Ad-1

Showing posts with label জেনে রাখা ভালো. Show all posts
Showing posts with label জেনে রাখা ভালো. Show all posts

Tuesday, February 27, 2024

বাংলা ভাষার রক্ষক মুসলিমরা

হাজার বছর আগে বাঙ্গালি জাতির মুখের ভাষা ‘বাংলা’কে কেড়ে নিয়েছিলো দক্ষিণ ভারত থেকে আগত সেন রাজারা। সেন রাজাদের হিন্দু পণ্ডিতরা ফতওয়া জারি করেছিলো, “যারা বাংলা ভাষা বলবে ও শুনবে তারা ‘রৌরব’ নামক নরকে যাবে।” ঐ সময় তুর্কি বংশোদ্ভূত ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বখতিয়ার খিলজী নির্যাতিত বাঙালীদের মুক্ত করতে এগিয়ে আসেন এবং ১২০৪ সালে মাত্র ১৮ জন ঘোড়সওয়ারী নিয়ে সেন রাজাকে পরাজিত করে বাংলাকে স্বাধীন করেন। বক্তারা বলেন, ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বখতিয়ার খিলাজীর বাংলা বিজয়ের মাধ্যম দিয়ে সেইদিন শুধু ভূমির বিজয় হয়নি, সাথে মুক্ত হয়েছিলো বাঙ্গালীদের মুখের ভাষা ‘বাংলা’।

ভাষাবিদ দীনেশ চন্দ্র সেন বলেন, “মুসলমান সম্রাটগণ বর্তমান বঙ্গ-সাহিত্যের জন্মদাতা বললে অত্যুক্তি হয় না। বঙ্গ-সাহিত্য মুসলমানদেরই সৃষ্ট, বঙ্গ-ভাষা বাঙালি মুসলমানের মাতৃভাষা।” অধ্যাপক ও গবেষক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, “যদি বাংলায় মুসলিম বিজয় ত্বরান্বিত না হতো এবং এদেশে আরো কয়েক শতকের জন্য পূ্র্বের শাসন অব্যাহত থাকতো, তবে বাংলা ভাষা বিলুপ্ত হয়ে যেত এবং অবহেলিত ও বিস্মৃত-প্রায় হয়ে অতীতের গর্ভে নিমজ্জিত হতো।”

মধ্যযুগে মুসলিম শাসকদের রাজকীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলা ভাষার যে সাহিত্য চর্চা শুরু হয়, তার মাধ্যমে বাংলা ভাষা একটি পরিপূর্ণ ভাষা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার যোগ্যতা অর্জন করে।

বাংলা ভাষাকে কলুষিত করার চেষ্টা পরবর্তীতে যুগে যুগে আরো হয়। ১৮শ’ সনে ব্রিটিশরা কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করে বাংলা ভাষার আরবী ও ফারসী শব্দ বাদ দিয়ে সংস্কৃত শব্দ প্রবেশের উদ্দেশ্যে সাহিত্য চর্চা শুরু করে। তারা দেখাতে চায়, “বাংলা ভাষার সাথে মুসলমানদের কোন সম্পর্ক নেই”।

মুসলিমদের হেয় প্রতিপন্ন করতে প্রচার করা হয়, বাংলা ভাষায় প্রথম কুরআন শরীফ অনুবাদ নাকি গিরিশ চন্দ্র সেন করেছে। অথচ ১৮৮৬ সালে গিরিশ চন্দ্র সেনের অনুবাদের বহু পূর্বে ১৮০৮ সালে বাংলা ভাষায় কুরআন শরীফের আংশিক অনুবাদ করেন মাওলানা আমীরুদ্দীন বসুনিয়া। এরপর ১৮৩৬ সনে মৌলভী নাঈমুদ্দীন পূর্ণাঙ্গ কুরআন মাজীদের বাংলা অনুবাদ সম্পন্ন করেন। অথচ এ ইতিহাস প্রচার করা হয় না।


সুত্র: খন্দকার কামরুল হুদা, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও শেখ মুজিব, ১৯৯৫ পৃ. ৩২, বাংলাপিডিয়া

Tuesday, February 20, 2024

সুখী হওয়ার উপায়

আমরা ব্যক্তি,পরিবার, বন্ধু ও কর্মক্ষেত্র দ্বারা আক্রান্ত হই।তা থেকে........ 

★ মুক্তির উপায় :-----

১. শত্রুকে কাজে লাগানো।

২. সময় চূড়ান্তভাবে মেনে চলা।

৩. সঞ্চয় থাকতে হবে।

৪. কাজের মধ্যে কাজ করতে হবে।(Work in work)


★ সুখী হওয়ার উপায় :-----

১. নিজে না করে কাজ করা/কাজ না করে কাজ করা।

২. টেনশন বিক্রি। 

৩. Minimum investment maximum profit.

৪. খরচ না করে খরচ বাঁচানো।

৫. ভাগ্যের উপর বিশ্বাস। 

৬. পাপ থেকে বিরত থাকা।কথায় আছে,

     "পরিশ্রম ধন আনে,পূণ্য আনে সুখ"

৭. আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।

৮. প্রতিকারের উপায় না থাকলে সহ্য করতে হয়।


Monday, January 22, 2024

বই পড়ুয়াদের জন্য ৩০টি টিপস

১) বইপড়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে কঠিন কাজ হলো পড়ার জন্য বসা! অধিকাংশ মানুষের এই সুযোগটাই হয় না।

২)  পড়ার মজা বাড়ানোর একটি কার্যকরী উপায় হলো, বোরিং টপিকের বইগুলো আগে না পড়া।

৩)  একটি বই পড়লেই জীবন হয়ত পাল্টে যাবে না। কিন্তু প্রতিদিন বই পড়লে একদিন না একদিন জীবন পাল্টাবে ইনশাআল্লাহ।

৪) নতুন বইয়ের চাইতে সেসব বই বেশি পড়ুন, যেগুলো যুগ যুগ ধরে মানুষ পড়ছে।

৫) জীবনে আপনি কয়টা বই পড়েছেন, সেটা দেখার বিষয় না। দেখুন কয়টা বই আপনার ভিতরে রেখাপাত করতে পেরেছে।

৬) পড়ার সময় মনোযোগ থাকে না? মোবাইল অন্য রুমে রেখে আসুন। মনোযোগ আসতে বাধ্য।

৭) একটি ভালো বই যদি একবার পড়তে হয়, তাহলে সেরা বইগুলো বার বার পড়তে হবে।

৮) বই পড়া শুরু করতে চাইলে 'পড়ুয়া' হওয়া জরুরী না। বরং বই পড়তে পড়তেই একদিন আপনি পড়ুয়া হয়ে উঠবেন।

৯) পড়ার অভ্যাস হারিয়ে ফেলার চেয়ে একটা খারাপ বই ছেড়ে দেওয়া ভালো।

১০) কোনো বই যদি আপনার জীবনে সামান্য পরিবর্তনও এনে থাকে, তাহলে বছরে সেটা একবার হলেও পুনরায় পড়ুন।

১১) যে বই আপনার ভালো লাগেনি, সেটা নিজের কাছে না রেখে অন্যকে গিফট করে দেওয়া ভালো।

১২) বই পড়ার মোক্ষম সময় হলো, যখন আপনি মোবাইল নিয়ে পড়ে থাকেন।

১৩) সব পাঠককেই এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়, যখন সে বুঝে উঠতে পারে না তার জন্য কোন বইটি ভালো হবে।

১৪) ওপরের সমস্যাটার সমাধান হলো, সঙ্কোচ না করে বড়দের সহায়তা নেওয়া। তাহলে অনেক সময়, শ্রম দুটোই বেঁচে যাবে।

১৫) একটি সেরা বইয়ের বৈশিষ্ট্য হলো, আপনি চাইলেও সেটা দ্রুত পড়ে ফেলতে পারবেন না। কারণ, সে আপনাকে বার বার থামিয়ে দেবে, ভাবাবে।

১৬) বই পড়ার মূল উদ্দেশ্য হলো কাজে পরিণত করা। মুখস্থ নয়। সুতরাং তথ্য-উপাত্ত মনে রাখার বদলে কাজেকর্মে বাস্তবায়নে বেশি মনোযোগ দিন।

১৭) বই পড়ার অভ্যাস গড়তে চান? তাহলে প্রতিদিন ২ মিনিট করে পড়ার টার্গেট নিন। জি এত ছোট টার্গেট, যাতে আপনার মন অজুহাত দেখানোর সুযোগই না পায়।

১৮) একটি ভালো বইয়ের সারাংশ যে পড়ে, তার চাইতে ১০ গুণ বেশি উপকার পায় সেই ব্যক্তি, যে সারাংশটা লিখে। কাজেই বই পড়া শেষে সারাংশ লিখতে ভুলবেন না।

১৯) কোনো বই পড়ার পর যদি আপনার আচার-ব্যবহারে, চিন্তাভাবনায় পরিবর্তন না আসে, তাহলে বুঝে নিবেন হয় বইটি ভালো নয় অথবা আপনি কিছুই শিখতে পারেন নি।

২০) প্রচুর বই কিনলেই পাঠক হওয়া যায় না। কথা সত্য। তবে অল্প বই নিয়ম করে প্রতিদিন পড়লে একদিন ঠিকই ভালো পাঠক হয়ে যাবেন।

২১) বই কেনা মানে বিনিয়োগ করা, খরচ নয়। হতে পারে একটি ভালো বই ভবিষ্যতে আপনাকে লক্ষকোটি টাকা আয়ের রাস্তা দেখিয়ে দিচ্ছে।

২২) পড়ার জন্য মোটিভেশন নয়, বেশি দরকার পড়ার পরিবেশ তৈরি করা। একটা সাধারণ বই আপনি লাইব্রেরীতে বসে যত সহজে পড়ে ফেলতে পারবেন, একটি অসাধারণ বই কোলাহল পরিবেশে পড়া ততটাই কঠিন হবে, যদিও বইটা অসাধারণ।

২৩) যেখানেই যান, একটি বই সঙ্গে রাখুন। কারণ, আপনি জানেন না, কখন আপনি বই পড়ার জন্য বাড়তি সময় পেতে যাচ্ছেন।

২৪) একটি বইকে সর্বোচ্চ ৩বার সুযোগ দিতে পারেন (৩টি অধ্যায় পড়ার মাধ্যমে)। এরপরও যদি বইটি ভালো না লাগে, তাহলে অন্য বই ধরুন।

২৫) একজন লেখকের জন্য সবচেয়ে বড় প্রশংসার বিষয় হলো, যখন সে দেখে পাঠক তার বইটি দাগিয়ে দাগিয়ে পড়েছে, হাইলাইট করেছে, নোট টুকে রেখেছে।

২৬) ছোট বইকে কখনো তুচ্ছজ্ঞান করবেন না। কখনো কখনো ছোট মরীচে ঝাল বেশি হয়।

২৭) আপনার সমস্যা যদি অসংখ্য হয়, তাহলে বইও অসংখ্য পড়ুন। প্রত্যেক নতুন সমস্যারই নতুন বই আছে।

২৮) বই হলো শিক্ষা নেবার সবচেয়ে শর্টকাট রাস্তা। মাত্র ১০০ টাকা খরচ করে আপনি ১০০ দিনের শিক্ষা পেয়ে যেতে পারেন, কিংবা কয়েক বছরের!

২৯) অতীতের ফেলে আসা সময়গুলো যদি বই জন্য পড়ার ভালো সময় হয়ে থাকে, তাহলে আজকে থেকেই পড়া শুরু করলে সেটা হবে সর্বোত্তম সময়। 

৩০) একটি ভালো বইয়ের নাম ভুলে যেতে পারেন, বইয়ের আলোচনাও ভুলে যেতে পারেন। কিন্তু শিক্ষাটা আজীবন আপনার মনে গেঁথে থাকবে।

ধন্যবাদ জানাই সময় নিয়ে পুরোটা লিখা পড়ার জন্য।

Friday, January 19, 2024

জীবনকে কেমন করে কাটাবেন?

মাইকেল জ্যাকসন ১৫০ বছর বাঁচতে চেয়েছিলেন। কারো সাথে হাত মেলাবার সময় দস্তানা পরতেন, মুখে মাস্ক লাগাতেন।

নিজের দেখাশোনা করার জন্য বাড়িতে ১২ জন ডাক্তার নিযুক্ত করে ছিলেন,যারা তার মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত প্রতিদিন পরিক্ষা করতো। খাবার ল্যাবরেটরিতে পরিক্ষা করে খাওয়ানো হত। প্রতিদিন ব্যায়াম করানোর জন্য ১৫ জন লোক ছিল। মাইকেল জ্যাকসন ১৫০ বছর বেঁচে থাকার লক্ষ্যে এগিয়ে চলে ছিলেন। Oxygen যুক্ত বেডে ঘুমাতেন।

নিজের জন্য Organ Donar রেডি করে রেখেছিলেন। যাদের সমস্ত খরচ নিজে বহন করতেন,যাতে হঠাৎ দরকার পড়লেই তারা Kidney, Lungs, Eye etc organ মাইকেলকে দিতে পারে। পারলেন না হেরে গেলেন। মাত্র ৫০ বছরে জীবনে। 25th June 2009 সালে ওনার হৃৎপিণ্ড স্তব্ধ হয়ে গেল। নিজের ঘরে থাকা ১২ জন ডাক্তারের চেষ্টা কোনো কাজেই লাগলোনা।

Los Angeles, California র সমস্ত ডাক্তার একত্রে চেষ্টা করেও তাকে বাঁচাতে পারলেন না।

জীবনের শেষ ২৫ বছর ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া একপাও চলতেন না।

যে নিজেকে ১৫০ বছর বাঁচার স্বপ্ন দেখাতেন। তার স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল।

মাইকেল জ্যাকসনের অন্তিমযাত্রা 2.5 million লোক Live দেখেছিল,যেটা আজ পর্যন্ত সব থেকে বড় Live telecast ছিল। তার মৃত্যু দিন অর্থাৎ 25th June 2009, 3.15pm Wekipedia, Twitter, AOL's Instant messagenger বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। Google's এ 8 lakh লোক একসাথে মাইকেল জ্যাকসন সার্চ করে ছিল। অতিরিক্ত সার্চের জন্য Google traffic জ্যাম হয়ে গিয়েছিল, প্রায় আড়াই ঘণ্টা Google কাজ করেনি।

মৃত্যুকে চ্যালেঞ্জ জানাতে গিয়ে নিজেই চ্যালেঞ্জের কাছে হেরে গেলেন।

সাজানো পৃথিবীর,সাজানো জীবন স্বাভাবিক মৃত্যুর বদলে সাজানো মৃত্যুকেই আলিঙ্গন করে।এটাই নিয়ম।


(কিসের অহংকার, কিসের গর্ব,চারদিনের এই জীবনে একদিন শুন্য হাতে, খালি পায়ে পৌছে যাবেন মৃত্যুর কাছে  )

এবার একটু ভাবুন।

১. আমরা কি Builder, Engineer, Designer, Caterer, Decorator's দের জন্য রোজগার করে যাচ্ছি?

২. দামি বাড়ি,গাড়ি, বিলাসবহুল বিয়ে দেখিয়ে কাকে আমরা Impressed করছি?

৩. আপনার নিজের কি মনে আছে দুদিন আগে কারো বিয়েতে কি কি খেয়ে ছিলেন?

৪. জীবনের শুরু সময়ে কেন আমরা পশুর মত খেটে যাচ্ছি?

৫. আগামী কত Generation এর ‌জন্য খাওয়া দাওয়া, লালন পালনের ব্যবস্থা করে যাবো?

৬. আমাদের বেশিরভাগেরই 2টা করে সন্তান,কারো আবার একটা। আমাদের জীবনের প্রয়োজন কতটা আর কতটা পেতে চাই এটা কি ভেবেছেন?

৭. আপনার কি মনে হয় আপনার সন্তানেরা রোজকার করতে পারবনা,তাই তাদের জন্য অতিরিক্ত Savings করা কি এতই দরকার?

৮. আপনি কি সারা সপ্তাহে 1 দিনও নিজের পরিবার, বন্ধু বান্ধব,এমনকি নিজের জন্য খরচ করেন?

৯. আপনার মাসিক আয়ের 5% ও নিজের খুশি ও আনন্দের জন্য ব্যয় করেন?

১০. আমরা অর্থ উপার্জনের সাথেসাথে জীবনের আনন্দ কেন পাচ্ছিনা?


উত্তর হবে না না না!!!!!!!!!

ভাবতে ভাবতে হয়তো আগেই Slipp Disc, কোলস্টেরল, অনিদ্রা আপনার হার্ট ব্লক করে দেবে।

সারমর্ম

নিজের আনন্দের জন্য সময় দিন। আমরা কেউই কোনো সম্পত্তির মালিক নই, কেবল কিছু কাগজপত্রে অস্থায়ীরূপে আমাদের নাম লেখা থাকে।

যখন আমরা বলি "এই জায়গার মালিক আমি"

সৃস্টিকতা' তখন ব্যাঙ্গের হাসি হাসেন।

কারো সুন্দর গাড়ী,বাহারী পোশাক দেখে তার উপর বিচার করবেন না। 

ধনী হওয়া অপরাধ নয়, কেবল শুধুমাত্র অর্থের জন্যই ধনী হওয়া অপরাধ। জীবনকে Control করুন নাহলে জীবন একদিন আপনাকে Control করবে।"

সংগৃহীত -

Saturday, November 11, 2023

যেমন পাত্র তেমন শিক্ষা দেওয়া উচিত

জঙ্গলের রাজা বাঘ মশাই ঢাকঢোল পিটিয়ে জানিয়ে দিলো - "কোনো শিশুকে নিরক্ষর রাখা চলবে না।। সবার জন্য যথাযথ শিক্ষা সুনিশ্চিত করতে হবে।।" 

সব ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে হবে।। পড়াশুনা শেষ হলে,, সবাইকে সার্টিফিকেট দেওয়া হবে।। 

শুরু হলো সর্ব শিক্ষা অভিযান!!

হাতির বাচ্চা স্কুলে এলো।‌। বাঁদর,, মাছ,, কচ্ছপ,, বিড়াল,,উট ,, জিরাফ,, সবার বাচ্চা স্কুলে পৌঁছে গেলো।। 

শুরু হলো ধুমধাম করে পড়াশোনা।‌। 

"ফার্স্ট ইউনিট টেষ্ট" হলো।। হাতির বাচ্চা ফেল।। 

- "কোন সাবজেক্টে ফেল ??" হাতি এসে প্রশ্ন করে।‌। 

-- "গাছে ওঠা" সাবজেক্টে ফেল করেছে।।" 

হাতি পড়লো মহা চিন্তায়।। তার ছেলে ফেল ?? এটা কোনো ভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না।।

শুরু হলো খোঁজাখুঁজি,, ভালো টিউটর পেতেই হবে।। সন্তানের শিক্ষার ব্যাপারে কোনো রকম কম্প্রোমাইজ করা যাবে না।। 

হাতির এখন একটাই টেনশন,, যেভাবেই হোক,, ছেলেকে গাছে চড়া শেখাতে হবে !! "গাছে ওঠা' সাবজেক্টে টপার করে তুলতে হবে।। 

ফার্স্ট সেশন অতিক্রান্ত।। ফাইনাল রেজাল্ট আউট হলো।। দেখা গেলো - হাতি,, উট,, জিরাফ,, মাছ,, সবার বাচ্চা ফেল।। বাঁদরের বাচ্চা টপার হয়ে গেছে।। 

প্রকাশ্য মঞ্চে বিভিন্ন গেষ্টদের আমন্ত্রিত করে,, বিরাট অনুষ্ঠান আয়োজন করা হলো।। সেখানে টপার হিসাবে বাঁদরের বাচ্চার গলায় মেডেল পরিয়ে দেওয়া হলো।। 

চুড়ান্ত অপমানিত হয়ে হাতি,, উট,, জিরাফ,, নিজ নিজ সন্তানকে দারুণ পিটুনি দিলো।। এতো টিউশন,, এতো খরচ,, এর পরেও চূড়ান্ত অসম্মান!! 

তারা মেনে নিতে পারলো না।। 

-- "ফাঁকিবাজ,, এতো চেষ্টা করেও তোর দ্বারা গাছে চড়া সম্ভব হলো না ?? নিকম্মা কোথাকার।। শিখে নে, বাঁদরের বাচ্চার কাছে শিক্ষা নে,, কিভাবে গাছে চড়তে হয়।।" 

ফেল কিন্তু মাছের ছেলেও হয়ে গেছে।। সে আবার প্রত্যেক সাবজেক্টে ফেল,, কেবলমাত্র "সাঁতার" কাটা ছাড়া।। 

প্রিন্সিপাল বললো -- "আপনার সন্তানের এ্যটেন্ডেন্স প্রবলেম।। পাঁচ  মিনিটের বেশী ক্লাসে থাকতে পারে না।।" 

মাছ নিজের সন্তানের দিকে ক্রোধান্বিত হয়ে তাকিয়ে রইলো।। 

বাচ্চা বলে --" মা-গো,, দম নিতে পারি না,, ভীষণ কষ্ট হয়।। আমার জন্য জলের মধ্যে কোনো স্কুল দেখলে হতো না ??"

মাছ বলে -- "চুপ কর বেয়াদব।। এতো ভালো স্কুল আর কোথাও খুঁজে পাবি না।। পড়াশোনায় মন দে,, স্কুল নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না।।" 

হাতি,, উট,, জিরাফ,, নিজের নিজের ফেলিওর বাচ্চাকে পিটুনি দিতে দিতে বাড়ি ফিরে চলেছে।। পথিমধ্যে বুড়ো খেঁকশিয়ালের সঙ্গে দেখা।। 

শিয়াল বলে -- "কি হয়েছে সেটা তো বলো ??" 

হাতি বলে -- "এত বড়ো শরীর নিয়ে,, গাছে চড়তে পারলো না।। বাঁদরের ছেলে টপার হলো,, মান ইজ্জত কিছুই অবশিষ্ট থাকলো না।।" 

শিয়াল অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে।।

শিয়াল বলো -- "তোমাদের গাছে চড়ার কি প্রয়োজন সেটাই তো বুঝতে পারলাম না‌।। শোনো হাতি,, তুমি নিজের বিশালাকার শুঁড় উঠিয়ে ধরো,, গাছের সবচেয়ে বড়ো ফলটি পেড়ে ভক্ষণ করো।। তোমার গাছে ওঠা লাগবে না।।"

-- "উট ভাই,, তোমার অনেক উঁচু ঘাড় রয়েছে।। ঘাড় বাড়িয়ে দাও,, গাছের সর্বশ্রেষ্ঠ ফল,, পাতা পেড়ে খাও।।" 

-- "বোন মাছ,, তোমার সন্তানকে নদীর স্কুলে ভর্তি করে দাও।। ওকে মনভরে সাঁতার কাটতে শেখাও।। দেখবে,, একদিন তোমার ছেলে নদী অতিক্রম করে সমুদ্রে পাড়ি দেবে।। সাত সমুদ্র পার করে,, তোমার নাম উজ্জ্বল করে দেবো।। ওকে রাজার স্কুলে মোটেও পাঠিও না।। ও মারা যাবে।।" 

মনে রাখতে হবে,, *শিক্ষা আপনার সন্তানের জন্য,, শিক্ষার জন্য আপনার সন্তান নয়*

 প্রত্যেক শিশুর মধ্যেই কিছু না কিছু স্পেশালিটি আছে।

আমাদের দায়িত্ব হলো, সেটা খুঁজে বের করা। তাকে সঠিক পথ দেখিয়ে দেওয়া। তাহলেই দেখবেন,, সে নিজেই নিজের গন্তব্য খুঁজে নেবে।

[সংগৃহীত]

Sunday, September 24, 2023

__তুর্কীরা তাদের সন্তানদের "সিংহ-বাঘ" এর পরিবর্তে নেকড়ের সাথে তুলনা করে থাকে

কারণঃ-

১]>>>নেকড়েকে আরবিতে "ইবনে আল-বার" বলা হয় যার অর্থ "ভাল ছেলে" কারণ যখন তার বাবা-মা বৃদ্ধ হয়, তখন তারা তাদের জন্য শিকার করে এবং তাদের যত্ন নেয়। 

 ২]>>>নেকড়ে" কখন ও তার স্বাধীনতার সাথে আপোষ করে না এবং কারও দাস হয় না, যখন সিংহ সহ প্রতিটি প্রাণীকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বস করা যায়, কিন্তু নেকড়েকে করা যায়না ।

৩]>>>নেকড়ে কখনও মৃত খাবার খায় না এবং পুরুষ নেকড়ে মহিলা নেকড়ের দিকে তাকায় না। তারা এত বিশ্বস্ত যে পুরুষ নেকড়ে তার একমাত্র স্ত্রী নেকড়ে ব্যতিত অন্য কারো সাথে সম্পর্ক করেনা। এবং স্ত্রী নেকড়েও তার অংশীদার নেকড়ের অনুগত থাকে ।

Friday, June 9, 2023

বিখ্যাত মনীষীর উক্তি


 ★ একজন নারী যদি জানতো- পুরুষেরা তার দিকে কীভাবে তাকায় - তবে সে কাপড় দিয়ে নয় লোহা দিয়ে নিজের পোশাক তৈরী করতো...!!    -হযরত আলী (রা)

★ “অসৎ লোকের ধন দৌলত পৃথীবিতে সৃষ্ট জীবের বিপদ আপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।”
—- হযরত আলী (রঃ)

★ তুমি জান্নাত চেয়ো না বরং তুমি দুনিয়াতে এমন কাজ করো যেন জান্নাত তোমাকে চায়....
— হযরত আলী (রাঃ)

★ বিকাশের ক্ষেত্র না পেলে প্রতিভা ও শক্তি ক্রমশ ম্লান হয়ে বিনষ্ট হয়- শেখ সাদী

Friday, February 17, 2023

বিএড এর জন্য উপযোগী

1. LSBE = Life Skill Based Education. 

2. SRHR = Sex and Reproductive Health Right. 

3. HIV = Human Immunodeficiency Virus. 

4. AIDS = Acquired Immune Deficiency Syndrome. 

5. POSDCORD = Planning, Organizing, Staffing, Directing,Co-Ordinating,Reporting and Budgeting.

6. DSHE = Directorate of Secondary and Higher Education. 

7. EED= Education Engineering Department. 

8. TTC = Teachers Training College. 

9. NCTB = National Curriculum Textbook Board. 

10. NAEM = National Academy for Educational Management. 

11. HSTTI = Higher Secondary Teachers Training Institute. 

12. BMTTI = Bangladesh Madrasah Teachers Training Institute. 

13. BABBEIS = Bangladesh Bureau of Educational Information and Statistics. 

14. BISE = Board of Intermediate and Secondary Education. 

15. NTRCA = Non-Government Teachers Registration and Certification Authority. 

16. BPSC = Bangladesh Public Service Commission. 

17. NCTE = National Council Teachers Education. 

18. SMC = School Management Committee. 

19. PTA = Parents Teachers Association. 

20. CPD = Continuing Professional Development. 

21. PLC = Professional Learning Society. 

22. CPU = Central Processing Unit.

23. BIOS = Basic Input Output System. 

24. ISP Internet Service Provider.

25. URL =  Uniform Resource Locator.

26. http = hyper text transfer protocol. 

27. NDD = Neuro-developmental Disorder.

28. ILFE = Inclusive Learning Friendly Education.

29. APA = American Psychological System. 

30. MLA = Modern Language Association. 

31. FGD = Focus Group Discussion. 





Wednesday, June 1, 2022

'দর্জি' কিভাবে 'খলিফা' হলো?

খলিফা অর্থ প্রতিনিধি।আর একজন প্রতিনিধি তাই করেন এবং তাই বলেন যা তার মালিক বলেন বা করতে বলেন।তার একটু বেশিও নয় আবার কমও নয়।
তেমনিভাবে একজন দর্জি তাই করেন যা একজন ব্যক্তির কাছ থেকে পরিমাপ নেন।যেমনঃ আমি শার্ট সেলাতে গেলাম শার্টের কলারের মাপ আমি দেড় ইঞ্চি দিলে দর্জি দেড় ইঞ্চিই দেয়। এরচেয়ে বেশি দিলে বা কম দিলে সেটা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।
অনুরুপভাবে আল্লাহর খলিফারাও তাঁর হুকুমের কম বেশি করে না,সে জন্য তাদের খলিফা বলে।সে অর্থে খলিফা বা দর্জিও তার ক্লায়েন্টের হুকুমের বাইরে করে না বলে তাকে খলিফা বলে।

Sunday, March 27, 2022

ভালো লাগা বিখ্যাত উক্তি

★ Supervision is the touchstone of success.
★ The eyes are useless when the mind is blind.
★ একদিন সোনা লোহা কে  বললো…আমাদের দু'জনেকেই  লোহার হাতুড়ি মারা হয়, কিন্তু তুমি এতো চেঁচামেচি করো কেনো?? লোহা তখন বললো…নিজেকে যখন নিজের কেউ আঘাত করে! তখন  ব্যাথা অসহ্য লাগে😭
★ গ্রামীণ প্রবাদ-প্রবচন,
"টডি নডি ছ আনা
গায়ের জোরে ন আনা
বুদ্ধিয়ে হাজার
কপালে অপার।"

 প্রিয়তমা ওগো, যখনই রাখি ঠোঁট তোমার ঠোঁটে,
লুকায়িত অস্ত্র আমার সহসা কাঁপিয়া উঠে।। [ সংগৃহীত ]

Sunday, February 27, 2022

বাংলা সাহিত্য পঠনে সহায়ক হিন্দু ধর্মের মতানুসারে,,,

ব্রহ্ম মানে বিশাল,অণ্ড মানে - ডিম্ব।ব্রহ্মাণ্ড মানে বিশাকার ডিম্ব।

পৃথিবীর নিচে রয়েছে সপ্ত পাতাল লোক।প্রতি ১০ হাজার যোজন অন্তর রয়েছে এই পাতাল লোক।আর তা হলোঃ-

১. অতল
২. বিতল
৩. সুতল
৪. তলাতল
৫. মহাতল
৬. রসাতল
৭. পাতাল।
পরমেশ্বর হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণ।শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন অনাদি।অর্থাৎ তাঁর সৃষ্টিকর্তা কেউ নেই।তাঁর আগে কেউ বা কিছু নেই। তাঁকে নারায়ণ বলেন,কেউ গোবিন্দ বলেন।
তার নাভিপদ্ম থেকে ব্রহ্মার জন্ম হয়।ব্রহ্মার আবির্ভাবের পর মধু নামক এক অসুর আবির্ভূত হয়।
সেই মধু নামক অসুরকে ভগবান বিনষ্ট করলেন।সেজন্য ভগবানের একটি নাম হলো মধুসূদন। আর ভগবান মধুসূদন নিজের মুখ,বাহু,উরু ও পাদ থেকে একশত জন করে যথাক্রমে ব্রাহ্মণ,ক্ষত্রিয়,বৈশ্য ও শুদ্র উৎপন্ন করলেন।
জগৎ তিন ধরনের।
১. জড় জগৎ বা পৃথিবী 
২. বৈকুণ্ঠ জগৎ বা চিন্ময় জগৎ।
৩. ব্রহ্মাণ্ড জগৎ।

Tuesday, December 14, 2021

প্রশ্ন :ইউক্যালিপটাস গাছের ক্ষতিকারক দিকগুলাে কী কী?

উত্তর : ইউক্যালিপটাস Myrtaceae পরিবারের একটি গণের নাম, এটি মূলত একটি কাঠের গাছ যা প্রকৃতিগত ভাবে অস্ট্রেলিয়ায় পাওয়া যায়। ইউক্যালিপটাস গাছ'আশপাশের প্রায় ১০ ফুট এলাকার ও ভূগর্ভের প্রায় ৫০ ফুট নিচের পানি শােষণ করে। এই গাছের কাঠের গুণাগুণ তেমন ভালাে নয়। এর আশপাশে অন্য প্রজাতির গাছ জন্মাতে পারে না। এ গাছ মাটিকে শুষ্ক করে ফলে মাটির উর্বরতা কমে যায়। আর ইউক্যালিপটাস গাছ কেটে ফেললে মাটির উর্বরতা ফিরে আসতে দীর্ঘ সময় লাগে।

সূত্রঃ কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স,ডিসেম্বর ২০২১



Friday, December 10, 2021

লক্ষ, লক্ষ্য, উপলক্ষ্য-এর প্রয়োগঃ-

লক্ষ-এর আভিধানিক অর্থ খেয়াল করা, শত সহস্র সংখ্যা বা লাখ।

লক্ষ্য-এর অর্থ উদ্দেশ্য, তাক, কাম্য বস্তু বা বিষয়।

# আমার লক্ষ্য(উদ্দেশ্য) ছেলেটির প্রতি লক্ষ(খেয়াল) রেখে তার লক্ষ্য(উদ্দেশ্য) অর্জনে সহায়তা করা।

# ছেলের প্রতি লক্ষ(খেয়াল) রাখবে না-হলে লক্ষ(লাখ) টাকা দিয়ে কিছু হবে না।

# লক্ষ্য আর উপলক্ষ্য উভয় শব্দের অর্থ এক।

বিজয় দিবস উদযাপন লক্ষ্যে বা উপলক্ষ্যে কলেজে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।

Tuesday, July 13, 2021

নারীর শরীরের রুপ

সময়ে সময়ে নারীকে নিজের মতো করে এঁকেছে পুরুষ। ক্যানভাসে ফুটে উঠেছে নারী শরীরের অসংখ্য রূপ। তারই মধ্যে ৪টি শ্রেণি বেছে নিয়েছে পণ্ডিতবর্গ - পদ্মিনী, চিত্রিণী, শঙ্খিনী, হস্তিনী।

আমি - আপনি না। এই শ্রেণিবিন্যাস করে গেছেন স্বয়ং বাত্‍সায়ন। আর তার বর্ণনা করে গেছেন কবিরা যুগে যুগে। যেমন ধরুন কবি রায়গুণাকর ভারত চন্দ্র। নারী মন ও শরীরকে নিপুণভাবে এঁকেছেন তাঁর লেখায়। রমণীকুলের এই চারটি প্রকার তুলে ধরেছেন ছবির মতো করে।


তিনি লিখছেন- 'অতঃপর চারি জাতি বর্ণিব কামিনী। পদ্মিনী-চিত্রিণী আর শঙ্খিনী-হস্তিনী।'

পদ্মিনী
নামেই যেন লুকিয়ে আছে এই রমণীর রহস্য। চোখ পদ্মের মতো। কোঁকড়ানো চুল। স্তন গভীর। স্মিত হাসি। পদ্মিনী নারীদের নাকের ফুটো নাকি খুব ছোটো হয়। কথা বলে ধীরে সুস্থে-মিষ্টি গলায়। নাচে-গানে পারদর্শী। পদ্মিনী নারী সচরাচর সত্য কথাই বলে।

নয়নকমল, কুঞ্চিত কুন্তল, ঘন কুচস্থল, মৃদু হাসিনী।
ক্ষুদ্র রন্ধ্রনাসা, মৃদু মন্দ ভাষা , নৃত্য গীতে আশা সত্যবাদিনী।
দেবদ্বিজে ভক্তি, পতি অনুরক্তি, অল্প রতিভক্তি, নিদ্রাভোগিনী।
সুললিত কায়, লোম নাহি হয়, পদ্মগন্ধ কয়, সেই পদ্মিনী।
(রায়গুণাকর ভারত চন্দ্র)

অর্থাত্‍ ভারত চন্দ্র বলছেন - পদ্মিনী নারীর শরীর হয় আকর্ষণীয়। এরা ভক্তিমতীও বটে। ঠাকুর দেবতার পূজাপাঠ নিয়ে বেশ মগ্ন থাকতে ভালোবাসে। স্বামীর প্রতি অনুরক্ত হয়। শরীর হয় সুললিত, এককথায় সুন্দর। অতিরিক্ত যৌনতা এদের পছন্দ নয়। বরং বেশি ঘুমোতে পছন্দ করে পদ্মিনী নারীরা। শরীরে লোমের আধিক্য কম। শরীরের গোপনে পদ্মগন্ধের ঘ্রাণ মেলে। এই রমণীদের রমণীকুলের মধ্যে সর্বোত্তম ধরা হয়।


চিত্রিণী
না দীর্ঘ, না হ্রস্ব- প্রমাণ শরীরের অধিকারিণী হয় চিত্রিণী নারীরা। ধীরস্থির। যে কোনও কাজে অস্থিরতা দেখা যায় না এদের মধ্যে। নাভি হয় সুগভীর। মুখে একচিলতে মিষ্টি হাসি লেগে থাকে। স্তন হয় দৃঢ়। চুল মসৃণ, ঝলমলে। খাওয়া ও ঘুমোনোর ব্যাপারে এঁরা মধ্যচারিণী। ধীরেসুস্থে চলাফেরা করে চিত্রিণী নারীরা। শরীর হয় নরম। শরীরে লোম প্রায় থাকে না বললেই চলে। শরীরের গোপনাংশ থেকে ক্ষারের গন্ধ মেলে। পরপুরুষের প্রতি এদের আকর্ষণ থাকে না।


প্রমাণ শরীর, সর্ব্বকর্ম্মে স্থির, নাভি সুগভীর মৃদুহাসিনী।
সুকঠিন স্তন, চিকুর চিকণ, শয়ন ভোজন মধ্যচারিণী।
তিন রেখাযুত, কণ্ঠ বিভূষিত, হাস্য অবিরত মন্দগামিনী।
কমনীয় কায়, অল্প লোম হয়, ক্ষারগন্ধ কয় সেই চিত্রিণী।
(রায়গুণাকর ভারত চন্দ্র)


শঙ্খিনী
নারী হয় দীর্ঘশরীরের। কান বড়ো, চোখ বড়ো, হাত-পা বড়ো। শরীরে লোম থাকে কম। গোপনাঙ্গের গন্ধ আঁশটে। চঞ্চল গতি। মধ্যম প্রকৃতির নারী শঙ্খিনী।


ভারতচন্দ্র লিখছেন-
দীঘল শ্রবণ, দীঘল নয়ন, দীঘল চরণ, দীঘল পাণি।
সুদীঘল কায়, অল্প লোম হয়, মীনগন্ধ কয়, শঙ্খিনী জানি।


হস্তিনী
স্থুলদেহ অর্থাত্‍ সাধারণত ভারী শরীরের অধিকারিণী হয় হস্তিনী নারী। স্তন হয় ভারী। গলার আওয়াজ হয় তীব্র। প্রচুর খেতে ভালোবাসে, ঘুমোতে ভালোবাসে। পরকীয়া সম্পর্কে নাকি আসক্ত হয় হস্তিনী নারী। ধর্মে-কর্মে মত থাকে না। মিথ্যা কথা বলতে নাকি পটু হয় হস্তিনী নারী। শরীরে প্রচুর লোম থাকতে পারে। গোপনাঙ্গ থেকে মদগন্ধ মেলে।


স্থুল কলেবর, স্থুল পয়োধর, স্থুল পদকর ঘোরনাদিনী।
আহার বিস্তর, নিদ্রা ঘোরতর, বিহারে প্রখর পরগামিনী।
ধর্ম্ম নাহি ডর, দন্ত ঘোরতর, কর্ম্মেতে তত্‍পর মিথ্যাবাদিনী।
সুপ্রশস্ত কায়, বহু লোম হয়, মদ গন্ধ কয় সেই হস্তিনী।
(রায়গুণাকর ভারত চন্দ্র)


এই হল রমণীকুলের চারপ্রকার। শরীরের বিবরণে নারীকে চেনা। (তাও সম্ভব ?) নেহাত গুরুজনে বলে গেছেন, তাই তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা ঠিক নয়। কিন্তু, তাই বলে ৩৫০ কোটি নারীকে ৪ ভাগে ভাগ করা ? সে কি চাট্টিখানি কথা ? সদ্য দাড়ি গজানো ক্লাস নাইন-টেনের ছেলেরাও বলে দেবে এ সম্পাদ্য ভুল। কবি বলবে -


'বেদনা-মাধুর্যে গড়া তোমার শরীর
অনুভবে মনে হয় এখনও চিনি না
তুমিই প্রতীক বুঝি এই পৃথিবীর
আবার কখনও ভাবি অপার্থিব কি না।'


Monday, February 15, 2021

আল মাহমুদের সঙ্গে সামান্য তামাশা!


কবি শহীদ কাদরি বাথরুমে বেশ লম্বা সময় কাটাতেন। এটা ছিল তার অভ্যাস। তাই তিনি কমোডের পাশে একটা ছোট্ট টেবিলে নানারকম বইপত্র জমা করে রেখে ওই সময়টাতে পড়তেন। 


আল মাহমুদের প্রথম বই 'লোক লোকান্তর' সদ্য বেরিয়েছে তখন। প্রথম বই নিয়ে অন্য সবার মতো আল মাহমুদের মনেও একটা চাপা উত্তেজনা কাজ করতো। তিনি বইয়ের একটা কপি শহীদ কাদরিকে দিয়েছিলেন পড়ে মন্তব্য করবার জন্য। বাথরুমে বসে শহীদ কাদরি তখন লোক লোকান্তর বইয়ের পাতা উল্টাচ্ছেন।


এমন সময় বাসায় আল মাহমুদ এসে হাজির। তিনি বেশ উত্তেজিত গলায় ডাক দিলেন: 'শহীদ, কই তুই দোস্ত?'

শহীদ কাদরি কথা দিয়ে রেখেছিলেন বাসায় এলে বইটা নিয়ে তিনি আল মাহমুদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। 

বাথরুম থেকেই গলা চড়িয়ে শহীদ কাদরি আল মাহমুদকে বললেন, 'তোর ল্যাখা পইড়া ফালাইছি দোস্ত! যা ল্যাখছোস না, বাংলা সাহিত্যে বহুৎ দিন এরকম কবিতা হয় নাই।'


নিজের কবিতা নিয়ে আল মাহমুদের ভেতর বরাবরই একটা উত্তেজনা ছিল। সুযোগ পেয়ে শহীদ কাদরি সেটা নিয়ে মজা করতে চান।


'কস কী?' লাফিয়ে উঠলেন আল মাহমুদ। 

শহীদ কাদরি টের পেলেন আল মাহমুদ ঘরের এপাশ থেকে ওপাশে উত্তেজিতভাবে হাঁটাহাঁটি করছেন। শহীদ প্রশংসার মাত্রা আরেকটু বাড়িয়ে দিলেন।

'তোর কবিতা পইড়া পাগল হইয়া গেছি দোস্ত। পড়তে পড়তে ব্যাবাক কবিতা মুখস্তই কইরা ফালাইছি।'

আল মাহমুদ উত্তেজিতকণ্ঠে বলে উঠলেন, 'কস কী দোস্ত!'

'বিস্বাস করলি না? তুই চাইলে বইয়ের পরথম থেইকা শ্যাষ পর্যন্ত মুখস্ত সুনাইবার পারি।'

'শুনা দেখি!'

আল মাহমুদের গলায় সন্দেহপূর্ণ অবিশ্বাস। 

'সত্যি সুনবি?'

'শুনা না!'

'তাইলে সুন।'


শহীদ কাদরি 'লোক লোকান্তর' বইটা হাতে নিয়ে একের পর এক কবিতা আবৃত্তি করে যেতে লাগলেন। আনন্দে উত্তেজনায় আল মাহমুদের অবস্থা প্রায় পাগলের মতো। তিনি সারা ঘরে দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। আল মাহমুদের উত্তেজনা যখন তুঙ্গে ঠিক সেই সময় বাথরুমের দরজা খুলে বেরিয়ে এলেন শহীদ কাদরি, হাতে 'লোক লোকান্তর'। আল মাহমুদের মুখের ওপর বই বাড়িয়ে ধরে বললেন, 'এই দ্যাখ সালা!'

বই দেখে আল মাহমুদের চোখ শাদা হয়ে গেল।

'বুঝছস অহন?'

শহীদ কাদরির ঠোটে প্রাণঘাতী হাসি।

শাদাসিধা সরল আল মাহমুদ মুহুর্তে করুণ হয়ে গেলেন। বিষণ্নমুখে বললেন, 'আমার সঙ্গে এইরকম তামাশা করলি দোস্ত?'


কবির প্রতি শ্রদ্ধা রইল। আল্লাহ কবিকে জান্নাত নসীব করুন। আমীন।


তথ্যসূত্র:

ভালোবাসার সাম্পান- আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ

মাওলা ব্রাদার্স, তৃতীয় মুদ্রণ (১৩৪-১৩৫ পৃ.)

ছবিতে তিন কিংবদন্তি কবি বন্ধু।

Tuesday, December 1, 2020

ঋণদাতার টেনশন

মোল্লা নাসিরের গল্প থেকে::
মোল্লা নাসির রাতে ঘরের এ পাশ থেকে ও পাশ পায়চারি করছে আর করছে।স্ত্রী জিজ্ঞেস করে: কী,আজ তুমি খুব টেনশনে আছ?
নাসির: হ্যাঁ,আগামিকাল আমার পাওনাদারকে টাকা দেওয়ার কথা। কিন্তু টাকা তো জোগাড় করতে পারিনি।
স্ত্রী: তাহলে এত পায়চারি না করে কাল ওনাকে গিয়ে বলো আগামিকাল দিতে পারব না, পরে দেব।
মোল্লা নাসির স্ত্রীর কথা মতো পাওনাদারকে তা বলে আসল।
স্ত্রী: কী??  বলেছ??  ওনাকে পরে দিবা??
নাসির: হ্যাঁ,বলেছি।
স্ত্রী: তো কী বললেন?
নাসির: কিছুই বলেনি।তবে আসার সময় দেখলাম ওর পায়চারি আমার চেয়ে আরও বেশি বেড়ে গেছে।
বি:দ্র: আমার অবস্থা এখন অনেকটা পাওনাদারের মতোই।
এমন কি কেউ আছেন???যে টাকা ধার দিয়ে কমপক্ষে দশ টাকা মোবাইল বিল দিতে হয়নি???

Saturday, January 25, 2020

জয়ন্তী সংক্রান্ত বাক্য সংকোচন

Every 25 years = Silver Jubilee --- রজত জয়ন্তী।
Every 50 years = Golden jubilee --- সুবর্ণজয়ন্তী / স্বর্ণ জয়ন্তী ।
Every 60 years = Diamond Jubilee --- হীরক জয়ন্তী।
Every 75 years = Platinum Jubilee --- প্লাটিনাম জয়ন্তী।
Every 100 years = Centenary jubilee--- শতবার্ষিকী পূর্তি।
Century --- শতাব্দী।
Centennial -- শতবার্ষিকী।
Every 150 years = Sesquicentennial celebration---সার্ধশত বাষির্কী
Every 175 years = Dodransbicentennial / Dodransbicentennial celebration---
বিঃদ্রঃ
Dodrans is a Latin contraction of de-quadrans which means "a whole unit less a quarter" (de means "from"; quadrans means "quarter"). 175 years is a quarter century less than the next whole (bi)century or 175 = (−25 + 200).
Every 200 years = Bicentenary/ Bicentennial celebration--- দ্বিশতবার্ষিকী।
Every 300 years = tercentennial / tercentenary celebration---ত্রিশতবার্ষিকী।
Every 400 years = Quatercentenary / Quatricentennial celebration---চারশত বছর পূর্তি।
Every 500 years = Quincentenary / Quincentennial celebration----পঞ্চশতবার্ষিকী ।
Every 600 years = Sexcentenary / sexcentennial celebration---৬০০ বছর পূর্তি।
Every 700 years = Septcentennial ---৭০০ বছর পূর্তি।
Every 800 years = Octocentenary ---৮০০ বছর পূর্তি।
Every 900 years = Nonacentennial ---৯০০ বছর পূর্তি।
Every 1000 years = Millennial ---১০০০ বছর পূর্তি।
( যদি টাইপিং মিস্টেক হয়, ক্ষমা প্রার্থী)
......To be continued
Wʀɪᴛᴛᴇɴ & Eᴅɪᴛᴇᴅ Bʏ : S M Shamim Ahmed

Saturday, January 4, 2020

“টমাস আলভা এডিসন"



পিতৃহারা ৭-৮ বছর বয়সের ছেলেটি স্কুল হতে বাড়ীতে এসে মাকে বলল,
"মা, প্রিন্সিপাল আমাকে আদর করে কিছু ক্যান্ডি দিয়েছে। আর,তােমার জন্য এই চিঠিটা।"
মা চিঠিখানা খুলে পড়ে কেঁদে ফেললেন।
মায়ের চোখে জল দেখে ছেলেটি বলল, "মা,
কাঁদছ কেনাে?"
চোখ মুছতে মুছতে মা বললেন, 'বাবা, এটা আনন্দের কান্না!"বলেই ছেলেটিকে চুমু দিয়ে বললেন, "আমার জিনিয়াস বাবা, তােকে চিঠিটা পড়ে শােনাই।"
মা আনন্দের সাথে চিৎকার করে স্যারের লেখার ভাষা বদলে নিজের মত করে পড়তে লাগলেন, "ম্যাম,
আপনার ছেলেটি সাংঘাতিক জিনিয়াস।আমাদের ছােট্ট শহরে ওকে শিক্ষা দেওয়ার মত শিক্ষক আমাদের নেই।তাই, যদি পারেন আপনার ছেলেকে বড় শহরে কোনাে স্কুলে ভর্তি করে দিলে ভালাে হয়। এই ছেলেটি একদিন বিশ্বে প্রচুর সুনাম অর্জন করবে।"
পত্রখানা পড়েই মা, ছেলেটিকে চুমু দিয়ে বললেন, "এই জিনিয়াস ছেলেটিকে আমি নিজেই পড়াব।"
মা নিজেই শিক্ষা দিয়ে ছেলেটিকে যুক্তরাষ্ট্রের তথা সমগ্র পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক বানালেন।
"টমাস আলভা এডিসন"
বৈদ্যুতিক বাল্ব, শব্দ রেকর্ডিং, মুভি ক্যামেরা বা চলমান ছবি ইত্যাদি সহ হাজারাে আবিষ্কার তাঁর।
মায়ের মৃত্যুর পর টমাস এডিসন একদিন সেই ছােট্ট গ্রামে মায়ের সেই ছােট্ট বাড়ীতে গিয়ে ঘর পরিষ্কারের সময় স্কুলের প্রিন্সিপ্যালের দেয়া চিঠিটা পেল। চিঠিখানা পড়ে টমাস কেঁদে দিল।
তাতে লেখা ছিল,
"ম্যাডাম,আপনার ছেলে টমাস এডিসন একজন মেন্টালি রিটার্ডেড।সে এতটাই নির্বোধ যে, তাকে শিক্ষা দেওয়ার মত ক্ষমতা আমাদের নেই।
কার'ও আছে বলেও আমাদের জানা নেই। আপনার ছেলের কারণে আমাদের স্কলটির সুনাম ক্ষুন্ন হবে।তাই কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আপনার ছেলেকে স্কুল থেকে ঙংস্থায়ীভাবে বহিস্কার করা হল।"
শিক্ষনীয়ঃ-
সন্তানের সাথে সর্বদাই পজিটিভ আচরন করবেন। বাসস্থান হল সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং মা হলেন সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক।
(Collected)

Thursday, October 31, 2019

ফজিলাতুন্নেসা জোহা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী।।।

১৯৫৬ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে ছিলো, একটা ছেলে যদি একজন মেয়ের সাথে কথা বলতে চায়, তবে তাকে প্রক্টর বরাবর দরখাস্ত দিতে হবে। শুধুমাত্র প্রক্টর অনুমতি দিলেই সে কথা বলতে পারবে। এছাড়া নয়। এমনকি তার ক্লাসের কোন মেয়ের সাথেও না।

ডিসেম্বর ১৯২৭, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাত্র ৬ বছর পর। একদিন কোলকাতা থেকে একজন যুবক এলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে দেখবেন। কয়েকজন বন্ধু বান্ধব নিয়ে সে ঘুরতে বের হলো। তখন কার্জন হল ছিলো বিজ্ঞান ভবন। ঘুরতে ঘুরতে যখন কার্জন হলের সামনে এসে পড়লো তারা, সে যুবক দেখলো দূরে একটা থ্রী কোয়ার্টার হাতার ব্লাউজ আর সুতির শাড়ি পরা এক মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সে তার বন্ধুদের জিজ্ঞেস করলেন, এই মেয়েটি কে? তখন তার বন্ধুরা বলল, এ হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলিম নারী ছাত্রী। তখন সেই যুবক বলে, সত্যি? আমি এই মেয়ের সাথে কথা বলব। তখন সে যুবক মেয়েটির সাথে কথা বলার জন্য একটু এগিয়ে গেলে তার বন্ধুরা তাকে বাঁধা দেয়। বলে, না তুমি যেওনা। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের সাথে কথা বলার অনুমতি নেই। তুমি যদি ওর সাথে অনুমতি ছাড়া কথা বলো তবে তোমার শাস্তি হবে। সেই যুবক বলল, "আমি মানি নাকো কোন বাঁধা, মানি নাকো কোন আইন।"সেই যুবক হেঁটে হেঁটে গিয়ে সেই মেয়েটির সামনে দাঁড়ালো। তারপর তাকে বলল, আমি শুনেছি আপনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলিম নারী ছাত্রী। কি নাম আপনার? মেয়েটি মাথা নিচু করে বলল, ফজিলাতুন্নেছা। জিজ্ঞাসা করলো, কোন সাবজেক্টে পড়েন? বলল, গণিতে। গ্রামের বাড়ি কোথায়? #টাঙ্গাইলের_করটিয়া। ঢাকায় থাকছেন কোথায়? সিদ্দিকবাজার। এবার যুবক বললেন, আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলিম নারী ছাত্রী, আপনার সাথে কথা বলে আমি খুব আপ্লুত হয়েছি। আজই সন্ধ্যায় আমি আপনার সাথে দেখা করতে আসবো। মেয়েটি চলে গেলো। এই সব কিছু দূরে দাঁড়িয়ে এসিস্ট্যান্ট প্রক্টর স্যার দেখছিলেন। তার ঠিক তিনদিন পর। ২৯ ডিসেম্বর ১৯২৭, কলা ভবন আর বিজ্ঞান ভবনের নোটিশ বোর্ডে হাতে লেখা বিজ্ঞপ্তি টানিয়ে দেয়া হলো যুবকের নামে। তার নাম লেখা হলো, তার বাবার নাম লেখা হলো এবং বিজ্ঞপ্তিতে বলা হলো, এই যুবকের আজীবনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ।

তারপরে এই যুবক আর কোনদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেননি। সেইদিনের সেই যুবক, বৃদ্ধ বয়সে ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট মৃত্যুবরণ করলেন। যে যুবকটা আর কোনদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশ করেননি, তার মৃত্যুর পরে তার কবর হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

সেই যুবকের নাম, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম।

পুনশ্চ: মেয়েটি
ফজিলাতুন্নেসা জোহা,
কবি নজরুল ওনাকে নিয়ে 'বর্ষা বিদায়' কবিতা লেখেন।

টাঙ্গাইলের সদর থানার নামদার কুমুল্লী গ্রামে জন্ম নেয়া আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোক উদ্ভাসিত কারি, মহিয়সী নারী বেগম ফজিলতুন্নেসা জোহা ।

বেগম ফজিলতুন্নেসা জোহা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলমান ছাত্রী ও ঢাকা ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন (১৯৪৮-৫৭)। তিনিই প্রথম বাঙালি মুসলমান ছাত্রী যিনি উচ্চ শিক্ষার্থে স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশে যান।
বেগম ফজিলতুন্নেসা সম্পর্কে পরিচয় পাওয়া যায় কাজী মোতাহার হোসেনের লেখা থেকে....
“ বেগম ফজিলতুন্নেসা অসামান্য সুন্দরীও ছিলেন না অথবা বীনানিন্দিত মঞ্জুভাষিণীও ছিলেন না। ছিলেন অঙ্কের এম এ এবং একজন উচুঁদরের বাক্‌পটু মেয়ে ”জন্ম
বেগম ফজিলতুন্নেসার জন্ম ১৮৯৯ সালে টাঙ্গাইল জেলার সদর থানার নামদার কুমুল্লী গ্রামে। পিতার নাম ওয়াজেদ আলী খাঁ, মাতা হালিমা খাতুন।।
ওয়াজেদ আলী খাঁ মাইনর স্কুলের শিক্ষক ছিলেন।

শিক্ষা

মাত্র ৬ বছর বয়সে ওয়াজেদ আলী খাঁ
ফজিলতুন্নেসাকে করটিয়ার প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি করে দেন। তিনি ১৯২১ সালে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক ও ১৯২৩ সালে প্রথম বিভাগে ইডেন কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। ফজিলাতুন্নেছা ১৯২৫ সালে কলকাতার বেথুন কলেজ থেকে
প্রথম বিভাগে বিএ পাস করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৭ সালে গণিত শাস্ত্রে এমএ-তে ফার্স্ট ক্লাশ
ফার্স্ট (গোল্ড মেডালিস্ট) হয়েছিলেন।
অতঃপর তিনি ১৯২৮ সালে বিলেতে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য গমন করেন।
নিখিল বঙ্গে তিনিই প্রথম মুসলিম মহিলা গ্র্যাজুয়েট। উপমহাদেশে মুসলিম মহিলাদের মধ্যে তিনিই প্রথম বিলাত থেকে ডিগ্রি এনেছিলেন। তাঁর পড়াশোনার ব্যাপারে করটিয়ার জমিদার মরহুম ওয়াজেদ আলী খান পন্নী (চাঁদ মিয়া) বিশেষ উৎসাহ ও অর্থ সাহায্য করেন।
বিলেতে তাঁর অবস্থান কালীন সময়ে
ভারতীয় মুসলমানদের মাঝে প্রথম ডিপিআই।

পরিবার
-------------

বিদেশে পড়ার সময় ফজিলতুন্নেসার সাথে খুলনা নিবাসী আহসান উল্ল্যাহর পুত্র জোহা সাহেবের সাথে ফজিলাতুন্নেছার পরিচয় হয়। পরে উভয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
কর্মজিবনে তার অসামান্য ‍অবদান
লন্ডন থেকে ফিরে ১৯৩০ সালে তিনি কলকাতায় প্রথমে স্কুল ইন্সপেক্টরের চাকুরিতে যোগদান করেন। ১৯৩০ সালের আগস্টে কলকাতার অ্যালবার্ট হলে অনুষ্ঠিত ‘বঙ্গীয় মুসলিম সমাজ-সেবক-সংঘে’র বার্ষিক অধিবেশনে সভাপতি হিসেবে তাঁর বক্তব্যটি নারী
জাগরণের মাইল ফলক হয়ে আছে।
এই অধিবেশনে তিনি বলেন ‘নারী-শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধে অনেকেই অনেক কথা বলেছেন ও বলেন। নারী সমাজের অর্ধাঙ্গ, সমাজের পূর্ণতালাভ কোনোদিনই নারীকে বাদ দিয়ে সম্ভব হতে পারে না।
সেই জন্যেই আজ এ সমাজ এতোটা পঙ্গু হয়ে পড়েছে। তিনি আরো বলেন,
The highest form of society is one in which every man and woman is free to develop his or her individuality and to enrich the society what is more characteristic of himself or herself.

কাজেই এ সমাজের অবনতির প্রধান কারণ নারীকে ঘরে বন্দি করে রেখে তার Individuality বিকাশের পথ রুদ্ধ করে রাখা। নারী-শিক্ষা সম্বন্ধে এতোটা কথা আজ বলছি তার কারণ সমাজের গোড়ায় যে-গলদ রয়েছে সেটাকে দূরীভূত করতে
না-পারলে সমাজকে কখনই সুন্দর করে গড়ে তুলতে পারা যাবে না।’
তিনি ১৯৩৫ সালে বেথুন কলেজে গণিতের অধ্যাপক হিসাবে যোগদান করেন।
বেথুন কলেজে চাকুরিরত অবস্থায় দেশবিভাগের পর তিনি ঢাকায় চলে এসে ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন ১৯৪৮ সালে। বেগম ফজিলাতুন্নেছা ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত ঢাকা
ইডেন কলেজের অধ্যক্ষা ছিলেন। বেগম ফজিলাতুন্নেছার অক্লান্ত পরিশ্রম ও চেষ্টায় বিজ্ঞান ও বাণিজ্যিক বিভাগসহ ইডেন কলেজ ডিগ্রি পর্যায়ে উন্নীত হয়।১৯৫২ সালে ইডেন কলেজের মেয়েরা রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে কলেজের অভ্যন্তর থেকে মিছিল বের করার প্রস্ত্ততি নিলে উর্দুভাষী এক দারোগা হোস্টেলে ঢুকে মেয়েদের ভয়ভীতি দেখাতে শুরু করার এক পর্যায়ে
খবর পেয়ে বেগম ফজিলাতুন্নেছা কলেজে এসে তার বিনানুমতিতে কলেজ প্রাঙ্গণে ঢোকার জন্য দারোগাকে ভৎসনা করে হোস্টেল থেকে বের করে দেন নিজের দৃঢ়তা ও প্রশাসনিক ক্ষমতার বলে।
নারীশিক্ষা ও নারীমুক্তি সম্পর্কে সওগাতসহ অনেক পত্রিকায় তার বিভিন্ন প্রবন্ধ, গল্প প্রকাশিত হয়।

মৃত্যু

এই বিদুষী নারী ১৯৭৭ সালে ২১ অক্টোবর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। এই মহীয়সী নারীর স্মৃতি রক্ষার্থে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৮৭ সালে ফজিলাতুন্নেছার
নামে হল নির্মাণ করা হয়।

#সংগৃহীত

Recent Post

ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯

১. ‘ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ ’ কবিতায় সালামের হাতে কেন অবিনাশী বর্ণমালা ঝরে ? ক. সংগ্রামী চেতনার কারণে     খ. দুঃখিনী মাতার অশ্রুজল দেখে গ. বরকত...

Most Popular Post