিভাবে “ইজমেন্ট” অধিকার অর্জন করা যায়? কখন কোন ব্যক্তি দলিল ব্যতীত অন্যের স্থাবর সম্পত্তিতে স্বত্ব অর্জন করতে পারে?

Wednesday, August 7, 2019

অংশীদারী চুক্তিপত্র দলিল

“অংশীদারী চুক্তিপত্র দলিল”

অত্র চুক্তি নামা দলিল অদ্য ১০/০৪/২০১৩ ইং তারিখে নিম্ন লিখিত পক্ষদ্বয়ের মধ্যে সম্পাদিত হইল।

১. মোঃ কামালউদ্দিন, পিতা-মৃত আব্দুল আজিজ, মাতা-মুত মাবুদা খাতুন, ঠিকানাঃ-১৬১/১০, বাগানবাড়ি, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, ঢাকা, জন্মতারিখ-৩০/০৬/১৯৬২ ইং, জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর- ২৫৪১৪৫৫২৪৭৫৪৫১৫২, জাতীয়তা-বাংলাদেশী, ধর্ম-ইসলাম, পেশা-ব্যবসা।

—— ১ম পক্ষ

২. এবিএম শেহাবউদ্দিন শেহাব, পিতা-মুত হাবিবুর রহমান, মাতা-জামিনা বেগম, ঠিকানা-গ্রাম-রুপাটি, পো-হাট জগদল, থানা+জেলা-মাগুরা-৭৬০০, জন্ম তারিখ-০১/০১/১৯৭৪ ইং, জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর- ২৫৪১৪৫৫২৪৭৫৪৫১৫২, জাতীয়তা-বাংলাদেশী, ধর্ম-ইসলাম, পেশা-ব্যবসা।

—— ২য় পক্ষ

৩. জি এম আক্তার হোসেন, পিতা-মৃত জি এম আবু মুসা, মাতা-মুত নুর জাহান বেগম, ঠিকানাঃ-গ্রাম+পো-বুড়িগোয়ালিনী, উপজেলা-শ্যামনগর, জেলা-সাতক্ষিরা, জন্মতারিখ-৩০/০৬/১৯৬২ ইং, জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর- ২৫৪১৪৫৫২৪৭৫৪৫১৫২, জাতীয়তা-বাংলাদেশী, ধর্ম-ইসলাম, পেশা-ব্যবসা।

——৩য় পক্ষ

৪. এস এম মোস্তফা আল মামুন, পিতা-আলহাজ এস এম মিজানুর রহমান, মাতা-শাহানারা বেগম, ঠিকানাঃ-গ্রাম+পো-গুমান্তলী, উপজেলা-শ্যামনগর, জেলা-সাতক্ষিরা, জন্মতারিখ-০৭/১০/১৯৮৬ ইং, জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর- ২৫৪১৪৫৫২৪৭৫৪৫১৫২, জাতীয়তা-বাংলাদেশী, ধর্ম-ইসলাম, পেশা-ব্যবসা।

——৪য় পক্ষ


পরম করুণাময় মহান আল্লাহ তায়ালার নাম স্মরণ করিয়া অত্র অংশীদারী চুক্তিপত্র দলিলের আইনানুগ বয়ান আরম্ভ করিতেছি। যেহেতু আমরা সকল পক্ষগণ পরস্পর পরস্পরকে দীর্ঘ দিন যাবত চিনি ও জানি। এমতাবস্থায় আমরা সকল পক্ষগণ একত্রে ব্যবসা পরিচালনা করার ইচ্ছা প্রকাশ করায় আমরা উপরোক্ত পক্ষগণ একমত হইয়া আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ জটিলতা নিরসনকল্পে অদ্য হাজিরান মজলিশে স্বাক্ষীগণের মোকাবেলায় এই মর্মে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে নিম্ন লিখিত শর্তাবলীর উপর আস্থা রাখিয়া ভবিষ্যৎ জটিলতা নিরসনকল্পে অত্র ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র দলিলে আমরা সকল পক্ষগণ সহি স্বাক্ষর করিয়া অত্র ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র দলিলে আবদ্ধ হইলাম।

শর্তবলীঃ- ১। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম “নিটিং অয়েল”

২। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ঠিকানাঃ প্লট নং-বি-৫১, ঢাকা শিল্প ইন্ডাষ্ট্রিজ নগরী, বিসিক, কেরাণীগঞ্জ ।

৩। ব্যবসার ধরনঃ নিটিং অয়েল, কাটিং অয়েল, গ্রীজ ব্যবহৃত মোবিল প্রক্রিয়াজাত করণ মেসার্স ডেল্টা লুব্রিকেটিং এন্ড কেমিক্যাল ইন্ডাষ্ট্রিজ ।

৪। ব্যবসার উদ্দেশ্যঃ নিটিং অয়েল, কাটিং অয়েল, গ্রীজ ব্যবহৃত মোবিল প্রক্রিয়াজাত করণ মেসার্স ডেল্টা লুব্রিকেটিং এন্ড কেমিক্যাল ইন্ডাষ্ট্রিজ, প্লট নং-বি-৫১, ঢাকা শিল্প ইন্ডাষ্ট্রিজ নগরী, বিসিক, কেরাণীগঞ্জে বিদ্যমান শিল্পটি যৌথভাবে পরিচালনা করা ।

৫। ব্যবসা শুরুর তারিখঃ ১৫/০১/২০১৭ ইং ।

৬। ব্যবসার মেয়াদঃ আইনানুগ রুপে অবসান না হওয়া পর্যন্ত অত্র ব্যবসা চলিবে ।

৭। ব্যবসার মূল অফিস ঢাকা শহরের অবস্থিত থাকিবে, যাহার ঠিকানাঃ-১০২ দয়াগঞ্জ, সূত্রাপুর, জেলা-ঢাকা এবং অন্যান্য স্থানে উভয় পক্ষের লিখিত অনুমোদন লইয়া শাখা অফিস খোলা যাইবে ।

৮। (ক) ব্যবসার অংশীদারগণের পুঁজি ১০,০০,০০০/- (দশ লক্ষ) টাকা তন্মধ্যে ১ম পক্ষ ৬০% এবং ২য় পক্ষ ৪০% ভাগে বিনোয়োগ করিবে এবং অংশীদারদের মালিকানার অংশ ১ম পক্ষ ৬০% এবং ২য় পক্ষ ৪০% ভাগে থাকিবে ।

(খ) ব্যবসার এককালীন পুঁজি ছাড়াও যে কোন সময় ব্যবসার উন্নতির জন্য পুঁজির পরিমাণ হ্রাস বৃদ্ধি করিতে পারিবেন ।

(গ) রাইয়ান এয়ার ইন্টারন্যাশনাল ১ম পক্ষের একক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান, তবে অন্যান্য পক্ষ এই প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স ব্যবহার করিয়া যৌথ ব্যবসা পরিচালনা করিবেন, সে ক্ষেত্রে ১ম পক্ষকে অন্যান্য পক্ষ হাজী প্রতি লাইসেন্স ফি প্রদান করিবে। আলোকিত প্রজন্ম ল এন্ড ষ্টুডেন্ট কন্সালটেন্ট প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স ব্যবহার করিয়া বিদেশে ষ্টুডেন্ট প্রেরণ করিলে ষ্টুডেন্ট প্রতি ৫০০০/= (পাঁচ হাজার) টাকা মূল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে জমা করিতে হইবে এবং রাইয়ান এয়ার ইন্টারন্যাশনালের আইডি ব্যবহার করে টিকিট বিক্রি করিলে টিকিট প্রতি ২০০/= (দুইশত) টাকা মূল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে জমা করিতে হইবে । যার লভ্যাংশ সকল পক্ষ সমানভাগে প্রাপ্ত হইবেন । ৯। আর অংশীদারী ব্যবসার লাভ ক্ষতির অংশ ১ম পক্ষ ৬০% এবং ২য় পক্ষ ৪০% ভাগে বন্টন করা হইবে ।

১০। প্রত্যেক (১) মাসে অন্তর অন্তর অত্র ব্যবসার লাভ ক্ষতির হিসাব প্রস্তুত করা হইবে অংশ ১ম পক্ষ ৬০% এবং ২য় পক্ষ ৪০% ভাগে হিস্যা পক্ষগণের উপর ন্যস্ত হইবে তবে প্রতি মাসে লাভের শতকরা অংশ ১ম পক্ষ ৬০% এবং ২য় পক্ষ ৪০% ভাগে অত্র ব্যবসা রির্জাভ ফান্ডে জমা থাকিবে ।

১১। ব্যবসায়ের লস বা ক্ষতি বন্টন হবে অংশীদারগণের মূলধনের আনুপাতিক হারে ।

১২। আনুপাতিক ভিত্তিতে উভয় পক্ষ ব্যবসা সংক্রান্ত দায়দায়িত্ব পালন করিবে, তবে সকল পক্ষের সর্বসম্মতিক্রমে –

হজ ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে দায়িত্ব নিন্মরুপ- ১) মোঃ কামালউদ্দিন – চেয়ারম্যান ২) এবিএম শেহাবউদ্দিন শেহাব – পরিচালক ৩) মো: আব্দুল করিম – পরিচালক ৪) এস এম মোস্তফা আল মামুন – পরিচালক ৫) জি এম আক্তার হোসেন – পরিচালক ৬) মো: আজমল হোসেন – পরিচালক

১৩। ব্যবসায়ের হিসাব পরিচালিত হইবে- মোঃ কামালউদ্দিন, এবিএম শেহাবউদ্দিন শেহাব ও জি এম আক্তার এর যৌথ স্বাক্ষরে, তবে টাকা লেন দেনে ২ জনের স্বাক্ষরের মধ্যে ১ম পক্ষ মো: কামালউদ্দিনের স্বাক্ষর বাধ্যতামূলক থাকিবে।

১৪। ব্যবসা চলাকালিন সময়ে আল্লাহ না করুন যদি কোন পক্ষের কেউ মৃত্যুবরন করেন তাহা হইলে মৃত্যুব্যক্তির উত্তরাধিকারীগণ মৃত্যুবরনকারী অংশীদারের অংশ ভোগ করিবেন এবং ঐ অংশের অংশীদার হিসাবে গন্য হইবেন ও সকল প্রকার দায়দায়িত্ব পালন করিবেন ।

Tuesday, August 6, 2019

অংশীদারী ব্যবসা

অংশীদারি ব্যবসায় হলো চুক্তির দ্বারা দুই বা ততোধিক ব্যক্তির মধ্যে বৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জনের নিমিত্তে যে ব্যবসায় গড়ে উঠে। ১৯৩২ সালের অংশীদারি আইন অনুসারে, সাধারণ অংশীদারি ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে সদস্য সংখ্যা সর্বনিম্ন ২জন ও সর্বোচ্চ ২০জন হবে এবং ব্যাংকিং অংশীদারি ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে ২জন থেকে সর্বোচ্চ ১০জন হবে। চুক্তিই অংশীদারি ব্যবসায়ের মূল ভিত্তি। চুক্তি ছাড়া কোনো অংশীদারি ব্যবসায় হতে পারে না।

১.অংশীদারি ব্যবসায়ের সুবিধাসমূহ আলোচনা কর।

একটি মাঝারি ধরনের সংগঠন হিসেবে অংশীদারি সংগঠনের বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে, যা উক্ত সংগঠনকে ব্যবসায়িক পরিমন্ডলে গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। নিম্নে অংশীদারি ব্যবসায়ের উল্লেখযোগ্য সুবিধাসমূহ আলোচনা করা হলো :
১. সহজ গঠন : এ সংগঠনের অন্যতম সুবিধা হলো এটি গঠন করা খুবই সহজ। সদস্যগণ নিজেরা পুঁজি সংগ্রহ করে নিজেদের মধ্যে চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে অংশীদারি সংগঠন গঠন করতে পারে।
২. অধিক পুঁজি : অংশীদারি সংগঠনে একাধিক সদস্য থাকার কারণে একমালিকানা সংগঠনের তুলনায় এর মূলধন বেশি।
৩. যৌথ ব্যবস্থাপনা : অংশীদারি সংগঠনের সদস্যগণ নিজস্ব দক্ষতা ও যোগ্যতা অনুযায়ী দায়িত্ব ভাগাভাগি করে যৌথভাবে সংগঠন পরিচালনা করতে পারেন।
৪. দ্রুত সিদ্ধান্ত : সদস্য সংখ্যা সীমিত থাকায় যে কোন জটিল পরিস্থিতিতে সদস্যগণ একত্রিত হয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
৫. নতুন অংশীদার গ্রহণ : ব্যবসায়ের প্রয়োজনে অংশীদারি সংগঠনে নতুন অংশীদার গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। তবে সেক্ষেত্রে সকল অংশীদারের সম্মতিক্রমে চুক্তিসম্পাদন করতে হয়।
৬. গণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত : অংশীদারি সংগঠনে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সকলের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
৭. ঝুঁকি বণ্টন : অংশীদারি সংগঠনে চুক্তি অনুযায়ী লোকসান ও দায় সকলের মধ্যে বণ্টিত হয়। ফলে ঝুঁকি হ্রাস পায়।
৮. মিতব্যয়িতা : অংশীদারি ব্যবসায়ের সদস্যরা সরাসরি জড়িত থেকে ব্যবসায় পরিচালনা করে বলে মিতব্যয়িতা অর্জন করা সম্ভব।
৯. অধিক গণসংযোগ : অংশীদারি সংগঠনে অধিক সদস্য থাকায় ব্যবসায়ের প্রয়োজনে অধিক গণসংযোগ সম্ভব।
১০. দক্ষ কর্মচারী নিয়োগ : একমালিকানার তুলনায় অংশীদারি সংগঠনের মূলধন বেশি এবং পরিধি ব্যাপক হওয়ায় অধিক বেতন দিয়ে দক্ষ কর্মচারী নিয়োগ করা যায়।
১১. ব্যবস্থাপনায় বিশেষায়ন : অংশীদারি সংগঠনে বিভিন্ন বিভাগে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সমাবেশ ঘটে বলে ব্যবস্থাপনায় বিশেষায়ন সম্ভব হয়।
১২. স্বেচ্ছাচারিতা হ্রাস : এ ব্যবসায়ে যৌথ সিদ্ধানত্ম নেয়া হয় বলে একক ব্যক্তির স্বেচ্ছাচারিতার সুযোগ থাকে না এবং সবাই একে অপরের মতামতকে গুরম্নত্ব দেয়।
১৩. ঋণ সুবিধা : অধিক লোক যৌথভাবে সংগঠনের দায় বহন করে বলে ব্যক্তিগতভাবে এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অংশদারি ব্যবসায় সহজেই অধিক ঋণ সুবিধা পেয়ে থাকে।
১৪. উত্তোলনের সুযোগ : অংশীদারি সংগঠনের সদস্যগণ চুক্তি অনুযায়ী কারবার থেকে নির্ধারিত পরিমান অর্থ উত্তোলন করতে পারে।
১৫. সহজ বিলোপসাধন : অংশীদারি সংগঠন গঠন করা যেমন সহজ তেমনি প্রয়োজনে বিলোপসাধনও সহজে করা যায়।
উপরিউক্ত সুবিধাগুলো ছাড়াও একটি অর্থনৈতিক সংগঠন হিসেবে অংশীদারি সংগঠন আরো নানাবিধ সামাজিক, ব্যবসায়িক ও অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকে।

২. অংশীদারি ব্যবসায়ের অসুবিধাসমূহ আলোচনা কর।

অংশীদারি সংগঠনের অনেকগুলো সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও রয়েছে যা নিম্নে আলোচনা করা হলো :
১. অসীম দায় : অংশীদারি সংগঠনের অন্যতম অসুবিধা হচ্ছে অংশীদারদের অসীম দায়। সংগঠনের যে কোন দায়ের জন্য অংশীদারের ব্যক্তিগত স্থায়ী ও অস্থায়ী সম্পত্তি দায়বদ্ধ থাকে।
২. স্থায়িত্বের অনিশ্চয়তা : অংশীদারি সংগঠনের আইনগত পৃথক কোন সত্তা নেই বলেই এর স্থায়িত্ব কম।
৩. সীমিত মূলধন : অংশীদারি সংগঠনের সদস্য সংখ্যা একটি পর্যায় পর্যনত্ম সীমাবদ্ধ এবং যৌথ কোম্পানির তুলানায় কম বলেই এর মূলধন সীমিত।
৪. পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের অভাব : যদিও পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস হচ্ছে অংশীদারি সংগঠনের মূল চালিকাশক্তি। বাসত্মবে অংশীদারি সংগঠনে এর প্রচুর ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়।
৫. পৃথক সত্তার অভাব : অংশীদারি সংগঠনে পৃথক কোন সত্তা নেই, মালিকের সত্তাই ব্যবসায়ের সত্তা। তাই মালিকের অবর্তমানে ব্যবসায় ক্ষতিগ্রসত্ম হয়।
৬. যৌথ দায়িত্বের ঝুঁকি : অংশীদারি সংগঠনে দায়িত্ব যৌথভাবে থাকায় অনেক সময় সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন হয় না। তখন সকলের দায়িত্ব যেন কারো দায়িত্ব নয়-এরূপ অবস্থার সৃষ্টি হয়।
৭. গোপনীয়তার অভাব : অংশীদারি সংগঠন যৌথভাবে ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা হয় বলে ব্যবসায়িক গোপনীয়তা বিনষ্ট হয়।
৮. শেয়ার হসত্মানত্মর নয় : অংশীদারি সংগঠনের শেয়ার অন্যের নিকট বিক্রয় ও হসত্মানত্মর করা যায় না।
৯. সিদ্ধানত্ম গ্রহণে বিলম্ব : অংশীদারি সংগঠনে সকলের সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধানত্ম নিতে হয় বলেই সিদ্ধানত্ম গ্রহণে বিলম্ব হয়।
১০. দলবদ্ধ প্রচেষ্টার অভাব : অংশীদারি সংগঠন যদিও একদল সদস্যের সংগঠন কিন্তু বাসত্মবে দলবদ্ধ প্রচেষ্টার অভাব থাকায় অংশীদারি সংগঠন সর্বদা সফল হতে পারে না।
১১. গণ আস্থার অভাব : অংশীদারি সংগঠনের আইনগত সত্তা না থাকায় এর ওপর জনসাধারণের আস্থা অনেক ক্ষেত্রে কম।
১২. অসম মুনাফা বণ্টন : অংশীদারি সংগঠনে অনেক সময় অসম হারে মুনাফা বণ্টন হয়। তাই অনেক সদস্যের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

পরিশেষে বলা যায়, সুবিধার পাশপাশি অংশীদারি সংগঠনে অনেক অসুবিধা রয়েছে। অংশীদারদেরকে ব্যবসায়িক অসুবিধাসমূহ দুর করে ব্যবসায় কার্যে গতি আনতে হয়।

৩. অংশীদারি ব্যবসায় গঠন প্রণালী আলোচনা কর।

চুক্তি সম্পাদানে যোগ্য কতিপয় ব্যক্তি স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে তাদের সংগৃহীত মূলধন একত্রিত করে অংশীদারি সংগঠন গঠন করতে পারে। এ গঠন প্রক্রিয়ায় উদ্যোক্তাদেরকে কতগুলো ধারাবাহিক পদক্ষেপ অনুসরণ করতে হয়। নিম্নে তা আলোচনা করা হলো :
১. নির্দিষ্ট সংখ্যক অংশীদার সংগ্রহ : একটি অংশীদারি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করতে হলে উদ্যোক্তাগণকে প্রথমেই অংশীদারি আইন অনুযায়ী নির্দিষ্ট সংখ্যক যোগ্য সদস্য সংগ্রহ করতে হবে।
২. চুক্তি সম্পাদন : দ্বিতীয় পর্যায়ে অংশীদারি সংগঠন প্রতিষ্ঠায় একত্রিত ব্যক্তি নিজেদের করণীয় এবং স্বার্থ সংশিস্নষ্ট ভবিষ্যত বিষয়াবলি নিয়ে নিজেদের মধ্যে একটি চুক্তি সম্পাদন করবেন।
৩. নিবন্ধ : এ পর্যায়ে উদোক্তাগণ সরকার অনুমোদিত নিবন্ধকের দপ্তরে নির্ধারিত ফি প্রদানপূর্বক ব্যবসায়ের নিবন্ধনের জন্য আবেদন করবেন। নিবন্ধক দাখিলকৃত কাগজপত্র দেখে সন্তুষ্ট হলে সংগঠনের নাম তালিকাভুক্ত করবেন।
৪. ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ : এ পর্যায়ে উদ্যোক্তগণ সংশিস্নষ্ট সরকারি অফিস থেকে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করবেন।
৫. অন্যান্য সরকারি দপ্তরের অনুমতি : এ পর্যায়ে উদ্যোক্তাগণ ব্যবসায়ের প্রকৃতি অনুযায়ী ব্যবসায়িক কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য সংশিস্নষ্ট সরকারি দপ্তর থেকে অনুমতিপত্র সংগ্রহ করতে হয়।
৬. ব্যবসায়ের কার্যারম্ভ : উপরোক্ত পদক্ষেপসমূহ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন হলেই উদ্যোক্তাগণ কার্যারম্ভ করতে পারেন। অর্থাৎ এ পর্যায়ে অংশীদারগণ প্রকৃতি অনুযায়ী ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরম্নর মাধ্যমে মুনাফা অর্জনের প্রচেষ্টা চালাতে পারেন।

৪. চুক্তিই অংশীদারি ব্যবসায়ের মূল ভিত্তি_ ব্যাখ্যা কর।

অংশীদারি আইনে চুক্তির যে অবস্থান এবং সংগঠন পরিচালনায় চুক্তির গুরম্নত্ব ও তাৎপর্য হতে জোরালোভাবে বলা যায় চুক্তিই অংশীদারি ব্যবসায়ের মূল ভিত্তি এবং উদ্যোক্তাদের মধ্যে চুক্তি থেকেই অংশীদারি ব্যবসায়ের জন্ম। কেবলমাত্র মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে কতিপয় ব্যক্তির মিলিত সংগঠনকে অংশীদারি সংগঠন বলা যাবে না, যতক্ষণ পর্যনত্ম তাদের মধ্যে কোন চুক্তিবদ্ধ সম্পর্কের সৃষ্টি না হবে। একটি অংশীদারি কারবারের নিরূপণে সর্বাগ্রেই বিবেচনায় নেয়া হয় অংশীদারি চুক্তিপত্রকে। অর্থাৎ চুক্তিপত্র ছাড়া বা
চুক্তি ব্যতীত অংশীদারী ব্যবসায় গঠন অসম্ভব। এ প্রসঙ্গে নিম্নোক্ত দৃষ্টানত্মগুলো প্রণিধানযোগ্য :
১. জন্মগত অধিকার : পিতার মৃতুর পর সন্তান জন্মগত অধিকার বলে পিতার ব্যবসায় থেকে মুনাফা ভোগ করার অধিকারী। কিন্তু তাদেরকে অংশীদারি সংগঠনের অংশীদার বলা যায় না। কারণ তাদের মধ্যে কোন চুক্তিবদ্ধ সম্মতি নেই।
২. পারিবারিক বন্ধন : পারিবারিক বন্ধনে আবদ্ধ একান্নবর্তী হিন্দুু পরিবারের সদস্যগণ পরিবারের সমুদয় সম্পত্তির ভাগীদার হলেও এরূপ ব্যবসায়কে অংশীদারি সংগঠন বলা যাবে না।
৩. পদমর্যাদা : পদমর্যাদা অনুযায়ী কারবারে অবদানের জন্য কর্মকর্তাদেরকে মুনাফার কিছু অংশ প্রদান করা হলেও তাদেরকে অংশীদার বলা যাবে না।
৪. পেশাদারি সংগঠন : পেশাদারী নর্তকী বা গায়িকা হিসেবে কয়েক জনের একটি দল উপার্জিত টাকা সমান ভাগ করে ভোগ করলেও চুক্তির অনুপস্থিতিতে এরূপ সংগঠনকে অংশীদারি সংগঠন বলা যাবে না।
৫. ঋণ চুক্তি : কারবারের ঋণদাতাকে সুদ ছাড়া মুনাফা দেয়ার প্রতিশ্রম্নতি দেয়া হলেও তাকে অংশীদার বলা যাবে না। কারণ তার সাথে অংশীদারি চুক্তি হয়নি।
৬. নাবালক : একজন নাবালককে সুদ বা লাভ ভোগের জন্য সদস্য করা হলেও তাকে অংশীদার বলা যাবে না। এমনকি নাবালক সনত্মান মৃত পিতার সম্পদের অধিকারী হলেও ব্যবসায়ের অংশীদার হতে পারে না।
৭. সমাজসেবা : কতিপয় ব্যক্তি সমাজসেবার উদ্দেশ্যে ব্যবসায় গঠন করলে তাকে অংশীদারি সংগঠন বলা যাবে না। কারণ তাদের মধ্যে অংশীদারি চুক্তি নেই বরং সমাজসেবার উদ্দেশ্য রয়েছে।

উপরিউক্ত আলোচনা থেকে প্রমাণিত হয় যে, চুক্তিবদ্ধ সম্পর্ক না থাকার কারণে উলেস্নখিত ব্যক্তিগণ অংশীদার নন এবং তাদের দ্বারা সৃষ্ট সংগঠন অংশীদারি সংগঠন নয়। আর এ থেকে বলা যায় চুক্তিই অংশীদারি সংগঠনের মূল ভিত্তি।

৫. অংশীদারি চুক্তিপত্র কী?

একটি সংগঠনের উদ্যোক্তাগণ কারবারের প্রকৃতি, উদ্দেশ্য, মূলধন, কার্যপদ্ধতি, লাভ লোকসান বণ্টন ও পারস্পরিক স্বার্থ সংক্রানত্ম বিষয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধানত্মে ঐকমত্য হলে তাকে চুক্তি বলে এবং উক্ত সিদ্ধানত্ম লিখিত আকারে প্রকাশ করলে তাকে চুক্তিপত্র বলে। অংশীদারি সংগঠনের নাম, ঠিকানা, উদ্দেশ্য, পুঁজি, সদস্যদের বিবরণ, লভ্যাংশ বণ্টন, ব্যবসায় ও হিসাব পরিচালনা, উত্তোলন, বিরোধ মীমাংসা পদ্ধতি, ব্যবসায়ের বিলোপসাধন ও সম্পত্তির মূল্য নিরূপণ ইত্যাদি বিষয়ে সকল অংশীদারের সম্মতি ও সিদ্ধানত্ম যে পত্রে লিপিবদ্ধ করা হয় তাকে অংশীদারি চুক্তিপত্র বলে।

পরিশেষে বলা যায়, অংশীদারি ব্যবসায় গঠনের লক্ষ্যে অংশীদারগণ পারস্পরিক সম্মতিক্রমে ব্যবসায় সংক্রানত্ম বিভিন্ন বিষয় যে দলিলে লিপিবদ্ধ করে তাকেই অংশীদারি চুক্তিপত্র বলে।

৬. অংশীদারি চুক্তিপত্রের বিষয়বস্তুসমূহ বর্ণনা কর।

অংশীদারি চুক্তিপত্র এরূপ ব্যবসায় পরিচালনার ভবিষ্যৎ দিকদর্শন হিসেবে কাজ করে। তাই বিষয়বস্তু এমনভাবে নির্ধারণ করা উচিত যাতে ভবিষ্যতে সৃষ্ট হতে পারে এমন সকল সমস্যার সহজ সমাধান এতে পাওয়া যায়। এ লক্ষে চুক্তিপত্রে সাধারণত নিম্নোক্ত বিষয়সমূহের উলেস্নখ থাকা উচিত :
১. অংশীদারি ব্যবসায় সংগঠনের নাম;
২. ব্যবসায়ের ঠিকানা;
৩. ব্যবসায়ের প্রকৃতি, উদ্দেশ্য ও আওতা;
৪. সংগঠনের স্থান ও সম্ভাব্য এলাকা;
৫. ব্যবসায়ের স্থায়িত্ব;
৬. অংশীদারদের নাম, ঠিকানা ও পেশা;
৭. ব্যবসায়ের মোট মূলধনের পরিমাণ;
৮. অংশীদারদের প্রত্যেকের প্রদত্ত পুঁজির পরিমাণ ও তা পরিশোধ পদ্ধতি;
৯. মূলধনের উপর সুদ দেয়া হবে কি না, হলে কী হারে;
১০. অংশীদারগণ ব্যবসায় হতে কোনো অর্থ উত্তোলন করতে পারবে কি না, পারলে কে কত বা কী হারে পারবে;
১১. উত্তোলিত অর্থের উপর সুদ ধরা হবে কি না, হলে কী হারে;
১২. ব্যবসায়ের লাভ-লোকসান বণ্টন পদ্ধতি ও হার;
১৩. ব্যবসায় পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি;
১৪. ব্যবসায়ের হিসাবরক্ষণ ও হিসাব নিরীক্ষণ পদ্ধতি;
১৫. ব্যবসায়ের হিসাব বহি সংরক্ষণ ও পরিদর্শন সংক্রনত্ম নিয়ম;
১৬. যে ব্যাংকে হিসাব খোলা হবে তার নাম, ঠিকানা ও হিসাবের ধরন;
১৭. ব্যাংক হিসাব পরিচালনাকারীর নাম ও পদবি;
১৮. ব্যবসায়িক দলিলপত্রে স্বাক্ষর প্রদানকারী ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের নাম ও পদবী;
১৯. ব্যবসায়িক প্রয়োজনে কোন অংশীদার ঋণ সরবরাহ করলে তার ওপর দেয় সুদের হার;
২০. ব্যবসায়িক প্রয়োজনে অন্যত্র হতে ঋণ সংগ্রহ পদ্ধতি;
২১. অংশীদারগণের অধিকার, দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে বিশদ বর্ণনা;
২২. অংশীদারগণের কোন বেতন বা পারিশ্রমিক দেয়া হবে কি না, হলে কী পরিমাণ;
২৩. ব্যবসায়িক সুনাম মূল্যায়ন সম্পর্কিত বিধিবিধান;
২৪. নতুন অংশীদার গ্রহণ ও প্রয়োজনে বর্তমান কোনো অংশীদারকে বহিষ্কারের নিয়ম;
২৫. কোনো অংশীদারের মৃতু্য বা অবসর গ্রহণকালে ব্যবসায়ের দায় ও সম্পত্তি নিরূপণ এবং পাওনা পরিশোধ পদ্ধতি;
২৬. ব্যবসায়ের আর্থিক বছরের শুরম্ন ও শেষ সময়;
২৭. ব্যবসায়ের বিলোপসাধন পদ্ধতি;
২৮. ব্যবসায়ের বিলোপকালে ব্যবসায়ের দায় ও সম্পত্তি মূল্যায়ন ও তা বণ্টন প্রণালী;
২৯. চুক্তিপত্রের কোনো পরিবর্তনের নিয়ম;
৩০. চুক্তিপত্রের বাইরে অংশীদারদের মধ্যে কোন বিষয়ে বিবাদ দেখা দিলে তা মীমাংসার উপায় ইত্যাদি।

পরিশেষ বলা যায়, উপরিউক্ত বিষয়সমূহ অবশ্যই চুক্তিপত্রে থাকা উচিত। কারণ অংশীদারদের মধ্যকার গঠনকালীন বন্ধুত্ব ও পারস্পরিক বিশ্বাস ভবিষ্যতে নাও হতে পারে। তখন চুক্তিপত্র মীমাংসার প্রধান ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। আদালতে চুক্তিপত্রই প্রামাণ্য দলিল হিসাবে গ্রহণযোগ্য। তবে উক্ত বিষয় ছাড়া অন্য কোনো কারণে অংশীদারদের মধ্যে বিবাদ হলে তা ১৯৩২ সালের অংশীদারি আইন অনুযায়ী নিষ্পত্তি করতে হয়।

Monday, June 10, 2019

দেওয়ানী মামলার ধারাবাহিক স্তর:

১। সেরেস্তাদারের নিকট আরজি দাখিল
২। আরজি পরীক্ষা
৩। পেশকারের কাছে প্রেরন
৪। পাঞ্চিং ও কোর্ট ফিস রেজিস্ট্রারে লিখন
৫। ফাইল সেরেস্তাদারের কাছে আবার প্রেরন
৬। ফাইলিং রেজিস্ট্রারে এন্ট্রি
৭। স্যুট রেজিস্ট্রেশন এন্ট্রি
৮। সেরেস্তাদার কর্তৃক সীলকরন
৯। নেজারত বিভাগে প্রেরন
১০। প্রসেস বন্টন
১১। সমন ফেরত(SR/AD)
১২। সেরেস্তাদারের কাছে আবার প্রেরন
১৩। পেশকারের নিকট আবার প্রেরন
১৪। বিবাদীর হাজিরা
১৫। লিখিত জবাব দাখিল
১৬। বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি
১৭। প্রথম শুনানি
১৮। বিচার্য বিষয় নির্ধারণ
১৯। ডিসকভারি
২০। দলির তলব, দাখিল, আটক, ফেরত
২১। সাক্ষীর প্রতি সমন
২২। চূড়ান্ত শুনানির তারিখ নির্ধারণ
২৩। চূড়ান্ত শুনানি
২৪। বক্রী শুনানি
২৫। যুক্তিতর্ক
২৬। রায় ঘোষনা
২৭। ডিক্রি
২৮। ডিক্রিজারি
২৯। আপিল/রিভিউ
৩০। রিভিশন।

রিট কি?কত প্রকার ও কি কি?


কারো মৌলিক অধিকার লংঘিত হলে আমাদের সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগ তা বলবৎ করতে পারে এবং বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনাকে কার্যকর করতে পারে।

হাইকোর্ট বিভাগের এই এখতিয়ার কে রিট জারীর এখতিয়ার বলে। অর্থাৎ রিট শুধু মাত্র হাইকোর্ট বিভাগ জারী করতে পারে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৭ থেকে ৪৩ এ উল্লেখিত মৌলিক অধিকার লংঘিত হলে সংবিধানের ৪৪ অনুচ্ছেদ প্রদত্ত অধিকারবলে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে মৌলিক অধিকার বলবৎ করার জন্য রিট পিটিশন দায়ের করা যায় এবং হাইকোর্ট বিভাগ ১০২ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতা বলে মৌলিক অধিকার বলবৎ করার জন্য কতিপয় আদেশ নির্দেশ জারী করতে পারে, যাকে রিট বলে।

সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৭ থেকে ৪৩ এ আইনের দৃষ্টিতে সমতা, ব্যক্তি স্বাধীনতা ও জীবনের অধিকার, স্বাধীনতার অধিকার, চলাফেরার অধিকার, সমাবেশের অধিকার, সংগঠনের অধিকার, চিস্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা ও বাক-স্বাধীনতা, পেশা বা বৃত্তির অধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতা, সম্পত্তির অধিকার, ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার, গ্রেফতার বা আটক সর্ম্পকে রক্ষাকবচ ইত্যাদি অধিকারগুলোকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

যেহেতু রাষ্ট্রই মৌলিক অধিকার লংঘন করতে পারে তাই শুধুমাত্র রাষ্ট্র কিংবা রাষ্টীয় কোনো সংস্থায় কর্মরত কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে রিট করা যায়।

হাইকোর্ট এই রিট বিষয়ে অবারিত ক্ষমতা ব্যাবহার করতে পারে অর্থাৎ বিষয় বিবেচনা করে যেকোনো আদেশ দিতে পারে কোনো কিছুই আদালতকে বারিত করে না ।

এক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা হলো বেসরকারি কোনো সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা বা কর্মচারির বিরুদ্ধে রিট করা যায় না অর্থাৎ প্রাইভেট সংস্থা যদি মৌলিক অধিকার ক্ষুন্ন করে তাহলে তা হবে অপরাধ, তখন রিট মামলা করা যায় না। মামলা করতে হবে দেওয়ানী আদালতে।

পাঁচ ধরনের রিট আছে:

১। বন্দী প্রদর্শন রিট:

কোনো ব্যক্তিকে সরকার বা অন্য কেউ আটক করলে কি কারণে তাকে আটক করা হয়েছে তা জানার জন্য বন্দীকে আদালতে হাজির করার যে নির্দেশ দেওয়া হয় তাই বন্দী প্রদর্শন রিট।

২। পরমাদেশ বা হুকুমজারি রিট:

কোনো অধ:স্তন আদালত, ট্রাইব্যুনাল, ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি তার আইনগত দায়িত্ব পালন করতে অস্বীকার করে কিংবা ব্যর্থ হয় তাহলে উচ্চতর আদালত যে আদেশের মাধ্যমে উক্ত আইনগত দায়িত্ব পালন করতে উক্ত আদালত বা ট্রাইব্যুনালকে বাধ্য করে তাকে হুকুমজারী রিট বা পরমাদেশ বলে।

৩। নিষেধাজ্ঞামূলক রিট:

কোনো অধস্তন আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা কোনো কর্তৃপক্ষ, সংস্থা বা ব্যক্তি তার এখতিয়ার বর্হিভূত কাজ করতে উদ্দ্যত হয়েছে কিংবা ন্যায় নীতি ভঙ্গ করতে যাচ্ছে। এ অবস্থায় উচ্চতর আদালত যে আদেশের মাধ্যমে উক্ত ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষকে ঐ কাজ করা থেকে বিরত রাখেন তাকে নিষেধাজ্ঞামূলক রিট বলে। নিষেধাজ্ঞামূলক রিটকে বিচার বিভাগীয় রিটও বলা হয়।

৪। উৎপ্রেষণ রিট:

দুটি উদ্দেশ্যে উচ্চতর আদালত উৎপ্রেষণ রিট জারী করতে পারে- ক) অধ:স্তন কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা ব্যক্তি বা সংস্থা কর্তৃক কৃত ক্ষমতা বহির্ভূত কাজকে বাতিল বা নাকচ করে দেয়া। খ) অধ:স্তন আদালত বা ট্রাইব্যুনালের কোনো মামলা শুনানীর জন্য উচ্চতর আদালত নিজেই গ্রহণ করে এ রিট জারী করতে পারে।

৫। কারণ দর্শাও রিট:

কোনো ব্যক্তি যদি এমন কোনো সরকারি পদ দাবী করে, যে পদের যোগ্যতা তার নাই অথবা অবৈধভাবে যদি কোনো সরকারি পদ দখল করে বসে থাকে, তাহলে উচ্চতর আদালত যে আদেশের মাধ্যমে উক্ত ব্যক্তিকে তার পদ দখলের বা দাবীর কারণ দর্শাও নির্দেশ দিয়ে থাকে তাকে কারণ দর্শাও রীট বলে।

Friday, May 31, 2019

পাঁচ ধাপে অ্যাডভোকেট এনরোলমেন্ট সনদ:

পাঁচ ধাপে অ্যাডভোকেট এনরোলমেন্ট সনদ ও বার কাউন্সিল এ পরীক্ষার জন্য ফরম ফিলাপের নিয়মঃ

পাঁচ ধাপে অ্যাডভোকেট এনরোলমেন্ট সনদ:

১. রেজিস্ট্রেশন
অ্যাডভোকেট হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার আগে ১০ বছরের অভিজ্ঞ আইনজীবীর সঙ্গে ছয় মাস শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করতে হয়। শিক্ষানবিশকালে আইন বিষয়ে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন, মামলার ফাইল প্রস্তুত, মামলার জন্য প্রাসঙ্গিক আইন, নজির ও প্রয়োগ, মামলা পরিচালনা সম্পর্কে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায়। শিক্ষানবিশকে তাঁর সিনিয়রের সঙ্গে শিক্ষানবিশ চুক্তি করতে হয়। চুক্তির ৩০ দিনের মধ্যে বার কাউন্সিল নির্ধারিত রেজিস্ট্রেশন ফরম পূরণ করে সংযুক্তি হিসেবে চুক্তিপত্রটি কাউন্সিলের সচিব বরাবর দাখিল করতে হয়। বার কাউন্সিলের অনুকূলে রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ জমা দিতে হবে ৮০০ টাকা।

২. তালিকাভুক্তির আবেদন
শিক্ষানবিশ চুক্তির মেয়াদ ছয় মাস পূর্ণ হলে একজন শিক্ষানবিশ আইনজীবী তালিকাভুক্তির পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য আবেদন করতে পারেন। আবেদন ফরমের জন্য জমা দিতে হবে ৩৫০ টাকা। ফরমটি পূরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সচিব বরাবর জমা দিতে হয়। আবেদনপত্রের সঙ্গে লাগবে ছয় মাস শিক্ষানবিশকাল সমাপ্ত হয়েছে এই মর্মে সিনিয়রের দেওয়া সনদ, শিক্ষানবিশকালে সিনিয়র পরিচালিত পাঁচটি দেওয়ানি ও পাঁচটি ফৌজদারি মামলার তালিকা, দুজন বিশিষ্ট ব্যক্তির দেওয়া চারিত্রিক প্রশংসাপত্র, সিনিয়র সত্যায়িত সব শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ও নম্বরপত্রের ফটোকপি, সদ্য তোলা চার কপি পাসপোর্ট আকারের রঙিন ছবি, ২০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে কাগজপত্র ও তাতে উল্লিখিত তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে নোটারি পাবলিক বা প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে সম্পাদিত হলফনামা। এনরোলমেন্ট ফি বাবদ গুনতে হবে দুই হাজার ৪০০ টাকা।

৩. প্রিলিমিনারি পরীক্ষা
আবেদনপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর বার কাউন্সিল থেকে দেওয়া হবে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রবেশপত্র। পরীক্ষা হবে ১০০ নম্বরের, প্রশ্নও থাকবে ১০০টি। পাস নম্বর ৫০। সিভিল প্রোসিডিউর কোড থেকে ২০টি, স্পেসিফিক রিলিফ অ্যাক্ট থেকে ১০টি, ক্রিমিনাল প্রোসিডিউর থেকে ২০টি, পেনাল কোড থেকে ২০টি, এভিডেন্স অ্যাক্ট থেকে ১৫টি, লিমিটেশন অ্যাক্ট থেকে ১০টি এবং পেশাগত নীতি, বার কাউন্সিল অর্ডার ও নিয়মাবলি, লিগ্যাল ডিসিশন ও রিপোর্ট থেকে পাঁচটি প্রশ্ন থাকবে।

৪. লিখিত পরীক্ষা
প্রিলিমিনারি পাসের পর অংশ নিতে হবে ১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায়। চার ঘণ্টার এ পরীক্ষায় দেওয়ানি কার্যবিধি ও সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন থেকে তিনটি প্রশ্ন থাকবে, লিখতে হবে দুটি। ফৌজদারি কার্যবিধি, দণ্ডবিধি, সাক্ষ্য আইন এবং তামাদি আইন থেকে দুটি করে প্রশ্ন থাকবে, লিখতে হবে একটি করে। ১৫ নম্বর করে বরাদ্দ থাকবে প্রতিটি প্রশ্নে। বাকি ১০ নম্বরের প্রশ্ন করা হবে বার কাউন্সিল আদেশের ওপর। প্রশ্ন থাকবে দুটি, উত্তর দিতে হবে একটির।

৫. মৌখিক পরীক্ষা
লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ডাকা হবে মৌখিক পরীক্ষায়। দেওয়ানি কার্যবিধি ও সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন, ফৌজদারি কার্যবিধি, দণ্ডবিধি, সাক্ষ্য আইন, তামাদি আইন, বার কাউন্সিল আদেশ আইনের ওপর প্রশ্ন করা হবে ৫০ নম্বরের। পাস নম্বর ২৫। মৌখিক পরীক্ষার সময় উল্লিখিত ১০ মামলার বিষয়ে কেস ডায়েরি দাখিল করতে হবে। তবে ব্যারিস্টারদের কেস ডায়েরি দাখিলের প্রয়োজন পড়ে না। এসব ধাপ সাফল্যের সঙ্গে অতিক্রম করলে আপনি আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হবেন।

#বার কাউন্সিলের ফরম ফিলাপ ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড করার নিয়ম:

বার কাউন্সিল এর অ্যাডভোকেটশীপ পরীক্ষার আগে রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও ফরম ফিলাপের বিষয়টি নিয়ে অনেকেই বিভ্রান্তিতে ভোগেন। আইনজীবী তালিকাভুক্তি পরীক্ষার ফরম ফিলাপ ও বার কাউন্সিলের রেজিস্ট্রেশন কার্ড সংক্রান্ত নিয়মগুলি নিম্নে আলোচনা করা হলো-

প্রথমবার বার কাউন্সিল এ পরীক্ষার জন্য ফরম ফিলাপের নিয়মঃ
শুরুতে বাংলামটর নামবেন। তারপর রুপায়ন ট্রেড সেন্টার এ প্রবেশ করে লিফট এর →৪র্থ ফ্লোর নেমে, সেইখান থেকে একটা হলুদ (১০০০ টাকার) এবং একটা নীল (৩৭০০ টাকার) স্লিপ নিয়ে ফিলাপ করে →পঞ্চম ফ্লোর উঠে ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে আবার →৪র্থ ফ্লোর গিয়ে সেইখান থেকে Enrollment Form (Application for enrollment as Advocate, Form A) নিয়ে এবং সাথে আপনার S.S.C, H.S.C এবং Law এর সার্টিফিকেট এবং মার্কসিট (এক কপি করে), তারপর ৪ কপি ছবি (Passport size) এবং একটা এফিডেবিট (এফিডেবিট আপনে চাইলে বার কাউন্সিল অফিস থেকে ও নিতে পারবেন এবং মনে রাখবেন এফিডেবিট নোটারি করতে হয়) নিয়ে আপনার সিনিয়রের কাছে যাবেন এইগুলো সত্যায়িত এবং Enrollment Form এ সিগনেচার করার জন্য (Enrollment Form আগে ফটোকপি করে তার উপর ড্রাফট করবেন যাতে মূল ফরমে ভুল না হয়) । তারপর ভালো ভাবে ফিলাপ করে এক কপি ফটোকপি করে নিবেন। তারপর ফরমের ২ টা কপি ( ১ টা মেইনকপি এবং আরেকটা ফটোকপি) নিয়ে বোরাক টাওয়ার এর তৃতীয় ফ্লোর এ যাবেন সেইখানে অফিস মেইনকপি রেখে দিবে এবং ফটোকপিতে সিল মেরে আপনাকে দিয়ে দিবে।

দ্বিতীয়বার বার কাউন্সিল এ পরীক্ষার জন্য ফরম ফিলাপের নিয়মঃ
শুরুতে বাংলামটর নামবেন। তারপর রুপায়ন ট্রেড সেন্টার এ প্রবেশ করে লিফট এর →৪র্থ ফ্লোর নেমে, সেইখান থেকে একটা হলুদ (৫০০ টাকার) এবং একটা নীল (১৫০০ টাকার) স্লিপ নিয়ে ফিলাপ করে →পঞ্চম ফ্লোর উঠে বাংকে টাকা জমা দিয়ে আবার →৪র্থ ফ্লোর গিয়ে সেইখান থেকে Re-Appear Form নিয়ে ফিলাপ করে এবং সাথে গতবারের এডমিট কার্ড এর ফটোকপি এবং সত্যায়িত (নিজের সিনিয়র দ্বারা) ৩ কপি ছবি দিয়ে বোরাক টাওয়ার এর তৃতীয় ফ্লোর এ জমা দিতে হবে।

রেজিস্ট্রেশন কার্ড যারা পাননি তাদের করনিয়ঃ
রেজিস্ট্রেশন কার্ড নেওয়ার সিরিয়াল বেশ লম্বা। সকাল সকাল গেলে অল্প সময় কাজ সেরে নেওয়া সম্ভব হবে।

পাবলিক এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যারা পাশ করেছেন এবং ইনটিমিশন জমা যাদের ৬ মাসের বেশি তাদেরকে রেজিস্ট্রেশন কার্ড দেওয়া শুরু করেছে বার কাউন্সিল। তবে কিছু ক্ষেত্রে কার্ড না দিয়ে পরবর্তীতে উনাকে কবে দিবে সেই ডেট দিয়ে দিচ্ছে।

প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যারা পাশ করেছেন তাদের মধ্য থেকে যারা ইনটিমিশন ১৬ বা ১৭ সালে প্রথম দিকে জমা দিয়েছেন তাদের রেজিস্ট্রেশন কার্ড রেডি হয়ে আছে বিধায় দিয়ে দিচ্ছে, তবে ১৭ সালের শেষের দিকে বা ১৮ সালে যারা জমা দিয়েছেন তাদের কার্ড বিশ্ববিদ্যালয় অনুযায়ী নোটিশ দিয়ে আলাদা আলাদা ডেট দিয়ে তাদেরকে একসাথে রেজিস্ট্রেশন কার্ড দেওয়া হবে। এসব নিয়ে বার কাউন্সিল সাধারণত আলাদাভাবে নোটিশ দিয়ে থাকে। আপনারা নোটিশ অথবা স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালোভাবে খোঁজ নিয়ে রাখবেন।

রেজিস্ট্রেশন কার্ড না পাওয়ার ক্ষেত্রে সাধারণ করণীয় ও সতর্কতা [প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য]
এরকম অনেক পরিচিত শিক্ষানবিশ আছেন, যারা কিনা বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে প্রায় দেড় বছর হতে চললো ইন্টিমেশন জমা দিয়েছেন। কিন্তু তারা এখনো রেজিস্ট্রেশন কার্ড পাননি। তাদের দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। তবে একটি ছোট্ট কিন্তু আছে! বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আপনারা একবার অবশ্যই নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগাযোগ করবেন যে, বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষ আপনাদের নামের তালিকা বার কাউন্সিলে পাঠিয়েছে কিনা। আপনারা জানেন যে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আইন বিভাগকে একটি তালিকা পাঠিয়ে দিতে হয় বার কাউন্সিলে, যে তালিকার ভিত্তিতেই আপনার রেজিস্ট্রেশন কার্ড প্রাপ্তি নিশ্চিত হবে। নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে আগে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে যথেষ্ট প্রমাণ যোগাড় করুন যে, তাদের পাঠানো তালিকায় আপনার নাম ঠিকমতো গেছে কিনা। তাদেরকে খানিকটা চাপের ওপর রাখুন। নইলে শেষমুহূর্তে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেবেন নাকি রেজিস্ট্রেশন কার্ড সংক্রান্ত দৌড়াদৌড়ি করতে থাকবেন? রেজিস্ট্রেশন কার্ড প্রাপ্তির বিষয়ে ‘শুভস্য শীঘ্রম’ হবেন দয়া করে!

অ্যাডভোকেটশীপ পরীক্ষার ফরম ফিলাপঃ

শুরুতেই একটা কথা জেনে রাখুন যে, যে বা যারাই হাতে রেজিস্ট্রেশন কার্ড পেয়ে থাকেন, তারাই বার কাউন্সিলের আনুষ্ঠানিক নোটিশ ছাড়াই যেকোনো সময় পরীক্ষার ফরম ফিলাপ সেরে রাখতে পারেন। ফরম ফিলাপ করে সংশ্লিষ্ট টাকা জমা দিয়ে দিলে বার কাউন্সিল তা রিসিভ করতে বাধ্য থাকে। তবে ঘটনাচক্রে যদি দেখা যায় যে পরবর্তীতে আনুষ্ঠানিক ফরম ফিলাপ এর সময় ফরম ফিলাপের কোনো নতুন মূল্য নির্ধারণ বা পুণ:নির্ধারণ করা হয়, সেক্ষেত্রে অবশিষ্ট ঘাটতি টাকাও জমা দিতে হবে।

বার কাউন্সিল সর্বশেষ ভাইভা পরীক্ষার সময়ে ঘোষণা দিয়েছিলো যে, যারা রেজি. কার্ড হাতে পেয়েছেন, তারা নভেম্বর ২০ তারিখ থেকে ডিসেম্বর ২০ তারিখের মধ্যে ফরম ফিলাপ করে রাখতে পারেন। তখন অনেকেই যারা রেজি. কার্ড হাতে পাননি, অথচ ৬ মাস অতিবাহিত হয়ে গেছে, তারা ভীষণ দুশ্চিন্তায় ছিলেন যে তাদের কী হবে! এ নিয়ে দুশ্চিন্তা করবেন না! কেননা, বার কাউন্সিল যাদের রেজি. কার্ড ইস্যু করেনি, তাদেরও রেজি. কার্ড ইস্যু করে তাদেরকে ফরম ফিলাপের প্রয়োজনীয় সময় প্রদান করেই ফরম ফিলাপের আরো পর্যাপ্ত সময় দেবে।

তো, এই ফরম ফিলাপের চলমান সময়ের ভেতরেই বার কাউন্সিলের ভবন স্থানান্তর, কাগজপত্র বা ফাইলসমূহ যথাযথভাবে সংরক্ষণের ঝুঁকি এবং অন্যান্য বিবিধ কারণে ফরম ফিলাপের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছিল।

নোটিশে বলা হয়েছে যে, পরবর্তীতে যথাসময়ে আবারো ফরম ফিলাপের নোটিশ দেওয়া হবে এবং বিশেষভাবে উল্লেখ ছিলো যে, ‘‘পরীক্ষায় অংশগ্রহণের উপযুক্ত সকল প্রার্থীকেই ফরম ফিলাপের জন্য পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হইবে মর্মে আশ্বস্ত করা যাইতেছে।”

তার মানে আনুষ্ঠানিকভাবে এটি স্থগিত আছে। কিন্তু ঐ যে শুরুতেই বললাম, যারা অলরেডি রেজি কার্ড হাতে পেয়েছেন তারা যদি ফরম ফিলাপ করে রাখেন তাতে কোন অসুবিধা নাই, বার কাউন্সিল তা গ্রহণ করে নেবে।
সংগৃহীত : ফেসবুক থেকে
#তথ্য_সংগ্রহ_করেছেন: ফারিয়া আপু।
#বি.দ্রঃবানান ভুল হলে ক্ষমা করবেন।ভুল তথ্য পরিবেশিত হলে কমেন্টে জানান।

Sunday, April 7, 2019

Reveiw,revision ,appeal পরিচিতি

Reveiw,revision ,appeal পরিচিতি

Reveiw,revision ,appeal এই তিনটা শব্দই বহুল পরিচিত আর গুরুত্বপূর্ণও বটে,এই টার্মগুলো ছাড়া ন্যায়বিচার কখনই প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনা।প্রজাতন্ত্রের সংবিধান,ফৌজদারী কার্যবিধি(১৮৯৮) দেওয়ানী কার্যবিধি সহ ট্রাইব্যুনালের আইনে গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়গুলো নিয়ে স্পষ্ট আলোচনা করা হয়েছে।

Reveiw এবং revision এই দুইটা শব্দের অর্থ এবং আবেদন প্রায় একই রকম মনে হলেও এক নয় কোনভাবেই, রয়েছে একটা সূক্ষ পার্থক্য। Reveiw এর বাংলা অর্থ দাঁড়ায় পর্যবেক্ষন, পরিদর্শন, পুনঃপরীক্ষা আর revision শব্দের অর্থ হচ্ছে "পুণঃপরীক্ষা করা" ব্যাকরন অনুযায়ী যা একটা ক্রিয়া পদ।

Reveiw করার বিষয়টা নিশ্চিত করা হয়েছে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১০৫ দিয়ে,ওখানে বলা হয়েছে আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে আর আপীল বিভাগ কতৃক প্রণিত বিধান মেনে আপীল বিভাগ কতৃক ঘোষিত যেকোনো রায় পুনর্বিবেচনা করার এখতিয়ার উক্ত বিভাগের থাকবে; তেমনই বাংলাদেশের যেকোন আদালত নিজের যেকোনো রায় পুনর্বিবিবেচনা করতে পারে এখতিয়ারবলে, এই বিষয়টাই আবার নিশ্চিত করেছে দেওয়ানী কার্যবিধির ধারা ১১৪। রিভিউ বিষয়টাকে তুলনা করতে পারেন আপনার পরীক্ষার খাতার সাথে।ধরুন আপনি একটা পাবলিক প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহন করলেন।পরিক্ষার হলে বসে আর কারও খাতা না দেখতে পারলেও নিজের খাতাটা কিন্তু নিজে দেখতে পারবেন বার বার,যেটাকে আমরা রিভাইজ বলি, এই জিনিসটাই ঘটে আদালতের reveiw এর সময়।আদালত একটা রায় দিলো পরে মামলার পক্ষদ্বয়ের যেকোন পক্ষ আবেদন করলো আবার রায়টা ভালো করে পুনঃপরীক্ষা করে দেখার জন্য। খুব সাম্প্রতিক ঘটনা একটা;জামায়াত নেতা"কামারুজ্জা মানের"রায় দিয়েছে আপীল বিভাগ,কামরুজ্জামানের পক্ষের আইনজিবী বলছেন আসামীপক্ষের রিভীউ করার সুযোগ রয়েছে অর্থাৎ আপীল রায়ের উপর আসামীপক্ষ একটা পিটিশন দায়ের করবে যে রায়টা আবার পরীক্ষা করে দেখা হউক এবং এই পিটিশনটা আর কোথাও করা যাবেনা শুধু আপীল বিভাগেই করা যাবে"সংবিধানের ১০৫"অনুচ্চছেদ দিয়ে। আরেকটা বিষয় মনে রাখতে হবে রিভিউয়ের সময় নতুন করে স্বাক্ষী প্রমান হাজির করার এখতিয়ার নেই। revision শব্দটাও প্রায় একই অর্থে ব্যাবহৃত হয় তবে পার্থক্যটা হচ্ছে এ ক্ষেত্রে উচ্চতর আদালত একটা তদারকি ক্ষমতা প্রয়োগ করে সাধারনত। এতে ফৌজদারী কার্যবিধির ৪৩৫, ৪৩৬, ৪৩৯, ৪৩৯ ক,ধারাগুলো প্রজোয্য। ৪৩৫ অনুযায়ী উচ্চ আদালত তার অধিনস্থ যেকোনো নিম্ন আদালতের নথি তলব করতে পারেন। যেমন যেকোন আদালতের সকল জুডিশিয়াল অথবা এক্সিকিউটিব ম্যাজিস্ট্র্যাট সাধারনত দায়রা আদালতের অধিনস্থ। সুতরাং দায়রা আদালত যদি মনে করে যে কোনো ম্যাজিস্ট্র্যাট ; এক্সকিউটিভ অথবা জুডিশিয়াল একটা রায়ে আইনগত কোন ভূল (de jure)করেছে সেক্ষেত্রে তিনি নথি তলব করতে পারেন।
একটা উদাহরন দেখুন ধরি 'ক' নামের এক ব্যক্তিকে একজন দ্বিতীয় শ্রেণির ম্যাজিস্ট্র্যাট ৭ বছরের কারাদন্ড দিয়ে দিলেন এখানে একটা আইনগত ভূল আছে সি,আর,পি,সি ৩২ ধারা অনুযায়ী একজন দ্বিতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্র্যাট দিতে পারেন মাত্র ৩ বছরের কারাদন্ড উচ্চ আদালত এটা তদারকি করে দেখলো।Reveiw আর revision এর মধ্যে আরেকটা পার্থক্য হচ্ছে Reveiw করতে হয় আবেদনকারীর আবেদন সাপেক্ষ অপরদিকে revision করা যায় আবেদনকারীর আবেদনসাপেক্ষে অথবা উচ্চ আদালতের স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতা প্রয়োগ করেও।revision এর সময়ও নতুন করে স্বাক্ষি প্রমান আনার সুযোগ নেই।

appeal শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো পূনর্বিচার প্রার্থী হওয়া।প্রজাতন্ত্রের সংবিধান অনুচ্ছেদ ৯৪(১) আপীল বিভাগ নামের একটা আদালত প্রতিষ্ঠা করেছে, অনুচ্ছেদ ১০৩(১) এ বলেছে হাইকোর্ট বিভাগের রায় আদেশ বা ডিক্রি আদেশ বা দন্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপীল শুনানী বা নিষ্পত্তির এখতিয়ার আপীল বিভাগের রয়েছে। ফৌজদারী অথবা দেওয়ানী কার্যবিধি কোথাও আপীলের কোন স্পষ্ট সংজ্ঞা দেয়া নেই তবে এটা বলা যেতে পারে নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালতে নিয়ে একটা মামলাকে আবার খতিয়ে দেখার নামই আপীল, আর এক্ষেত্রে question of fact,question of law(de facto,de jure) সবই দেখতে হবে।
ধরি একটা আদালতে একটা রায় হলো যেখানে question of fact(ঘটনা বর্ণনা) করতে আদালত ভূল করেছে সুতরাং এখানে অবশ্যই ন্যায়বিচার পথভ্রষ্ট হবে কারন ঘটনাটাই যেখানে মিথ্যা সেখানে আইনগত প্রশ্ন সঠিক হওয়ারতো কোনো প্রশ্নই আসেনা। question of fact নিয়ে ঘাটা-ঘাটি করলে question of law নিয়েও ভাবতে হবে নতুন করে। এসকল ক্ষেত্রে ঐ আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধে সে যার অধনস্থ সেই আদালতে আপীলের আবেদন করা যাবে।এক্ষেত্রে উচ্চ আদালত স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতা(sou moto)প্রয়োগ করতে পারেনা হতে হবে পক্ষদ্বয়ের যেকোনো পক্ষের আবেদন সাপেক্ষে।

দেওয়ানী কার্যবিধি প্রাথমিক আলোচনাঃ

দেওয়ানী কার্যবিধি-১৯০৮
Code of Civil Procedure-1908
প্রাথমিক আলোচনাঃ
»দেওয়ানী কার্যবিধি ১৮৫৯ সালে প্রথম প্রণয়ন করা হয়।যা পাশ হয় ১৯০৮ সালের ২১ মার্চ। তবে এর কিছু ধারা ও আদেশে প্রতিকারের বিধান রয়েছে বিধায় এটিকে পদ্ধতিগত আইন (Procedural Law) বলা হয়। ১৮৮২ সালে দেওয়ানি কার্যবিধি নামে একটি আইন ছিল, যার কোন আদেশ ছিল না। ধারা ছিল ৬৫৩টি এবং বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে ২৬ মার্চ দেওয়ানী কার্যবিধি কার্যকর করা হয়।
মনে রাখা প্রয়োজনঃ
»দেওয়ানী কার্যবিধি সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০১২সালে।
এক নজরেঃ
ইংরেজি নাম- Code of Civil Procedure
১৯০৮ সালের ৫নং আইন
কার্যকাল- ১লা জানুঃ ১৯০৯
মোট ধারা- ১৫৮টি
আদেশ- ৫১টি
তফসিল- ৫টি
অধ্যায়- ১১টি
পদ্ধতিগত আইন (Procedural Law)

আইনের প্রকৃতিঃ সাধারণত আইনের প্রকৃতি ২ ধরনের-
১। পদ্ধতিগত আইন (Procedural Law)
২। তত্ত্বগত আইন (Substantive Law)

পদ্ধতিগত আইনঃ
»যে আইনে কোন মোকদ্দমা বা মামলার বিচার করার পদ্ধতি অর্থাৎ মামলা দায়ের থেকে শুরু করে চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত যে নিয়ম বা পদ্ধতিঅনুসরণের উল্লেখ থাকে সেই নিয়ম সংশ্লিষ্ট আইনকে পদ্ধতিগত আইন বলে।
[যেমন] ফৌজদারী কার্যবিধি, দেওয়ানী কার্যবিধি,সাক্ষ্য আইন, তামাদি আইন।
তত্ত্বগত আইনঃ
»যে আইনে কোনো অধিকার বা শাস্তিকে সংজ্ঞায়িত করে সেই আইনকে তত্ত্বগত আইন বলে।
[যেমন] দন্ডবিধি, সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন।দেওয়ানী কার্যবিধিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়-
ধারা ও আদেশ।

মনে রাখা প্রয়োজনঃ
»ধারাতে বলা আছে ক্ষমতার কথা পক্ষান্তরে আদেশে বলা আছে পদ্ধতির কথা।
»ধারা পরিবর্তন করতে পারে জাতীয় সংসদ,পক্ষান্তরে আদেশ পরিবর্তন করতে পারে মহামান্য হাইকোর্ট।
সংজ্ঞাসমূহ (Definitions)
[ধারা ২(১)] বিধি
[ধারা ২(২)] ডিক্রি
[ধারা ২(৩)] ডিক্রিদার
[ধারা ২(৪)] জেলা
[ধারা ২(৫)] বিদেশী আদালত
[ধারা ২(৬)] বিদেশী রায়
[ধারা ২(৭)] সরকারি উকিল
[ধারা ২(৮)] বিচারক
[ধারা ২(৯)] রায়
[ধারা ২(১০)] সাব্যস্ত দেনাদার
[ধারা ২(১১)] বৈধ প্রতিনিধি
[ধারা ২(১২)] অন্তর্বর্তীকালীন মুনাফা
[ধারা ২(১৩)] অস্থাবর সম্পত্তি
[ধারা ২(১৪)] আদেশ
[ধারা ২(১৫)] উকিল
[ধারা ২(১৭)] সরকারি কর্মকর্তা
[ধারা ২(১৮)] নিয়মাবলী
[ধারা ২(১৯)] কর্পোরেশনের শেয়ার
ধারা ২(২০)] স্বাক্ষর
[আদেশ ১(১)] (বাদি) যিনি আরজি দাখিলের মাধ্যমে নালিশ দায়ের করেন।
[আদেশ ১(৩)] (বিবাদি) যিনি জবাব দাখিল করেন।
[আদেশ ৪(১)] আরজি যে পদ্ধতিতে দাখিল করা হয়।
মোকদ্দমার পক্ষসমূহঃ
[আদেশ ১] দেওয়ানী মোকদ্দমায় সাধারণত ২ ধরনের পক্ষ থাকে-
» বাদি পক্ষ এবং
» বিবাদী পক্ষ।

মোকদ্দমার পক্ষভুক্তঃ
একটি দেওয়ানী মোকদ্দমার এক বা একাধিক বাদি বা বিবাদী থাকতে পারে-
»যিনি মোকদ্দমা দায়ের করেন তা হলো বাদী এবং
»যার বিপক্ষে মোকদ্দমা দায়ের করা হয় তা হলো বিবাদী
মনে রাখা প্রয়োজনঃ
» যার বিপক্ষে কোন প্রতিকার চাওয়া হয় না, তবে মোকদ্দমা নিষ্পত্তির জন্য তার উপস্থিতি প্রয়োজন তাকে বলা হয় মোকাবিলা বিবাদী।

উল্লেখ্য,
»মোকদ্দমার প্রয়োজনীয় পক্ষ
»মোকদ্দমার যথাপোযুক্ত পক্ষ।
মোকদ্দমার প্রয়োজনীয় পক্ষঃ
»মোকদ্দমায় কোন ব্যক্তির উপস্থিতি একান্ত প্রয়োজন এবং উক্ত উপস্থিতি ছাড়া কোন ডিক্রি দেওয়া যায় না তা হলো মোকদ্দমার প্রয়োজনীয় পক্ষ।
মোকদ্দমার যথাপোযুক্ত পক্ষঃ
»কোন মোকদ্দমায় কোন ব্যক্তির উপস্থিতি ছাড়া আদালত কার্যকরী কোন আদেশ দিতে পারে, কিন্তু পূর্নাঙ্গ বা চূড়ান্ত রায় দিতে পারে না তা হলো
মোকদ্দমার যথাপোযুক্ত পক্ষ।

[আদেশ ১(৯)] ভ্রান্তভাবে পক্ষভূক্ত করা বা না করা-
»পক্ষ-সমূহের অপসংযোগ।
»পক্ষ-সমূহের অসংযোগ।
উল্লেখ্য,
»যাদের পক্ষভূক্তির প্রয়োজন ছিল না, অথচ পক্ষভূক্ত করা হয়েছে তা পক্ষ-সমূহের অপসংযোগ।
»যাদের পক্ষভূক্তির প্রয়োজন ছিল, অথচ পক্ষভূক্ত করা হয়নি তা পক্ষ-সমূহের অসংযোগ।

[ধারা ২(২)] ডিক্রি
»ডিক্রি হলো আদালতের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত, যেটা চূড়ান্তভাবে মোকদ্দমার তর্কিত বিষয় নিয়ে পক্ষদ্বয়ের অধিকার নির্ণয় করে।ডিক্রি ২ প্রকার-
»প্রাথমিক ডিক্রি (Preliminary Decree)
»চূড়ান্ত ডিক্রি (Final Decree)
উল্লেখ্য,
»ডিক্রি তখনই প্রাথমিক হয়, যখন মামলা চূড়ান্ত নিষ্পত্তির জন্য আরও ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন থাকে।
»মামলা যখন চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হয়, তখন তাকে চূড়ান্ত ডিক্রি বলে।

মনে রাখা প্রয়োজনঃ
»আরজি নাকচ বা খারিজ ও ১৪১ ধারার প্রত্যার্পণের আদেশ ডিক্রির সমতুল্য।
»আরজির মাধ্যমে একটি দেওয়ানি মোকদ্দমা দায়ের করা হয় এবং ডিক্রির মাধ্যমে তা নিষ্পত্তি হয়।

[ধারা ২(৩)] ডিক্রিদার
»আদালত যার পক্ষে ডিক্রি প্রদান করেন তাকে ডিক্রিদার বলে।
মনে রাখা প্রয়োজনঃ
»আদালত যার বিপক্ষে ডিক্রি প্রদান করেন তাকে ডিক্রিদায়িক বলে।
[ধারা ২(৯)] রায়
»ডিক্রি বা আদেশ দেওয়ার জন্য আদালত যে যুক্তি প্রদর্শন করে তা হলো রায়।
মনে রাখা প্রয়োজনঃ
»ডিক্রির মূল ভিত্তি হলো রায়।
»রায় প্রদানের ৭ দিনের মধ্যে ডিক্রি প্রদান করতে হবে।
»আরজি দাখিল হতে ডিক্রির আগ পর্যন্ত সবই রায়।
[ধারা ২(৮)] বিচারক
»জজ অর্থ দেওয়ানি আদালতে সভাপতিত্বকারী অফিসার।
»মূল এখতিয়ার সম্পন্ন প্রধান দেওয়ানী আদালতে সভাপতিত্বকারি ব্যক্তি।
»আদালতের প্রধান কর্মকর্তা জজ এবং মূল কর্মকর্তা সেরেস্তাদার।
[ধারা ২(১৫)] উকিল
»অন্যের পক্ষে হাজির হয়ে যুক্তিতর্কের পেশ করার অধিকারী কোন ব্যক্তিকে উকিল বলে।
»মুক্তারও উকিলের অন্তর্ভূক্ত হবে। মোক্তার হলো ৭ বৎসর কোন ব্যক্তি কোন আইনজীবির সহিত আইন বিষয় পরিচালনা করেন।
[ধারা ২(৭)] সরকারি উকিল
»সরকারের ক্ষমতাপ্রাপ্ত সরকারের পক্ষে যিনি মামলা পরিচালনা করেন তাকে সরকারি উকিল বলে।
মনে রাখা প্রয়োজনঃ
»শুধুমাত্র দেওয়ানি মোকদ্দমার ক্ষেত্রে GP বলে।
[ধারা ২(১৪)] আদেশ
»আদেশ বলতে কোন দেওয়ানী আদালতের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত যা ডিক্রি নয়। মামলা চলাকালীন আদালত যে সব সিদ্ধান্ত দেন তা আদেশ।
আদেশ ২ প্রকার-
»আপিলযোগ্য আদেশ (Appealable Order)
»আপিলঅযোগ্য আদেশ (Non-Appealable Order)
[ধারা ২(১১)] বৈধ প্রতিনিধি
»বৈধ প্রতিনিধি বলতে সেই ব্যক্তিকে বুঝায় যিনি আইনত মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি পরিচালনা করেন এবং যিনি প্রতিনিধি হিসেবে মামলা করেন

ফৌজদারি মামলার নিষ্পত্তি পর্যন্ত ধাপ সমুহ

ফৌজদারি মামলার নিষ্পত্তি পর্যন্ত ধাপ সমুহঃ
ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে কোন অভিযোগ আমলে নেওয়া হলে মামলা নিষ্পত্তি পর্যন্ত যে কয়টি ধাপ রয়েছে তা পর্যায়ক্রমে দেয়া হল (প্রাথমিক ধারনা, বিস্তারিত না)
★সমন:
আসামী দের বিরুদ্ধে আদালত স্বাক্ষরিত সমন ইস্যু করা হয়। যেখানে আদালতে হাজির হবার জন্য একটি নির্দিষ্ট তারিখ থাকে।
★ওয়ারেন্ট:
সমনে উল্লেখিত তারিখে আসামী হাজির না হলে আদালত তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করেন। এরূপ প্রসেস কে W/A বা Warrant of Arrest বলা হয়।
WP & A:
ওয়ারেন্ট এ উল্লেখিত তারিখে আসামীকে হাজির করা না গেলে বা আসামী পলাতক থাকলে আদালত তার বিরুদ্ধে WP & A (Warrant of Proclamation and Attachment) ইস্যু করেন।এটি ‘হুলিয়া’ বলে পরিচিত।
পত্রিকা বিজ্ঞপ্তি:
WP&A এতে উল্লেখিত তারিখে আসামীকে হাজির করা না গেলে বা আসামী পলাতক থাকলে এবং আদালত তার বিরুদ্ধে দুটি বহুল প্রচলিত বাংলা পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রদানের আদেশ দেন।
★অনুপস্থিতিতে বিচার:
পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রদানের পরও উল্লেখিত তারিখে আসামী হাজির না হলে বা আসামী পলাতক থাকলে তার অনুপস্থিতিতে বিচার শুরু হয়। একে আইনের ভাষায় (Trial In Absentia) বলে।
★চার্জ শুনানী:
উপরোক্ত কোন প্রক্রিয়ায় বা স্বেচ্ছায় অভিযুক্ত ব্যক্তি হাজির হলে আদালত তাদের উপর আনীত অভিযোগ তাদেরকে পড়ে শোনাবেন। তাদের বিরূদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করলে আদালত তার জন্য তাদের কে শাস্তি প্রদান করবেন। অভিযোগের সত্যতা অস্বীকার করলে উহার সত্যতা নিরূপনের জন্য সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহনের নিমিত্তে সাক্ষীদের প্রতি সমন এবং ক্ষেত্র বিশেষে অন্যান্য প্রসেস যেমন: WW বা witness warrant এবং NWW বা Non Bailable Witness Warrant ইস্যু করা হয়।
তবে চার্জ শুনানীতে যদি আদালতের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, আসামীদের বিরূদ্ধে আনীত অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা নাই তাহলে বিচারে না গিয়ে আসামী/আসামীদের কে অব্যাহতি দেয়া হয়।
★সাক্ষ্য গ্রহন:
এই পর্যায়ে ফরিয়াদী পক্ষের আইনজীবী ফরিয়াদী সহ তার মনোনীত সাক্ষীদের জবানবন্দী গ্রহন করেন এবং আসামী পক্ষ তাদের জেরা করেন। সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহন সমাপ্ত হলে আদালত উভয় পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শ্রবণ পূর্বক রায় ঘোষনার জন্য তারিখ ঘোষনা করেন।
★রায় প্রদান:
সাক্ষীদের সাক্ষ্য, নথিস্থ কাগজাত ও অনান্য পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিশ্লেষন করে আদালতের নিকট সন্দেহাতীত ভাবে আসামীদেরে বিরূদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনানুসারে শাস্তি প্রদান করেন কিন্তু অভিযোগ প্রমাণিত না হলে খালাস প্রদান করেন।
★আপীল:
কোন পক্ষ আদালতের প্রদত্ত রায়ে সন্তুষ্ট না হলে এখতিয়ার সম্পন্ন উচ্চ আদালতে আপীল করতে পারেন।

Friday, February 15, 2019

অন্যায় অভিপ্রায় & অপরাধমূলক অবহেলা

অন্যায় অভিপ্রায়(Wrongful Intention): ফলাফল জানা সত্ত্বেও কেউ অন্যায় কাজ করে, তাহলে ধরে নিতে অন্যায় অভিপ্রায় ছিল।
অপরাধমূলক অবহেলা(Culpable Negligence):ফলাফল জানে না,কিন্তু এ বিষয়ে অসচেতন ও উদাসীন ছিল,তাই হলো অপরাধমূলক অবহেলা।।
Ignorance of law is nlo excuse.
Guilt plus punishment is equal to innocence.

Monday, January 7, 2019

রিট কি? কত প্রকার ও কি কি?

বাংলাদেশের আইন ব্যাবস্থা রীট কি(WhatisWrit) ?রীট কত প্রকার ও কি কি?

রীট (Writ) শব্দের অর্থ হল আদালত বা যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ঘোষিত বিধান বা আদেশ। রীটের উৎপত্তি ও বিকাশ ইংল্যান্ডে। প্রথমে রীট ছিল রাজকীয় বিশেষাধিকার(royal prerogative)। রাজা বা রানী বিচারের নির্ধারক হিসাবে (fountainofjustice)রীট জারী করতে পারত। একমাত্র রাজা বা রানীর রীট জারী করার অধিকার ছিল বলে একে প্রথমে বিশেষাধিকার রীট বলা হত। রাজা বা রানী তাদের কর্মচারী বা অফিসারদের কার্যবালি পালনে বাধ্যকরার জন্য বা কোন অবৈধ কাজ হতে বিরত রাখার জন্য রীট জারী করতেন।পরবর্তি কালে রাজা বা রানীরএই বিশেষাধিকার নাগরিকদের অধিকারে চলে আসে। নাগরিকগণ সরকারী কর্মকর্তাদের আচরণ ও কাজে ক্ষুদ্ধ হয়ে রাজার কাছে আসত এবং রাজা বা রানী তাদের বিশেষ অধিকার বলে রীট জারী করত।
পরবর্তি কালে রাজা বা রানীর প্রতিনিধি হিসাবে ইংল্যান্ডে দু’ধরনের আদালত গঠিত হয়।
যেমন, চ্যান্সারী আদালত (court of chancery) এবং কিংস বেঞ্চ(kings bench) এসব আদালত নাগরিকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে রীট জারী করত।
বাংলাদেশের সংবিধান হাইকোর্ট বিভাগকে শুধুমাত্র একটি ক্ষেত্রে আদি এখতিয়ার দিয়েছে, সেটি হল রীট জারীর এখতিয়ার।
সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগ কারো মৌলিক অধিকার লংঘিত হলে তা বলবৎ করতে পারে এবং বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনাকে কার্যকর করতে পারে।হাইকোর্ট বিভাগের এই এখতিয়ারকে রীট জারীর এখতিয়ার বলে। অর্থাৎ রীট শুধু মাত্র হাইকোর্ট বিভাগ জারী করতে পারে।কারো মৌলিক অধিকার লংঘিত হলে সংবিধানের৪৪ অনুচ্ছেদ প্রদত্ত অধিকার বলে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে মৌলিক অধিকার বলবত করার জন্য রীট পিটিশন দায়ের করতে পারে এবং হাইকোর্ট বিভাগ ১০২ অনুচ্ছেদ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মৌলিক অধিকার বলবত করার জন্য কতিপয় আদেশ-নির্দেশ জারী করতে পারে, তাকে রীট বলে।
বিভিন্ন প্রকারের রীটঃ পাঁচ ধরনের রীট রয়েছে।যেমনঃ
পাঁচ ধরনের রিট আছে:

১। বন্দী প্রদর্শন রিট (Writ of habeas corpus) :

কোনো ব্যক্তিকে সরকার বা অন্য কেউ আটক করলে কি কারণে তাকে আটক করা হয়েছে তা জানার জন্য বন্দীকে আদালতে হাজির করার যে নির্দেশ দেওয়া হয় তাই বন্দী প্রদর্শন রিট।

২। পরমাদেশ বা হুকুমজারি রিট(Writ of mandamus):

কোনো অধ:স্তন আদালত, ট্রাইব্যুনাল, ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি তার আইনগত দায়িত্ব পালন করতে অস্বীকার করে কিংবা ব্যর্থ হয় তাহলে উচ্চতর আদালত যে আদেশের মাধ্যমে উক্ত আইনগত দায়িত্ব পালন করতে উক্ত আদালত বা ট্রাইব্যুনালকে বাধ্য করে তাকে হুকুমজারী রিট বা পরমাদেশ বলে।

৩। নিষেধাজ্ঞামূলক রিট(Writ of prohibition) :

কোনো অধস্তন আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা কোনো কর্তৃপক্ষ, সংস্থা বা ব্যক্তি তার এখতিয়ার বর্হিভূত কাজ করতে উদ্দ্যত হয়েছে কিংবা ন্যায় নীতি ভঙ্গ করতে যাচ্ছে। এ অবস্থায় উচ্চতর আদালত যে আদেশের মাধ্যমে উক্ত ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষকে ঐ কাজ করা থেকে বিরত রাখেন তাকে নিষেধাজ্ঞামূলক রিট বলে। নিষেধাজ্ঞামূলক রিটকে বিচার বিভাগীয় রিটও বলা হয়।

৪। উৎপ্রেষণ রিট(Writ of certiorari) :

দুটি উদ্দেশ্যে উচ্চতর আদালত উৎপ্রেষণ রিট জারী করতে পারে- ক) অধ:স্তন কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা ব্যক্তি বা সংস্থা কর্তৃক কৃত ক্ষমতা বহির্ভূত কাজকে বাতিল বা নাকচ করে দেয়া। খ) অধ:স্তন আদালত বা ট্রাইব্যুনালের কোনো মামলা শুনানীর জন্য উচ্চতর আদালত নিজেই গ্রহণ করে এ রিট জারী করতে পারে।

৫। কারণ দর্শাও রিট(Writ of quo-warranto).:

কোনো ব্যক্তি যদি এমন কোনো সরকারি পদ দাবী করে, যে পদের যোগ্যতা তার নাই অথবা অবৈধভাবে যদি কোনো সরকারি পদ দখল করে বসে থাকে, তাহলে উচ্চতর আদালত যে আদেশের মাধ্যমে উক্ত ব্যক্তিকে তার পদ দখলের বা দাবীর কারণ দর্শাও নির্দেশ দিয়ে থাকে তাকে কারণ দর্শাও রীট বলে।

Recent Post

ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯

১. ‘ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ ’ কবিতায় সালামের হাতে কেন অবিনাশী বর্ণমালা ঝরে ? ক. সংগ্রামী চেতনার কারণে     খ. দুঃখিনী মাতার অশ্রুজল দেখে গ. বরকত...

Most Popular Post