Ad-1

Showing posts with label প্রবন্ধ রচনা সকল শ্রেণি. Show all posts
Showing posts with label প্রবন্ধ রচনা সকল শ্রেণি. Show all posts

Wednesday, August 10, 2022

মহীয়সী বঙামাতার চেতনা , অদম্য বাংলাদেশের প্রেরণা

ভূমিকা:
"হে আমাদের মমতাময়ী বঙ্গমাতা
সর্বাধিক স্নেহময়ী মা,
যার স্নেহ গোলাপের মতো উপাদেয়
তুমি বঙের মা।"
-আল মামুন
বঙামাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এক বিস্ময়ের নাম তাঁর,নিজে না নিয়ে অন্যকে দেওয়ার ক্ষমতাই
ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার এক বিশাল খুঁটি, তিনি ছিলেন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রথম ফার্স্ট লেডি এবং মহান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও রাষ্ট্রপ্রধান) -এর স্ত্রী তাঁর জোগানো সাহস ও প্রেরণার ফলেই বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশকে স্বাধীনতা এনে দিতে সক্ষম হয়েছিল। তিনি তাঁর স্থান থেকে বঙ্গবন্ধুর পাশে না দাঁড়ালে হয়তো আজ বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারতো না। তাই, বাঙালি জাতির কাছে তিনি ‘বঙামাতা’ হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
"জাতির রক্তে প্রেরণার শিখা
জননী বঙামাতা
মমতাময়ী আজ দীপালোকে
তোমার আসন পাতা ”
জন্ম ও পরিচয়:
বঙামাতার জন্ম ১৯৩০ সালের ৮ই আগস্ট ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়া গ্রামের একটি বর্ধিষ্ণু কৃষক পরিবারে।তাঁর পিতার নাম শেখ জহুরুল হক। মাতার নাম হোসনে আরা বেগম।
তাঁর ডাকনাম ছিল রেণু।
“বঙামাতা,তুমি যে অসামান্যা
তোমার জন্ম না হলে,
হতো কিভাবে বাংলার জন্মটা?”

জীবনধারণ:
বঙ্গমাতা মাত্র তিন বছর বয়সে মাতা ও পাঁচ বছর বয়সে পিতাকে হারিয়ে এতিম হয়ে যান।এই সময় চাচি
বেগম সায়রা খাতুন ( বঙ্গবন্ধুর মা) তাঁকে ঘরে তুলে নেন।কোলে-পিঠে করে নিজ সন্তানদের সঙ্গে মানুষ
করেন।তাঁকে সুন্দর শিক্ষা-দীক্ষা ও গৃহকর্মে বড় করে তোলেন।ছোটবেলা থেকেই তাঁর লেখা-পড়ার প্রতি ছিল অদম্য আগ্রহ।সে সময় মেয়েদের ঘরের বাইরে বেরোবার নিয়ম না থাকায়,তিনি ঘরে বসেই লেখা-পড়া করেন। তিনি ছিলেন প্রতিভাসম্পন্ন, জ্ঞানী,বুদ্ধিদীপ্ত, দায়িত্ববান ও অসীম ধৈর্যশীল।
“হে বঙ্গজননী,
তুমি ছিলে অসামান্যা,অনন্যা
অনির্বাণ অগ্নিশীখা,”
বিবাহ:
১৯৩৮ সালে বঙামাতা চাচাতো ভাই শেখ মুজিবের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ৮বছর ও মুজিবের বয়স ছিল ১৮. 
দাম্পত্যজীবন:
দাম্পত্যজীবনে বঙ্গমাতা ছিলেন তিন পুত্র ও দুই কন্যার মাতা।তারা হলেন শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল,শেখ রেহানা ও বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।বঙ্গমাতা একাই নিজ হাতে সংসার সামলেছেন ও স্বামী শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ অনুযায়ী ছেলে-মেয়েদের মানুষ করেছেন। স্বামীর পড়াশোনা ও রাজনীতির কারণে অধিকাংশ সময়ই স্বামীর কাছ থেকে দূরে থাকতে হয়েছে।তাঁকে স্বামীর কর্মকাণ্ডে কখনো বাধা না হয়ে সাধ্যমতো অনুপ্রেরণা দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অফুরন্ত প্রেরণার উৎস হয়ে ছিলেন তিনি। সংসারের সমস্ত ভাবনা থেকে নির্ভার রেখেছিলেন বঙ্গবন্ধুকে যেন তিনি দেশের জন্য নিশ্চিন্তে কাজ করে যেতে পারেন। 
“ তুমি সাহস জুগিয়েছো
ঘরে-বাইরে
তোমার দোসর হাতের পেলব ছোয়ায়
তাইতো তিনি হতে পেরেছিলেন
বঙ্গবন্ধু
এক নিঃশঙ্ক বিপ্লবী অভিযানে”

বাংলার সংগ্রামজীবনের প্রেরণাদাত্রী:
Old testament-এ বর্ণিত-
A virtuous woman is a Crown to her husband."
এবং
"Behind every greatman, there is a woman."
ঠিক তেমনি জাতির পিতার সেই সংগ্রাম জীবনের মূল চালিকাশক্তি ছিলেন বঙ্গমাতা, বাংলাদেশের
স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতিটি স্তরে বঙ্গবন্ধুকে উৎসাহ ও প্রেরণা দিয়ে এগিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছেন।
সেইসঙ্গে তিনি বঙ্গবন্ধুকে গুরুত্বপূর্ণ দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন,একের পর এক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ সালের অসহযোগ আন্দোলন, ১৯৭১ সালের ৭ ই মার্চের ভাষণ ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ,বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের এই প্রতিটি ধাপেই বঙঙ্গবন্ধুর প্রেরণাদাত্রী হিসেবে কাজ করেছেন বঙমাতা।এছাড়াও,বঙ্গবন্ধু যখন জেলে কারাবন্দী ছিলেন,তখন বক্তাবন্ধুর দলের নেতা-কর্মীদের নানা খবরাখবর ও দিক-নির্দেশনা দিতেন এবং লড়াই, সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা
দিতেন তিনি যদি এই প্রেরণা না যোগাতেন, তাহলে হয়তো বাংলাদেশ আজ স্বাধীনতা অর্জন করতে পারতো না, পারতো না সার্বভৌমত্ব পেতে।
"কোনো কালেএকা হয়নিকো জয়ী পুরুষের তরবারি
প্রেরণা দিয়াছে, শক্তি দিয়াছে, বিজয় লক্ষী নারী,

বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ের উন্নয়নকারী:
“বিশ্বে যা কিছু আছে মহান সৃষ্টিচিরকল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর”
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে উন্নয়ন কাজ ত্বরান্বিত হওয়ার পেছনে বঙামাতার অবদান ছিল অবিস্মরণী।তাঁর যোগনো সাহসকে বুকে চাপিয়ে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের উন্নয়ন কাজ চালিয়ে গেছেন এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 
“আমার মা ছিল সবচেয়ে বড় গেরিলা যোদ্ধা,বাবার নেতৃত্বের পেছনে মূল চালিকা- -শক্তি ছিলেন আমার মা”
বঙ্গমাতা বাংলাদেশের নির্যাতিত নারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।তাদের সাহস ও প্রেরণা দিয়েছেন। স্বাধীন বাংলার উন্নয়নে কাজ করতেন। দেশের রাষ্ট্র প্রধান বা রাষ্ট্রপতির স্ত্রী হয়েও সর্বদা সাধারণ জীবন-যাপন করতেন। তাঁর সহ্যক্ষমতা, নিজে বঞ্চিত হয়েও হাসি- মুখে ত্যাগ করার ক্ষমতা বাঙালি জাতির প্রেরণা, এই প্রেরণা ধরে রেখে বাঙালিরা কাজ করলে বাংলাদেশ অদম্যভাবে বেড়ে উঠবে।
জীবনাবসান:
১৯৭১ সালের ১৫ই আগস্ট, একদল নিম্নপদস্থ সেনাসদস্যের হাতে বঙ্গমাতা সপরিবারে নিহত হন,
এরপরও বাঙালিরা তাঁকে ভুলে যায়নি। তাঁর অদম্য সাহসের স্বীকৃতি হিসেবে তাঁকে ‘বঙ্গমাতা’ উপাধিতে
ভূষিত করেন।
বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব
তুমি অনন্যা,অসাধারণ
তোমার স্বপ্নের এ বঙ্গে
আমরাও আছি-
ছিলাম তোমার সঙ্গে।
বাংলার অগ্রযাত্রার প্রেরণা:
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা
মুজিব হয়তো আমাদের সাথে নেই।কিন্তু তিনি যে প্রেরণা দিয়েছেন,চেতনা জাগিয়েছেন তার ভিত্তিতেই
তাঁর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এই চেতনা বুকে নিয়েই এই
দেশ এগিয়ে যাচ্ছে অদম্য গতিতে,এগিয়েও যাবে অদম্য গতিতে, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের চেতনাই হবে বাঙালি জাতির প্রেরণা,
তোমার চেতনা বুকে নিয়ে,
পেয়েছি স্বাধীনতা,
তোমার ভেতনা বুকে নিয়েই
চলবে বাঙালির দীর্ঘ......
পথচলা

উপসংহার:
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এক অমর নাম। বঙ্গবন্ধুর জীবনে তিনি যেমন আলোকবর্তিতা তেমনি এদেশের স্বাধীনতা ও দেশের মানুষের জন্য তাঁর অবদান অবিস্মরণীয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে বঙামাতার নাম ও চেতনা চিরভাস্বর হয়ে থাকবে।

 

Wednesday, May 30, 2018

মাতৃভাষায় শিক্ষা প্রদানের গুরুত্ব

মাতৃভাষায় শিক্ষা প্রদানের গুরুত্ব (রচনা)- পার্ট -০১


"শ্যামল মেঘের প্রসাদ আজ বর্ষিত হোক
ফলে শস্যে সুন্দর হোক
পুষ্পে পল্লবে মাতৃভাষার অপমান দূর হোক।"
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
ভূমিকা:
শিক্ষায় জাতির মেরুদণ্ডস্বরুপ।যে জাতির জীবনে শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটবে সে জাতির চিৎ প্রকর্ষ ও সর্বাঙ্গীন
প্রগতির তত বেশি উজ্জ্বল সম্ভাবনা।শিক্ষার বিস্তার যত বেশি,জাতীয় জীবনে প্রাগ্রসরতা সেখানে তত বেশি।শিক্ষাকে জাতীয় জীবনে ব্যাপকভাবে প্রসারিত করতে হলে সর্বাগ্রে প্রয়োজন মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষাদান পদ্ধতির প্রয়োগ।মাতৃভাষার মাধ্যমে ভাব প্রকাশের যেভাবে সুযোগ ঘটে,তা অন্য কোনভাবে সাধিত হতে পারে না।শিশু মনের বোধ শক্তি ও ধারণ শক্তিকে মাতৃভাষার মাধ্যমে যেভাবে জাগানো যায়,তা অন্য কোন বিদেশি ভাষা আংত্ত করা সম্ভব নয়।
মাতৃভাষা কী:
সাধারণ অর্থে মাতৃভাষা আক্ষরিক অর্থে মায়ের ভাষাকে বুঝায়য়।একটি বৃহত্তর অঞ্চলে একই সাথে বিভিন্ন ভাষা প্রচলিত থাকে।এর মধ্যে বেশির ভাগ মানুষ যে ভাষায় তার মনের ভাব প্রকাশ করে,সেটাই হলো সে অঞ্চলের মানুষের মাতৃভাষা।মাতৃভাষা মায়ের মুখের বুলি মাত্র নয়।মাতৃভাষা হলো একটি দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ভাষা,যা তারা স্বত:স্ফূর্তভাবে ব্যবহার করে।মাতৃভাষা বহতা নদীর মতো শতধারায় প্রবাহমান।বাঙালির মাতৃভাষা হলো বাংলা।বাংলা আমাদের প্রাণের স্পন্দন, বাংলা আমাদের বেচে থাকার অবলম্বন,বাংলা আমাদের অহংকার।তাই কবি অতুল প্রসাদ সেনের ভাষায়
"মোদের গরব মোদের আশা
আ,মরি বাংলা ভাষা।"
মাতৃভাষার গুরুত্ব:
মাতৃভাষা কেবল ভাবের বাহন নয়,শিক্ষারও বাহন।আর কোন দেশের মূল উন্নতির চাবিকাটি হল শিক্ষা।শিক্ষা ছাড়া কোন দেশর উন্নয়ন সম্ভব নয়।এ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে প্রতিটি দেশ এগিয়ে চলছে।বিশ্বের উন্নত দেশ গুলোর শিক্ষাব্যবস্থার দিকে তাকালে দেখা যাবে সেসব দেশের উন্নতি ও অগ্রগতির মূলে রয়েছে মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষা অর্জন।মাতৃভাষাকে তারা সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে তারা নিরক্ষরতা দূর করেছে, গড়ে তুলেছে জ্ঞান-বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে উন্নত,দক্ষ ও শিক্ষিত জনসমাজ।মাতৃভাষার মাধ্যমে তারা অবদান রাখছে জ্ঞান,বিজ্ঞানে,সাহিত্যে,সংস্কৃতিতে।নানা কারণে অন্য যে কোন ভাষার চেয়ে মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষার গুরুত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব সর্বজন স্বীকৃত।নিচে এর গুরুত্ব সম্পর্কে বিষদ ব্যাখ্যা দেওয়া হলো;
১. উপলব্ধি,ধারণা,মননের স্বাভাবিক সামর্থ্য গড়ে তুলে প্রথমত ও প্রধানত মাতৃভাষা।
২. মাতৃভাষা আয়ত্ত করা অন্ন যে কোন ভাষার চেয়ে সহজ।
৩. পরভাষার মাধ্যমে শিক্ষালাভে শিক্ষার্থীর দৈহিক ও মানসিক শক্তির যথেষ্ট অপচয় হয়।সে শিক্ষার সাথে জীবনের ঘনিষ্ঠ যোগও থাকে না।
৪. দেশ কালের সঙ্গে ইতিহাস ও ঐতিহ্য,শিক্ষা ও সংস্কৃতির যে যুগ রয়েছে তার সঙ্গে গভীর মেলবন্ধন রচনা করতে পারে মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষা প্রধান।
৫. স্বদেশের মাটি ও মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ,তাদের প্রতি দায়বদ্ধতার চেতনা গড়ে ওঠে মাতৃভাষার মাধ্যমে।
৬. দেশের ব্যাপক সংখ্যক মানুষকে পরভাষায় শিক্ষিক করা সম্ভব নয়।বিদেশি ভাষার শিক্ষার সুযোগ ও সামর্থ্য কেবল মুষ্টিমেয় বিত্তশালী ও মধ্যবিত্তের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে।
উল্লেখ্য বিষয়গুলো উপলব্ধি করতে পারলেই সবাই জ্ঞাত হবে মাতৃভাষা কেন গুরুত্বপূর্ণ।আজকের জাপান,জার্মানি, ফ্রান্সের কথাই ধরা যাক এসব দেশে জ্ঞান অর্জন করতে গেলে প্রথমেই সেসব দেশের ভাষা শিখতে হয়। তাহলে সে দেশের ভাষায় কি তারা সমৃদ্ধ নয়? তারা কি সেখানে বিজ্ঞানে পিছিয়ে রয়েছে? মোটেও না।তাই মাতৃভাষার গুরুত্ব অবশ্যই দেওয়া উচিত।

মা ও মাতৃভাষা:
মা আমাদের কাছে শ্রদ্ধার পাত্র বিপদের সাথী,দু:খে আশ্রয়স্থল।মাতৃগর্ভ হতে ভূমিষ্ট হয়ে মানুষ মায়ের কাছেই ভাষা আয়ত্ত করতে শেখে।জন্ম হতে যে ভাষা উচ্চারণ করে মনের ভাব প্রকাশ করে,তাই মাতৃভাষা।ড:মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন,
"মাতৃভাষা মাতৃস্তনের ন্যায়।"
জননীর স্তন্যদুগ্ধে মাতৃভাষার ভাব দোহন করে মানুষ মানসিক পুষ্ঠি লাভ করে। আজন্ম যে ভাষার সাথে তার পরিচয়, যে ভাষার মধ্য দিয়ে শিশু মাতা-পিতা,আত্মীয় পরিজনদের হৃদয় বৃত্তির অভিব্যক্তি উপলব্ধি করে সে ভাষাই তার অস্থি মজ্জার সাথে মিশে থাকে।মাতৃভাষার মাধ্যমেই আমরা নিজেদের জীবনকে, কৃষ্টিকে এবং চিন্তধারাকে প্রসারিত করতে পারি।হৃদয়ের গভীরতম প্রদেশের শতমুখী ভাবধারাকে আমরা পরিস্ফুট করতে পারি একমাত্র মাতৃভাষার সাহায্যেই।কবি নিধুবাবু তার কবিতায় লিখেন,
"নানান দেশের নানান ভাষা
বিনে স্বদেশী ভাষা,মিটে কি আশা?
নানা জলাশয়ের নানা নীর
বিনে ধারার জল মিটে কি চাতকীর?"

বিনে স্বদেশী ভাষা,মিটে কি আশা?
নানা জলাশয়ের নানা নীর
বিনে ধারার জল মিটে কি চাতকীর?"
বিনে স্বদেশী ভাষা,মিটে কি আশা?
নানা জলাশয়ের নানা নীর
বিনে ধারার জল মিটে কি চাতকীর?"
শিক্ষাদানে মাতৃভাষার উপযোগিতা:
মাতৃভাষার সঙ্গে শিশু মনের এক গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে।সেই সম্পর্ক পারিবারিক ও সামাজিক পরিবেশে লালিত হবার সুযোগ পায়।তাই মাতৃভাষার সাহায্যে স্বাভাবিক ও স্বত:স্ফূর্ত যে ভাবের আদান প্রদান ঘটে, তা হয়ে ওঠে সহজ ও অন্তরঙ্গ।এই অন্তরঙ্গতার পরিবেশে শিক্ষালাভ করলে শিক্ষাকে কৃত্রিম বলে মনে হয় না,বরং সহজ সরল ভাষা প্রয়োগের মধ্য দিয়ে আরম্ভ করে মাতৃভাষার মাধ্যমে পূর্ণজ্ঞান অল্প সময়ের মধ্যে শিশুমনে অধিগত হতে পারে।মাতৃভাষার সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক জন্মগত না হলেও মনের গভীরে যেন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মতোই আত্মলগ্নতার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়।একটা সহজাত প্রভৃত্তির মতোই তা মনের গভীরে স্থান লাভ করে।
মাতৃভাষা ও শিশু শিক্ষার পরিবেশ :
যথার্থ দৃষ্টিতে বিচার করলে দেখা যাবে যে,বাল্যশিক্ষার সঙ্গে মাতৃভাষার এতখানি নিবিড় যোগ থাকার ফলে শিক্ষার আলোক মনের দৃষ্টি উন্মুক্ত করে দেয়।জীবনকে ব্যবহারিক জগতের সঙ্গে সামঞ্জস্য লাভ করতে সহায়তা করে।
শিক্ষা ও জ্ঞান অর্জনে মাতৃভাষা:
মাতৃভাষা মানব জীবনের অমৃত রসায়ন।তাই আজ পৃথিবীর সকল সভ্য দেশে মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষা দীক্ষা,রাষ্ট্র পরিচালনার প্রচেষ্টা পরিলক্ষিত হচ্ছে। যে কোন দেশ পৃথিবীর অন্যান্য ভাষা শিক্ষা না করে শুধু মাতৃভাষা শিক্ষার মাধ্যমেও উন্নতির উচ্চ শিখরে আরোহণ করতে পারে।শিল্পে বাণিজ্যে জ্ঞান গরিমায় উন্নতির মূলেও আছে এ মাতৃভাষা।
মাতৃভাষার মাধ্যমে বহু দেশের বিশ্ববিদ্যালয় সমূহে শিক্ষা প্রদান করা হচ্ছে এবং সেসব দেশে সর্বক্ষেত্রে উন্নতি সাধিত হচ্ছে।মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণ সম্পর্কে আজ পৃথিবীর মনীষীবৃন্দ একমত।যাদের মনে দেশাত্মবোধ আছে,তাঁরা সকলেই মাতৃভাষাকে যথোচিত সম্মান প্রদর্শন করবে।

শিশু তার পারিপার্শ্বিক জগতে যা কিছু দেখে এবং অনুভব করে,তা তার নিজস্ব অভিজ্ঞতার আলোকে নিজের ভাষার মাধ্যমে প্রকাশ করার চেষ্টা করে। এভাবে মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষা সহজ হয়ে ওঠে শিশু মনের কাছে।রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন,"বাল্যকাল হইতে যদি ভাষা শিক্ষা হয় এবং ভাবের সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত জীবনযাত্রা নিয়মিত হইয়া থাকে,তবেই আমাদের সমস্ত জীবনের মধ্যে একটা যথার্থ সামঞ্জস্য স্থায়ী হইতে পারে,আমরা বেশ সহজ মানুষের মতো হইতে পারি।"

 

 

Sunday, March 25, 2018

মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা

সূচনা:
"তোমরা সৎপথে থেকো।মাতৃভূমিকে ভালোবেসো।তোমরা শুধু সামরিক বাহিনীকে নও,এটা আমাদের জনগণের বাহিনী।"- বঙ্গবন্ধু।
বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ অর্জন স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালে বাঙালির স্বাধীনতা আন্দোলনে সেনা,নৌ,বিমান বাহিনী সম্মিলিতভাবে হানাদার বাহিনীর ওপর আক্রমণ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে।সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের রক্ত বেসামরিক জনগণের রক্তের সাথে ১৯৭১ সালে এক নদীর এক স্রোতে মিশে গেছে।কেউ কোনোদিন আর পৃথক করতে পারবে না।তাদের আত্মত্যাগ অজর, অমর,অক্ষয়,অব্যয় হয়ে থাকবে মহাপ্রলয়ের শেষ রজনী পর্যন্ত।


বাংলাদেশে সশস্ত্র বাহিনী:
"জনগন শান্তিতে ও নিশ্চিন্তে নিদ্রা যাপন করে,কারণ তারা জানে দেশের সশস্ত্র বাহিনী তাদের পক্ষে লড়তে সদা প্রস্তুত।"
জর্জ অরওয়েল।

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী আমাদের গর্ব ও জাতীয়ঐক্যের প্রতীক।দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন,মুক্তিযুদ্ধোত্তর দেশ গঠন,প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা এবং জাতিসংঘ মিশনে সততা ও দক্ষতার সাথে সশস্ত্র বাহিনীর দায়িত্ব পালনের কারণে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল।মূলত সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীকে নিয়েই সশস্ত্র বাহিনী। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তাঁদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাঁদের আত্মত্যাগের ফলে আমরা আমাদের স্বাধীনতা পেয়েছি।অবশ্য বেসামরিক মানুষেরও অবদান কম নয়।সশস্ত্র বাহিনী দেশের প্রয়োজনে ও সকল সময় জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং ভবিষ্যতেও যে কোন সংকটে দেশের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্যও সদা প্রস্তুত।


মুক্তিযুদ্ধে বিমান বাহিনীর ভূমিকা:

"আল্লাহর পথে সীমান্ত পাহারা দেয়া দুনিয়া ও দুনিয়ার উপর যা কিছু আছে তার চাইতে উত্তম।"
সহিহ বুখারি ও মুসলিম।

বিমান বাহিনী আমাদের আকাশের সীমান্ত পাহারা দেয় এবং মুক্তিযুদ্ধে বিমান বাহিনীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী গঠিত হয়।ভারত সরকার বাংলাদেশকে মর্টার এয়ারক্রাফট, একটা ডাকোটা, ও দুটো হেলিকপ্টার প্রদান করে।এর ভিত্তিতে ১৯৭১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী পথচলা শুরু।দেরিতে পথচলা শুরু হলেও মুক্তিযুদ্ধে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছিল বিমান বাহিনী।মুক্তিযুদ্ধে ভারতের বিমান ও হেলিকপ্টারকে ব্যাপক সংস্কারের মাধ্যমে সামরিক যুদ্ধ বিমানে রূপান্তরিত করে পাক হানাদার বাহিনীর উপর অসংখ্য সফল আক্রমণে তাদের যুদ্ধ করার ক্ষমতা বহুলাংশে হ্রাস করে।পাকিস্তান যখন বাংলাদেশের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল তখন পশ্চিম পাকিস্তানে বিমান বাহিনীতে চাকরিরত অবস্থান বাংলাদেশকে বাঁচাতে বাংলাদেশের লোক এগিয়ে আসেন এবং ১১৩১ জন বীরযোদ্ধা নিয়মিতভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে বাহিনীকে করেছেন গর্বিত।তাঁদের মধ্যে একজন বীরশ্রেষ্ঠসহ
২২জন বীরযোদ্ধা মুক্তিযুদ্ধে সাহসী অবদানের জন্য বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খেতাবে ভূষিত হন।দেশমাতৃকার শ্রেষ্ঠ সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট ল্যাফটেনেন্ট মতিউর রহমান ১৯৭১ সালের ২০ আগস্ট পাকিস্তানের মশরুর বিমান ঘাঁটি থেকে একটি টি-৩৩ বিমান ছিনতাই করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের পরিকল্পনা করেন।কিন্তু বিমানটি পাকিস্তান - ভারত সীমান্তে বিধ্বস্ত হলে তিনি মতিউর রহমান শাহাদত বরণ করেন।নবগঠিত বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সদস্যগণ ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর মধ্যরাতে পাক-হানাদারদের উপর প্রথমে অটার বিমান এবং এ্যালুয়েট হেলিকপ্টারের মাধ্যমে আক্রমণ পরিচালনা করে।১৯৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এভাবে ৪৫টির অধিক বিমান অভিযান সাফল্যের সাথে পরিচালনা করা হয়।বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে চট্টগ্রামের ইস্টার্ণ রিফাইনারি তেল ডিপো,নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল তেল ডিপো, সিলেট,শ্রীমঙ্গল,কুমিল্লার দাউদকান্তি, নরসিংদী এবং ভৈরববাজারসহ বিভিন্ন এলাকার সফল অপারেশনের মাধ্যমে পাক হানাদার বাহিনীর বিপুল ক্ষতি সাধন করতে সক্ষম হয়।এর ফলে শত্রুর অপারেশনাল কার্যক্রমের ক্ষমতাসহ যুদ্ধ পরিচালনারর মনোবল হ্রাস পায় যা আমাদের মহান বিজয় অর্জনকে ত্বরান্বিত করে।তাদের এই সাহসী পদক্ষেপ বাংলার স্বাধীনতা যুদ্ধে যোগ করে নতুন মাত্রা।


মুক্তিযুদ্ধে সেনা বাহিনীর ভূমিকা :
"মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি,
একটি ফুলের জন্য মোরা অস্ত্র ধরি।"

১০-১৫ জুলাই ১৯৭১ অনুষ্ঠিত সেক্টর কমান্ডার ও উর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাদের সাথে সরকারের বৈঠক ও সম্মিলনের তৃতীয় দিন অর্থাৎ ১২জুলাই, একটি নিয়মিত বাহিনী বা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অংশগ্রহণকারী পাকিস্তান সেনাবাহিনী, ইপিআর ও পুলিশের বাঙালি সদস্যগণের সমন্বয়ে সেনাবাহিনী গঠিত হয়।সেনাবাহিনীর নিয়মিত ব্যাটালিয়নকে তিনচি ব্রিগেডে বিভক্ত করা হয়।সেনাবাহিনীর তির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মেজর জিয়াউর রহমান,মেজর সফিউল্লাহ ও মেজর খালেদ মোশাররফের নামের আদ্যক্ষর দিয়ে যথাক্রমে জেড ফোর্স,এস ফোর্স এবং কে ফোর্স নিয়ে ব্রিগেড ফোর্সগুলো গঠিত হয়।তাঁরা বেসামরিক মানুৃষকে অ
স্ত্র চালনা শিখিয়ে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করে এবং প্রত্যক্ষভাবেও অনেকে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

মুক্তিযুদ্ধে নৌবাহিনীর ভূমিকা:
"আমাদের সুবিশাল সমুদ্র এলাকা ও সামুদ্রিক সম্পদ রক্ষায় একটি সুপ্রশিক্ষিত ও শক্তিশালী নৌবাহিনী অত্যাবশ্যক। "
[বঙ্গবন্ধু, ১০ডিসেম্বর ১৯৭৪]

পাকিস্তান নৌবাহিনীর আট বাঙালি সদস্যের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের আগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে ২৩ এপ্রিল থেকে ৮ মে পর্যন্ত তাদেরকে বাংলাদেশ সরকার ভারতীয় নৌবাহিনীর সহায়তায় কমান্ডো ট্রেনিং প্রদান করে।পরবর্তিতে নৌকামান্ডোর সংখ্যা হয় ৫১৫ জনে।২ আগস্ট থেকে নৌকামান্ডোর গেরিলা হামলা শুরু এবং কমান্ডো বাহিনীই ১৫ আগস্ট 'অপারেশন জ্যাকপট'- পরিচালনা করেন।নৌকামান্ডো গঠনের মধ্য দিয়ে 'বাংলাদেশ নৌবাহিনী'- গঠনের প্রারম্ভিক প্রক্রিয়া শুরু হয়।২১ নভেম্বর ১৯৭১ বাংলাদেশ বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রতিষ্ঠা লাভ করে।


মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের ভূমিকা:
স্বাধীনতা অর্জনের জন্য প্রতিরোধের যুদ্ধক্ষেত্র থেকে প্রথম যে বুলেটটি পাকিস্তানীদের দিকে নিক্ষিপ্ত হয়েছিল তা ছিল রাজারবাগ পুলিশেরই।পাকিস্তানী হানাদার কর্তৃক রাজারবাগ ও ঢাকা আক্রান্ত হওয়ার সংবাদটি প্রথম রাজারবাগের ওয়্যারলেস বেইজ থেকেই সমগ্র বাংলাদেশ প্রচার করা হয়।ফলে ঢাকা আক্রান্ত হওয়ার সংবাদ জানতে পেরে বাংলাদেশের অধিকাংশ থানা ফাঁড়ির পুলিশ তাদের অস্ত্র ও গুলি সরিয়ে ফেলতে সমর্থ হয় যা পরবর্তিতে ব্যাপকহারে মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহান করা হয়েছিল।যুদ্ধ চলাকালে রাজারবাগের মুক্তিকামী পুলিশ সদস্যরা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে, অনেক জায়গায় সাধারণ জনগণকে অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেয়,তাদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য অনুপ্রাণিত, উদ্বুদ্ধ করে এবং নিজেরাও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে।।

সশস্ত্র বাহিনীর উপর অমানুষিক নির্যাতন :
কোন অভিযানে ধরা পড়া সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যের উপর চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন। তাদের নিষ্ঠুর ও লোমহর্ষক অত্যাচারের মধ্যে চোখ উপড়ে ফেলা, মাথায় আঘাত করে চূর্ণ-বিচূর্ণ করা,মুখ তেথলে দেওয়া,বেয়নেট ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে হৃৎপিন্ড উপড়ে ফেলা,আঙ্গুরে সূঁচ ফুটানো,নখ উপড়ে ফেলা,শরীরের চামড়া কেটে লবণ ও মরিচ দেওয়া ছিল খুবই সাধারণ ঘটনা,তবুও তাদের থেকে কোন তথ্য বের না হওয়ায় হত্যা করে নদী,জলাশয়ে,গর্তে ফেলে রাখত পাকিস্তানীরা।


উপসংহার:
"যুদ্ধ জয়ে ইচ্ছা ছাড়া যুদ্ধে যাওয়া ধ্বংসাত্মক। "
ডগলাস ম্যাকঅার্থার।

সত্যিই বাংলাদেশের সবাই স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিল বলেই আমরা এতো কম সময়ে মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করি।বাঙালিরা 'বীর বাঙালি অস্ত্র ধর,বাংলাদেশ স্বাধীন কর'- স্লোগানের মাধ্যমে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের দিকে চূড়ান্তভাবে অগ্রসর হয় এবং সফলও হয়।আজ আমাদের দায়িত্ব এক সমুদ্র রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশকে সুখী সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠা করা।

Tuesday, August 8, 2017

রচনাঃ টেলিভিশন


ভূমিকা :
 ‘টেলিভিশন’ এমনই এক জাদুর বাক্স, যা বর্তমান পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষের মধ্যে বিনোদনের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে। বেতার যন্ত্র ও চলচ্চিত্রের পর টেলিভিশনই হচ্ছে অত্যাশ্চর্য আবিষ্কার।
নামকরণ :
ল্যাটিন শব্দ ‘টেলি’ (ঞবষব) এবং ‘ভিসিও’ (ঠরংরড়) থেকে টেলিভিশন শব্দটি এসেছে। ‘টেলি’ শব্দের অর্থ দূরত্ব এবং ‘ভিসিও’ শব্দের অর্থ দেখা। অর্থাৎ যে যান্ত্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে দূরের কোনো দৃশ্যকে দেখতে পাওয়া যায়, তাকে টেলিভিশন বলে।
আবিষ্কার :
জার্মান বিজ্ঞানী পল নিপকও সর্বপ্রথম টেলিভিশন যন্ত্রের উদ্ভাবন সম্পর্কে তাঁর অভিমত ব্যক্ত করেন। এর ওপর ভিত্তি করে ১৯২৫ সালে ইংরেজ বিজ্ঞানী জন বেয়ার্ড টেলিভিশন আবিষ্কার করেন। বহু পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ১৯৪৫ সালে এ যন্ত্রটি পূর্ণরূপ লাভ করে।
সম্প্রচার :
সর্বপ্রথম ব্যবসায়িক ভিত্তিতে টেলিভিশন চালু করে লন্ডনের ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশন (বিবিসি)। আমাদের বাংলাদেশে টেলিভিশন চালু হয়েছে ১৯৬৫ সালে। প্রথমে ঢাকার ডিআইটি (রাজউক) ভবন থেকে টেলিভিশনের সম্প্রচার শুরু হয়। পরে চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুর, খুলনা ও ময়মনসিংহে উপকেন্দ্র স্থাপিত হওয়ায় সমগ্র বাংলাদেশ টেলিভিশন প্রচারের আওতায় এসেছে। ১৯৯৬ সালে চট্টগ্রামে পূর্ণাঙ্গ টেলিভিশন ভবন নির্মিত হয়েছে এবং সেখানে একটি পৃথক কেন্দ্র চালু হয়েছে।
টেলিভিশনের ব্যবহার :
টেলিভিশন প্রায় সব দেশেই ব্যাপকভাবে প্রচলিত। আমাদের দেশে টেলিভিশন মূলত খবর ও বিনোদনের মাধ্যম হিসেবেই কাজ করছে। স্যাটেলাইট টিভি ও ডিশ অ্যান্টেনার মাধ্যমে এ দেশের টিভি দর্শকরা বিনোদনের অনেক সুযোগ পাচ্ছে।
টেলিভিশনে শিক্ষা :
শিক্ষার্থীদের দিকনির্দেশনা, বিষয়ভিত্তিক দক্ষতা বৃদ্ধি, ভাষা শিক্ষা প্রভৃতি ক্ষেত্রে টেলিভিশন শিক্ষকের মতো ভূমিকা পালন করছে। দেশের আপামর জনগোষ্ঠীকে গণশিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় আনার ক্ষেত্রে টেলিভিশনের কার্যকারিতা অনেক।
জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম :
বর্তমান বিশ্বের প্রচারমাধ্যম হিসেবে টেলিভিশন বিশেষ স্থান করে নিয়েছে। তথ্যের পাশাপাশি ছবি ও সংলাপ সরাসরি প্রচার করে এটি। সারা বিশ্বের মানুষ বস্তুনিষ্ঠ ও নির্ভরযোগ্য সংবাদমাধ্যম হিসেবে এ যন্ত্রের ওপর ক্রমে নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে।
উপকারিতা :
 টেলিভিশন থেকে আমরা বহু উপকার পেয়ে থাকি। আমাদের কৃষিপ্রধান দেশে কৃষির মান উন্নয়নে টেলিভিশন রাখছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। দেশের জনগণকে সচেতন ও দায়িত্বশীল হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আমাদের টেলিভিশন এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে। জনসংখ্যা ও বেকার সমস্যা মোকাবেলা করায় টেলিভিশন বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে গণসচেতনতা সৃষ্টি করেছে। স্বাস্থ্য সম্পর্কেও প্রদান করছে বিশেষ জ্ঞান। দেশ-বিদেশের খবর প্রচার ছাড়াও সাংস্কৃতিক চেতনা বিকাশে যেমন—সংগীত, নৃত্য, আবৃত্তি, বিতর্ক, নাটক ইত্যাদিতে রাখছে অনন্য ভূমিকা।
অপকারিতা :
 সুষ্ঠু ও সুচারুভাবে যদি টেলিভিশনকে পরিচালিত না করা হয়, তাহলে পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে এর কুফল দেখা দেয়। কুরুচিপূর্ণ নাচ, গান, নাটক ইত্যাদি জনগণের নৈতিক চরিত্রের স্খলন ঘটায়। অতিরিক্ত টেলিভিশন দেখলে ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার যথেষ্ট ক্ষতি হয় এবং দৃষ্টিশক্তিরও অপচয় সাধিত হয়।
উপসংহার :
 বর্তমানে টেলিভিশন বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রচারমাধ্যম। তাই আমাদের টেলিভিশনের অনুষ্ঠানের মান আরো বাড়াতে হবে।

রচনাঃ শহীদ তিতুমীর

ভূমিকা :
 ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যাঁর নামটি জড়িত, তিনি হলেন সৈয়দ মীর নিসার আলী ওরফে তিতুমীর।
জন্ম পরিচয় :
 তিতুমীর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার বশিরহাট মহকুমার চাঁদপুর (মতান্তরে হায়দারপুর) গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৭৮২ সালে জন্মগ্রহণ করেন।
তিতুমীর নামকরণ :
 সৈয়দ মীর নিসার আলীর শিশুকালে একবার কঠিন অসুখ হয়। রোগ সারানোর জন্য তাঁকে দেওয়া হয় ভীষণ তেতো ওষুধ। সেই তেতো ওষুধ শিশুটি আনন্দের সঙ্গে ১০-১২ দিন খায়। এ জন্য ওর ডাকনাম রাখা হয় তেতো। তেতো থেকে তিতু। তার সঙ্গে মীর লাগিয়ে হলো তিতুমীর।
শিক্ষাজীবন :
তিতুমীর তাঁর গ্রামের মাদ্রাসায় পড়তেন। সেখানে পড়াকালে অল্প সময়েই তিনি ধর্ম শিক্ষক হাফেজ নেয়ামত উল্লাহর প্রিয় পাত্র হয়ে ওঠেন।
স্বদেশ চেতনা :
তিতুমীরের জন্মলগ্নে পরাধীন ভারতবর্ষে একদিকে ইংরেজ, অন্যদিকে দেশীয় জমিদাররা অত্যাচার চালাত। তিতুমীর ছোটবেলা থেকেই এসব দেখতেন আর অত্যাচারীদের হাত থেকে দেশের মানুষের মুক্তির উপায় খুঁজতেন।
শারীরিক শক্তি অর্জন :
 সেকালে গ্রামে গ্রামে ডন কুস্তি ও শরীরচর্চার ব্যায়াম হতো। শেখানো হতো মুষ্টিযুদ্ধ, লাঠিখেলা, তীর ছোড়া আর অসিচালনা। উদ্দেশ্য ছিল ইংরেজ তাড়ানোর জন্য গায়ে শক্তি সঞ্চয় করা। তিতুমীর একে একে সবই শিখে নেন।
অসাম্প্রদায়িক মনোভাব :
 তিতুমীর একবার ওস্তাদের সঙ্গে বিহার সফরে গিয়ে মানুষের দুরবস্থা দেখে মনে মনে দেশকে স্বাধীন করার চিন্তা করেন। তাই তিনি মুসলমানদের সত্যিকার মুসলমান হতে আর হিন্দুদের অত্যাচারী জমিদারদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে আহ্বান জানান। উভয় পক্ষই তাঁর আহ্বানে সাড়া দেয়।
মক্কা গমন :
মাত্র ৪০ বছর বয়সে ১৯২২ সালে তিতুমীর মক্কায় যান হজ পালন করতে। সেখানে পরিচয় ঘটে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব ধর্মপ্রাণ সংগ্রামী পুরুষ শাহ সৈয়দ আহমদ বেরলভীর সঙ্গে। তিতুমীর তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন।
স্বাধীনতার ঘোষণা :
 তিতুমীর দেশে ফিরে মুক্তিকামী জনসাধারণকে নিয়ে ঘোষণা দিলেন ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়তে, নীলকরদের রুখতে আর নিজেদের সংগঠিত হতে।
বাঁশের কেল্লা স্থাপন :
 তিতুমীর ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে প্রথম বাধা পান জমিদারদের কাছ থেকে। তখন তিনি নিজ গ্রাম ছেড়ে বারাসাতের নারিকেল বাড়িয়ায় গিয়ে একটি দুর্ভেদ্য বাঁশের দুর্গ নির্মাণ করেন, যার নাম নারিকেল বাড়িয়ার ‘বাঁশের কেল্লা’। তাঁর এ কেল্লায় সৈন্যসংখ্যা ছিল চার-পাঁচ হাজার। আর তাঁর দখলে ছিল চব্বিশ পরগনা, নদীয়া ও ফরিদপুর জেলা। ইংরেজদের কোনো কর্তৃত্বই ছিল না এসব অঞ্চলে।
ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধ :
 তিতুমীর তাঁর দুর্গে শিষ্যদের ইংরেজদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ কৌশল শিক্ষা দেন। এ খবর ইংরেজ শাসকদের কানে পৌঁছলে ১৮৩০ সালে তিতুমীরকে দমন করার জন্য ম্যাজিস্ট্রেট আলেকজান্ডারকে পাঠানো হয়। কিন্তু আলেকজান্ডার তাঁর সিপাহি বাহিনী নিয়ে পরাস্ত হন। ১৮৩১ সালের ১৯ নভেম্বর আবার সেনাপতি কর্নেল স্টুয়ার্ড বাঁশের কেল্লা আক্রমণ করেন। স্টুয়ার্ডের হাজার হাজার প্রশিক্ষিত সৈন্য আর গোলা-বারুদের বিরুদ্ধে মাত্র চার-পাঁচ হাজার সৈন্য নিয়ে পেরে উঠলেন না তিতুমীর। ইংরেজদের গোলার আঘাতে ছারখার হয়ে যায় তাঁর বাঁশের কেল্লা, আর প্রাণপণ যুদ্ধে শহীদ হলেন তিতুমীরসহ অসংখ্য মুক্তিকামী বীরসৈনিক।
উপসংহার :
 আজ থেকে প্রায় পৌনে ২০০ বছর আগে তিতুমীর পরাধীন ভারতবর্ষের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছিলেন। ইংরেজদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার যুদ্ধে বীর তিতুমীরই হলেন বাংলার প্রথম শহীদ।

Sunday, August 6, 2017

বীরের রক্তে প্রতিষ্ঠিত দেশ

সংকেত :[★ সূচনা ও যাদের রক্তে দেশ স্বাধীন হলাে ★ সিপাহি মােহাম্মদ মােস্তফা কামাল ★ হামিদুর রহমান
★ মুন্সি আবদুর রউফ ★ নুর মােহাম্মদ শেখ ও মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর ★ রুহুল আমিন ★ মতিউর রহমান।
★উপসংহারঃ]

সূচনা : ২৬শে মার্চ ১৯৭১ সাল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার স্বাধীনতা ঘােষণা করেন। ঐ
ঘােষণার পরই বাংলাদেশের মানুষ তখন সারাদেশ প্রতিরােধ গড়ে তােলে। অবশেষে ১৯৭১ সালের
১৬ই ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনীর অবরােধ থেকে আমরা মুক্ত হলাম। দেশ স্বাধীন হলাে।

যাদের রক্তে দেশ স্বাধীন হলাে : স্বাধীনতা আমরা লাভ করলাম ৩০ লাখ মানুষের প্রাণের বিনিময়ে।
এক সাগর রক্তের বিনিময়ে, বীরশ্রেষ্ঠ শহিদদের ত্যাগের বিনিময়ে।
সিপাহি মােহাম্মদ মােস্তফা কামাল :(মােস্তফা কামাল ১৯৪৭ সালের ১৬ই ডিসেম্বর ভােলা জেলার
দৌলতখান থানার হাজিপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম হাবিবুর রহমান ও মাতার নাম
মােসাম্মৎ মালেকা বেগম। তিনি ৮ নং সেক্টরের অধীনে যুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৭১ সালের ১৮ এপ্রিল
যশাের সীমান্তে সম্মুখ যুদ্ধে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অভিযান প্রতিহত করতে গিয়ে শহিদ
হন।

সিপাহি মােহাম্মদ হামিদুর রহমান : হামিদুর রহমান ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৩ সালে ঝিনাইদহ জেলার
মহেশপুর থানার খােরদা খালিশপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আক্কাস আলী ও মাতার
নাম কায়দাছুন্নেসা। তিনি ৪ নং সেক্টরের অধীনে মৌলভীবাজারস্থ কমলগঞ্জের ধলইতে যুদ্ধ করে।
পাকহানাদার বাহিনীর সাথে বীরত্বের সাথে লড়াই করে শাহাদাৎ বরণ করেন।

ল্যান্স নায়েক মুন্সি আব্দুর রউফ : মুন্সি আব্দুর রউফ ১৯৪৬ সালের ১লা মে ফরিদপুর জেলার
বােয়ালমারী থানার সালামতপুর গ্রামে জনুগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭১ সালের ২০ এপ্রিল রাঙামাটি ও
মহালছড়ির সংযােগ পথ বুড়িঘাট এলাকায় পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হন এবং শহিদ হন।

ল্যান্স নায়েক নূর মােহাম্মদ শেখ : নূর মােহাম্মদ শেখ ১৯৩৬ সালের ২৬শে এপ্রিল নড়াইল জেলার
সাহেবখােলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭১ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর ৮ নম্বর সেক্টরে স্থায়ী টহলে
নিয়ােজিত থাকার সময় পাকহানাদার বাহিনী কর্তৃক ত্রিমুখী আক্রমণের মুখে পড়েন। এবং সঙ্গীদের
বাঁচাতে গিয়ে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে করতে শাহাদাৎ বরণ করেন।।

ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর : মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ১৭৪৯ সালে বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ থানার
রহিমগঞ্জ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৪ই ডিসেম্বর পাকবাহিনীর সাথে যুদ্ধে তিনি শহিদ হন।

ইঞ্জিনরুম আর্টিফিশার রুহুল আমীন : রুহুল আমিনের জন্ম ১৯৩৪ সালে। তিনি মুক্তিযুদ্ধে নৌবাহিনির
জাহাজ বি এন এস পদ্মার স্কোয়াডন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ১০ ডিসেম্বর হানাদার বাহিনির বিমান হামলায় জাহাজের ইঞ্জিনে আগুন লেগে শাহাদাৎ বরণ করেন।
ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান : মতিউর রহমান ১৯৪১ সালের ১৯ই অক্টোবর নরসিংদী জেলার
রায়পুরা থানার রামনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পশ্চিম পাকিস্তানে কর্মরত অবস্থায় সুযােগ বুঝে
টি-৩৩ জঙ্গী বিমান ছিনিয়ে নেন এবং বাংলাদেশের পথে রওয়ানা দেন। কিন্তু সিন্ধু প্রদেশের মরু অঞ্চলে বিমানটি বিধ্বস্ত হলে তিনি শাহাদাৎ বরণ করেন।

Recent Post

ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯

১. ‘ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ ’ কবিতায় সালামের হাতে কেন অবিনাশী বর্ণমালা ঝরে ? ক. সংগ্রামী চেতনার কারণে     খ. দুঃখিনী মাতার অশ্রুজল দেখে গ. বরকত...

Most Popular Post