১. মানুষের মূল্য কোথায়? চরিত্র, মনুষ্যত্ব, জ্ঞান ও কর্মে। বস্তুত চরিত্রবলেই মানুষের জীবনে যা কিছু শ্রেষ্ঠ তা বুঝতে হবে। চরিত্র ছাড়া মানুষের গৌরব করার আর কিছু নেই। মানুষের শ্রদ্ধা যদি মানুষের প্রাপ্য হয়, সে শুধু চরিত্রের জন্য। অন্য কোনো কারণে মানুষের সামনে নত হওয়ার দরকার নেই।জগতে যেসব মহাপুরুষ জন্মগ্রহণ করেছেন, তাঁদের গৌরবমূলে এই চরিত্রশক্তি। তুমি চরিত্রবান লোক, এ কথার অর্থ এই নয় যে তুমি লম্পট নও, তুমি সত্যবাদী, বিনয়ী এবং জ্ঞানের প্রতি শ্রদ্ধা পোষণ করো; তুমি পর দুঃখে কাতর, ন্যায়বান এবং মানুষের ন্যায় স্বাধীনতা প্রিয়। চরিত্রবান মানে এই।
২. অভ্যাস এক ভয়ানক জিনিস। একে হঠাৎ স্বভাব থেকে তুলে ফেলা কঠিন। মানুষ হবার সাধনাতেও তোমাকে ধীর ও সহিষ্ণু হতে হবে। সত্যবাদী হতে চাও? তাহলে ঠিক করো সপ্তাহে অন্তত একদিন মিথ্যা বলবে না। ছ মাস ধরে এমনি করে নিজে সত্য কথা বলতে অভ্যাস করো। তারপর এক শুভ দিনে আর একবার প্রতিজ্ঞা করো, সপ্তাহে তুমি দুদিন মিথ্যা বলবে না। এক বছর পরে দেখবে সত্য কথা বলা তোমার কাছে অনেকটা সহজ হয়ে পড়েছে। সাধনা করতে করতে এমন একদিন আসবে যখন ইচ্ছা করলেও মিথ্যা বলতে পারবে না। নিজেকে মানুষ করার চেষ্টায় পাপ ও প্রবৃত্তির সঙ্গে সংগ্রামে তুমি হঠাৎ জয়ী হতে কখনও ইচ্ছা করো না— তাহলে সব পণ্ড হবে ।
সারাংশ: মানুষের স্বভাব থেকে অভ্যাসকে বাদ দেওয়া কঠিন। সত্যবাদী হতে হলে সত্য বলার
অভ্যাস করতে হয় এবং মিথ্যা বলার প্রবণতা দূর করাতে হয়। পাপ ও অসৎ প্রবৃত্তির
বিরুদ্ধে সংগ্রামে জয়ী হওয়ার জন্যেও চাই সাধনা।
শৈশবে সদুপদেশ যাহার না রোচে,
জীবনে তাহার কভু মূর্খতা না ঘোচে।
চৈত্র মাসে চাষ দিয়া না বোনে বৈশাখে,
কবে সেই হৈমন্তিক ধান্য পেয়ে থাকে।
সময় ছাড়িয়া দিয়া করে পন্ডশ্রম,
ফল চাহে সেও অতি নির্বোধ অধম।
খেয়াতরী চলে গেলে বসে থাকে তীরে,
কিসে পার হবে, তরী না আসিলে ফিরে?
▣ সারমর্মঃ জীবনে সার্থকতা অর্জনের জন্যে
ছেলেবেলা থেকেই নৈতিক সততার শিক্ষাগ্রহণ করা উচিত। শৈশবে সৎকাজ করতে না শিখলে পরে
আর সে অভ্যাস গড়ে ওঠে না।
সময়ের কাজ সময়ে না করলে তার জন্যেও জীবনে মূল্য দিতে হয় প্রচুর।
কারণ, সুযোগ চলে গেলে তা হয়ত আর ফিরে আসে না।