Ad-1

Showing posts with label প্রকৃতি-প্রত্যয়-সমাস-উপসর্গ. Show all posts
Showing posts with label প্রকৃতি-প্রত্যয়-সমাস-উপসর্গ. Show all posts

Tuesday, March 27, 2018

সমাস কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি? উদাহরণসহ লেখো।

👉 সমাস শব্দের অর্থ সংক্ষেপণ বা মিলন।
👉পরস্পর সম্পর্কযুক্ত দুই বা ততোধিক পদকে একপদে পরিণত করাকে সমাস বলে।

👉আরও সংক্ষেপে বললে বলতে হয়,একপদিকরণকে সমাস বলে।

👉যেমন:গায়ে হলুদ দেয়া হয় যে অনুষ্ঠানে=গায়েহলুদ।
এখানে ছয়টি পদকে একপদে পরিণত করে হলো 'গায়েহলুদ ',সুতারাং এ ধরনের সংক্ষিপ্ত করণকে সমাস বলে।

সমাস ছয় প্রকার।যথা:
১. দ্বন্দ্ব সমাস।যেমন: মা-বাবা,কাপড়-চোপড়,দা-কুমড়া ইত্যাদি।
২. বহুব্রীহি সমাস।যেমন: দশানন,দশভূজা,আশীবিষ ইত্যাদি।
৩. অব্যয়ীভাব সমাস।যেমন: আনত,আমরণ,আকণ্ঠ ইত্যাদি।
৪. দ্বিগু সমাস।যেমন: পঞ্চনদ,ত্রিভূজ,শতাব্দী ইত্যাদি।
৫. তৎপুরুষ সমাস।যেমন: গাছপাকা,ঘিমাখা,আপাদমস্তক ইত্যাদি।
৬. কর্মধারয় সমাস।যেমন: বিষাদসিন্ধু, কাজলকালো,রাজর্ষি ইত্যাদি।

আবার,
👉পূর্বপদ ও পরপদের অর্থের প্রাধান্যের ভিত্তিতে সমাস চার প্রকার।যথা:

১. উভয় পদের অর্থ প্রধান।যেমন: দ্বন্দ্ব সমাস।
২. উভয় পদের অর্থ প্রধান নয়,বরং তৃতীয় আরেকটি পদকে বুঝায়।যেমন: বহুব্রীহি সমাস।
৩. পূর্ব পদের অর্থ প্রধান।যেমন: অব্যয়ীভাব সমাস।
৪. পর পদের অর্থ প্রধান। যেমন: দ্বিগু, তৎপুরুষ, কর্মধারয় সমাস।

নিম্নে বিভিন্ন প্রকার সমাসের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি উপস্থাপন করা হলোঃ--- 

১. দ্বন্দ্ব সমাস

👉পূর্বপদ  পরপদের অর্থ প্রাধান্য পায় তাকে দ্বন্দ্ব সমাস বলে।
👉দ্বন্দ্ব শব্দের অর্থ জোড়া।সুতারাং দ্বন্দ্ব সমাস জোড়ায় জোড়ায় থাকে।
👉দ্বন্দ্ব সমাসের ব্যাসবাক্য ও,এবং,আর দিয়ে হয়।
👉যেমনঃ মা-বাবা,ভাই-বোন,স্বামী-স্ত্রী,দা-কুমড়া,কাপড়-চোপড় ইত্যাদি। 

২.বহুব্রীহি সমাস

👉পূর্বপদ  পরপদের অর্থ প্রাধান্য পায় না,বরং তৃতীয় আরেকটি পদকে বুঝায় তাকে দ্বন্দ্ব বহুব্রীহি সমাস বলে।
👉 বহুব্রীহি সমাসের ব্যাসবাক্য 'যার' দিয়ে হয়।
👉 যেমনঃ দশানন,দশভূজা,আশীবিষ,ঊর্ণ্নাভ ইত্যাদি।

৩.অব্যয়ীভাব সমাস

👉 যে সমাসের পূর্ব পদের অর্থ প্রাধান্য পায়,তাকে অব্যয়ীভাব সমাস বলে।
👉 অব্যয়ীভাব সমাসের সমস্ত পদের শুরূতে উপসর্গ থাকে,কিন্তু ব্যাসবাক্য করার সময় তা থাকে না।
👉 যেমন ঃ হাভাত,আমরণ,আনত,প্রতিদিন ইত্যাদি।

 ৪. দ্বিগু সমাস

👉 যে সমাসের সমস্তপদের শুরুতে সংখ্যাবাচক শব্দ থাকে,পরপদের অর্থ প্রাধান্য পায় তাকে দ্বিগু সমাস বলে।
👉 দ্বিগু সমাসের ব্যাসবাক্য 'সমাহার' শব্দ দিয়ে হয়। 
👉যেমনঃ সপ্তাহ,পঞ্চনদ,ত্রিভূজ,চতূর্ভূজ,শতাব্দী  ইত্যাদি।

নিত্য সমাস

যে সমাসের ব্যাসবাক্য হয় না, কিংবা ব্যাসবাক্য করতে গেলে অন্য পদের সাহায্য নিতে হয়, তাকে নিত্য সমাস বলে। যেমন: অন্য দেশ = দেশান্তর; অন্য কাল = কালান্তর ইত্যাদি।

নিত্য সমাস' মনে রাখুন সহজ টেকনিক দিয়ে! সারাজীবনেও আর নিত্য সমাস ভুল হবে না।

** টেকনিক-; সমস্তপদের শেষে 'অন্তর' অথবা 'মাত্র' থাকলেই নিত্য সমাস হবে।
আর ব্যাসবাক্য করার সময় "অন্তর" থাকলে হবে "অন্য"
আর মাত্র থাকলে হবে 'কেবল'।
যেমনঃ
দেশান্তর = অন্য দেশ (নিত্য সমাস)
ধর্মান্তর= অন্য ধর্ম (নিত্য সমাস)
গ্রামান্তর = অন্যগ্রাম  
দ্বীপান্তর = অন্য দ্বীপ  
কালান্তর = অন্য কাল  
গৃহান্তর = অন্যগৃহ
স্থানান্তর = অন্য স্থান
দর্শনমাত্র= কেবল দর্শন (নিত্যসমাস)
জলমাত্র = কেবল জল
দর্শনমাত্র = কেবল দর্শন
তন্মাত্র = কেবল মাত্র  
জলমাত্র= কেবল জল

প্রাদি সমাসঃ-

 প্র,পরা প্রভৃতি ২০টি উপসর্গের সাথে কৃৎ প্রত্যয়সাধিত বিশেষ্য পদের সমাস হলে, তাকে প্রাদি সমাস বলে।

যেমন:
সম্ (সম্যক্) যে আদর = সমাদর,
প্র (প্রকৃষ্ট) যে বচন = প্রবচন,
পরি (চতুর্দিকে) যে ভ্রমণ = পরিভ্রমণ,
অনুতে (পশ্চাতে) যে তাপ = অনুতাপ,
প্র (প্রকৃষ্ট রূপে) ভাত (আলোকিত) = প্রভাত,
প্র (প্রকৃষ্ট রূপে) গতি = প্রগতি ইত্যাদি,
প্রদর্শন=প্রকৃত রুপে দর্শন,
প্রনাম=প্রত্যয় দ্বারা নাম।

 


Sunday, March 25, 2018

দ্বন্দ্ব সমাস কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি উদাহরণসহ লেখ

অর্থবিচারে যে সমাসে দুইপদ (পূর্বপদ ও পরপদ)-এর সমান গুরুত্ব থাকে তাকে দ্বন্দ্ব সমাস বলা হয়। যেমন: 

মা-বাবাসাদা-কালোসোনা-রূপাঘরে-বাইরেতেলে-জলে প্রভৃতি।

দ্বন্দ্ব সমাসে দুই পদ একই শ্রেণীর হয় এবং দুইপদ দুজন ব্যক্তি বা দুটি বস্তুকে  বোঝায়।যেমন :

ক. দুপদই বিশেষ্য : অহি-নকুলপিতা-পুত্র প্রভৃতি।

খ. দুপদই বিশেষণ : সাদা-কালোক্ষত-বিক্ষত প্রভৃতি।

গ. দুপদই সর্বনাম : তোমরাআমরা প্রভৃতি।

ঘ. দুপদই ক্রিয়াপদ : বেচা-কেনাআসা-যাওয়া প্রভৃতি।

 দ্বন্দ্ব সমাসের ব্যাসবাক্য গঠন : পদ দুটোর মাঝে ’, ‘এবং’ যুক্ত করলে ব্যাসবাক্য হয়ে যাবে। যেমন : অহিনকুল = অহি ও নকুলপিতা-পুত্র = পিতা ও পুত্রসাদা-কালো = সাদা ও কালোক্ষত-বিক্ষত = ক্ষত ও বিক্ষততোমরা = তুমিও সেআমরা = আমিতুমি ও সেবেচা-কেনা = বেচা ও কেনাআসা-যাওয়া = আসা ও যাওয়া।

দ্বন্দ্ব সমাসের প্রকারভেদ :

ক.  সমার্থক দ্বন্দ্ব : দ্বন্দ্ব সমাসের দুই পদ সমার্থক হলে তাকে সমার্থক দ্বন্দ্ব সমাস বলে। যেমন : রাজা বাদশাকাগজ ও পত্র = কাগজ-পত্রকাজ ও কর্ম = কাজ-কর্মজন ও মানব = জন-মানবধন ও দৌলত = ধন-দৌলত ইত্যাদি।

খ.  বিরোধার্থক দ্বন্দ্ব : দ্বন্দ্ব সমাসের দুই পদ বিপরীত অর্থ প্রকাশ করলে তাকে বিপরীতার্থক বা বিরোধার্থক দ্বন্দ্ব সমাস বলা হয়। যেমন : ভালো ও মন্দ = ভালো-মন্দবাদি ও বিবাদি = বাদি-বিবাদি ইত্যাদি।

গ.  মিলনার্থক দ্বন্দ্ব : যে দ্বন্দ্ব সমাসে দুই পদের অর্থের মধ্যে সম্পর্ক বা সৌহার্দ থাকেতাকে মিলনার্থক দ্বন্দ্ব সমাস বলে যেমন: ভাই ও বোন = ভাই-বোনস্বামী ও স্ত্রী = স্বামী-স্ত্রী ইত্যাদি।

ঘ.  অলুক দ্বন্দ্ব : যে দ্বন্দ্ব সমাসের দুই পদে একই বিভক্তি যুক্ত থাকে অথবা কোন বিভক্তি লোপ পায় না তাকে অলুক দ্বন্দ্ব সমাস বলে। যেমন : দুধে ও ভাতে = দুধে-ভাতেঘরে ও বাইরে = ঘরে-বাইরে ইত্যাদি।

ঙ.  ইত্যাদি অর্থবোধক দ্বন্দ্ব : নির্দিষ্ট ব্যক্তিদ্বয় বা নির্দিষ্ট বস্ত্তদ্বয় না বুঝিয়ে অনির্দিষ্ট কোনো কিছু বোঝালে তাকে ইত্যাদি অর্থবোধক দ্বন্দ্ব বলা হয়। যেমন : দোকান-পাটবাসন-কোসন ইত্যাদি।

চ.  একশেষ দ্বন্দ্ব সমাস : যে দ্বন্দ্ব সমাসের সুনির্দিষ্ট পূর্বপদ বা পরপদ থাকে নাকিন্তু দুই পদ সমান অর্থবোধক সর্বনাম দ্বারা সমাসটি গঠিত হয়ে থাকেতাকে একশেষ দ্বন্দ্ব সমাস বলে। যেমন : আমরাতোমরা প্রভৃতি।

এ সমাস দুটির ব্যাসবাক্য হতে পারে যথাক্রমে-আমরা = আমি ও তুমি কিংবা আমি ও তোমরা কিংবা আমি-তুমি ও সে। তোমরা = এ সমাসটির ব্যাসবাক্য হতে পারে-তুমি ও সে কিংবা তুমি ও তারা।

ছ.  বহুপদী দ্বন্দ্ব সমাস : যে দ্বন্দ্ব সমাসে দুয়ের অধিক পদ সমাসবদ্ধ হয়ে থাকেতাকে বহুপদী দ্বন্দ্ব সমাস বলে। যেমন : টাকা-আনা-পাইরোদ-বৃষ্টি-ঝড়কাঠ-খড়-কেরোসিন প্রভৃতি।

দ্বন্দ্ব সমাসের অতিরিক্ত উদহারণ

বিশেষ্য + বিশেষ্য পদের দ্বন্দ্ব সমাস

আইন-আদালত = আইন ও আদালত     চন্দ্র-সূর্য = চন্দ্র ও সূর্য

ভাবভঙ্গী = ভাব ও ভঙ্গী                   ছাত্রছাত্রী=ছাত্র ও ছাত্রী

জাঁকজমক=জাঁক ও জমক              শালতালতমাল= শালতাল ও তামাল

দোয়াত-কলম = দোয়াত ও কলম        সৈন্যসামন্ত = সৈন্যও সামন্ত

কাগজ-কলম=কাগজ ও কলম             রীতিনীতি=রীতি ও নীতি

পিতা-পুত্র=পিতা ও পুত্র                    ঘটি-বাটি=ঘটি ও বাটি

ঝড়-বৃষ্টি = ঝড় ও বৃষ্টি                    শাকসবজি = শাক ও সবজি

ক্ষেত-খামার – ক্ষেত ও খামার             রাজা-বাদশা = রাজা ও বাদশা

জন-মানব=জন ও মানব                   কীট-পতঙ্গ = কীট ও পতঙ্গ

সোনা-রূপা = সোনা ও রূপা                 কথা-বার্তা = কথা ও বার্তা

পোকা-মাকড় = পোকা ও মাকড়          শহর-গ্রাম = শহর ও গ্রাম

ছেলে-মেয়ে= ছেলে ও মেয়ে                মাঠ-ঘাট=মাঠ ও ঘাট

উজির-নাজির = উজির ও নাজির         লোক-লস্কর = লোক ও লস্কর

ফলমূল =ফল ও মূল                        নথি-পত্র = নথি ও পত্র

সভাসমিতি = সভা ও সমিতি              পথ-ঘাট = পথ ও ঘাট

মামলা-মোকদ্দমা = মামলা ও মোকাদ্দমা           ডাক্তার-বৈদ্য=ডাক্তার ও বৈদ্য

ধনজন = ধন ও জন                        মশা-মাছি=মশা ও মাছি

বিশেষণ + বিশেষণ পদের দ্বন্দ্ব সমাস

উচু-নিচু=উঁচু ও নিচু                        ভালো-মন্দ = ভালো ও মন্দ

ক্ষত-বিক্ষত = ক্ষত ও বিক্ষত             হতাহত = হত ও আহত

লঘু-গুরু = লঘু ও গুরু                       ইতর-ভদ্র = ইতর ও ভদ্র

সহজসরল=সহজ ও সরল                   কানা-খোঁড়া = কানা ও খোঁড়া

সাদা-কালো=সাদা ও কালো                লাল-নীল=লাল ও নীল

হিতাহিত=হিত ও অহিত                   কাঁচাপাকা = কাঁচা ও পাকা

নরম-গরম = নরম ও গরম               দশ-বিশ = দশ ও বিশ

সর্বনাম + সর্বনাম পদের দ্বন্দ্ব সমাস

যা-তা = যা ও তা                          যে-সে = যে ও সে

যিনি-তিনি = যিনি ও তিনি              যেমন-তেমন = যেমন ও তেমন

তোমরা = তুমি ও সে                      আমরা = আমি ও তুমি

ক্রিয়া + ক্রিয়াপদের দ্বন্দ্ব সমাস

ভেঙেচুরে = ভেঙে ও চুরে                   চেয়ে-চিন্তে = চেয়ে ও চিন্তে

হেসে-খেলে = হেসে ও খেলে               উঠে-পড়ে = উঠে ও পড়ে

বলে – কয়ে = বলে ও কয়ে                হেসে-কেঁদে = হেসে ও কেঁদে

মেরে-ধরে = মেরে ও ধরে                 উঠ-বস=উঠ ও বস

জেনেশুনে = জেনে ও শুনে


Saturday, March 24, 2018

বহুব্রীহি কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি উদাহরণসহ লেখো

যে সমাসে দুই পদের অর্থ প্রাধান্য না পেয়ে তৃতীয় অর্থ প্রাধান্য পায়তাকে বহুব্রীহি সমাস বলা হয়। যেমন : দশ আনন যার = দশানন। এখানে দশ’ ও আনন’ এই দুটি পদের সমাস হয়েছেকিন্তু সমাস-নিষ্পান্ন পদটি এই পদ দুটির কোনটির অর্থ প্রকাশ করছে না। সমাসবদ্ধ পদে দশ আনন (মুখ) বিশিষ্ট ব্যক্তিকে (রাবন) বোঝানো হয়েছে। বহুব্রীহি’ পদটিই বহুব্রীহি সমাস নিষ্পন্নবহু (অনেক)  ব্রীহি (ধান) আছে যারসে বহুব্রীহি (ধনী লোক)। এখানে বহু’ এবং ব্রীহি’ সমস্যমান পদ দুটির যোগে সমস্ত পদটির দ্বারা একটি তৃতীয় পদের (এখানে ধনী ব্যক্তির) প্রাধান্য পেয়েছে। এই রকম সমাসকে বহুব্রীহি সমাস বলে।

বহুব্রীহি সমাসের শ্রেণী বিভাগ :

  1. সামানাধিকরণ বহুব্রীহি : পূর্বপদ বিশেষণ এবং পরপদ বিশেষ্য হলে তাকে সমানাধিকরণ বহুব্রীহি বলা হয়। যেমন: নীলকণ্ঠ = নীল কণ্ঠ যারপোড়াকপাল = পোড়া কপাল যারপক্ব কেশ যার = পক্বকেশ ইত্যাদি।
  2. ব্যধিকরণ বহুব্রীহি : উভয়পদ (পূর্বপদ,পরপদ) বিশেষ্য হলে ব্যধিকরণ বহুব্রীহি হয়। যেমন : বীণা পাণিতে যার = বীণাপাণিগোঁফে খেঁজুর যার = গোঁফ-খেঁজুরে ইত্যাদি।
  3. ব্যতিহার বহুব্রীহি : পরস্পর একজাতীয় ক্রিয়াকরণ বোঝালে যে বহুব্রীহি সমাস হয় তাকে ব্যতিহার বহুব্রীহি বলে। এই সমাসে পূর্বপদ আ-কারান্ত ও পরপদ ই-কারান্ত হয়। যেমন: লাঠিতে লাঠিতে যে যুদ্ধ= লাঠালাঠিপরস্পর গালি বর্ষণ করে যুদ্ধ = গালাগালিহেসে হেসে যে আলাপ = হাসাহাসি।
  4. মধ্যপদলোপী  বহুব্রীহি সমাস : যে বহুব্রীহি সমাসে ব্যাসবাক্যের ব্যাখ্যানমূলক মধ্যপদের লোপ হয় তাকে মধ্যপদলোপী বহুব্রীহি বা ব্যাখ্যাত্নক বহুব্রীহি বলে। এই সমাসে অধিকাংশ ক্ষেত্রে পূর্বে উপমান পদ থেকে তুলনা বোঝায় বলে একে উপমাত্মক বহুব্রীহি ও বলে। যেমন: মৃগের নয়নের ন্যায় চঞ্চল নয়ন যার = মৃগনয়নাচন্দ্রের মতো স্নিগ্ধোজ্জ্বল মুখ যে নারীর = চন্দ্রমুখীবিম্বের মতো রঞ্জিত অধর যার = বিম্বাধর ইত্যাদি।
  5. নঞর্থক বহুব্রীহি সমাস : নঞর্থক অব্যয় পদের সাথে বিশেষ্য পদের বহুব্রীহি সমাস হলে তাকে নঞর্থক বহুব্রীহি সমাস বলে। যেমন: নাই উপায় যার = নিরুপায়নাই অন্ন যার= নিরন্ননাই তার যার = বেতারনাই হুঁশ যার= বেহুঁশ ইত্যাদি।
  6. অলুক বহুব্রীহি সমাস : যে বহুব্রীহি সমাসে পূর্বপদের বিভক্তি লোপ পায় নাতাকে অলুক বহুব্রীহি সমাস বলা হয়। যেমনগায়েহলুদ = গায়ে হলুদ দেওয়া হয় যে অনুষ্ঠানেহাতেখড়ি = হাতেখড়ি দেওয়া হয় যে অনুষ্ঠানে ।
  7. সংখ্যাবাচক বহুব্রীহি সমাস : যে বহুব্রীহি সমাসে পূর্বপদ সংখ্যাবাচক হয়তাকে সংখ্যাবাচক বহুব্রীহি বলা হয়। যেমন : দশ আনন যার = দশাননদশ ভুজ (হাত) যার = দশ ভুজা ।
  8. সহার্থক বহুব্রীহি সমাস : সহার্থক পদের সঙ্গে বিশেষ্য পদের বহুব্রীহি সমাস হলে তাকে সহার্থক বহুব্রীহি সমাস বলে। যেমন: বান্ধবের সহিত বর্তমান = সবান্ধবস্ত্রীর সহিত বর্তমান = সস্ত্রীক ইত্যাদি।
  9. প্রত্যয়ান্ত বহুব্রীহি সমাস : যে বহুব্রীহি সমাসের সমস্তপদে আও ইত্যাদি প্রত্যয় যুক্ত হয় তাকে বলা হয় প্রত্যয়ান্ত বহুব্রীহি। যেমন: এক দিকে চোখ (দৃষ্টি) যার =একচোখা (চোখ+আ)ঘরের দিকে মুখ যার =ঘরমুখো (মুখ +ও)ঊন পাঁজুর যার = ঊনপাঁজুরে (পাঁজুর+এ) ইত্যাদি।
  10. নিপাতনে সিদ্ধ বহুব্রীহি সমাস : যে বহুব্রীহি সমাস কোন নিয়মের অধীনে নয় তাকে নিপাতনে সিদ্ধ বহুব্রীহি বলা হয়। যেমন : দুদিকে অপ যার=দ্বীপঅন্তর্গত অপ যার = অন্তরীপ ইত্যাদি।

 

বহুব্রীহি সমাসের অতিরিক্ত উদাহরণ:

মন্দভাগ্য = মন্দভাগ্য যার                বিগতপ্রাণ = গত প্রাণ যার

উচ্চশির = উঁচু শির যার                  কদাকার = কদ (মন্দ) আকার যার

পুণ্যাত্মা = পুণ্য আত্মা যার                পোড়াকপাল = পোড়া কপাল যার

নীলাম্বর = নীল অম্বর যার                বদমেজাজী = বদ মেজাজ যার

কানকাটা = কান কাটা যার              ন্যায়নিষ্ঠ = ন্যায় নিষ্ঠ যে

বীণাপাণি = বীণা পাণিতে যার          খড়গহস্ত = খড়গ হস্তে যার

এলোকেশী = এলো কেশী যে             বিপত্নীক = পত্নী বিগত যার

ঊর্ণনাভ = ঊর্ণ নাভিতে যার             চন্দ্রচূড় = চন্দ্র চূড়ায় যাহার

যুবজানি = যুবতী জায়া (স্ত্রী) যার        রত্নখচিত = রত্ন খচিত যাতে

স্বল্পায়ু = স্বল্প আয়ু যার                   হতভাগ্য = হত ভাগ্য যার

নতশির = নত শির যার                 নীলকণ্ঠ = নীল কণ্ঠ যার

পূর্ণবয়স্ক = পূর্ণ বয়স যার                গৌরাঙ্গ = গৌর অঙ্গ যার

মতিচ্ছন্ন = মতি ছন্ন যার                রাশভারি = রাশ ভারি যার

শূলপাণি = শূল পাণিতে যার            নদীমাতৃক = নদী মাতা যার

কমলমুখ = কমল মুখে যার              রত্নগর্ভা = রত্ন গর্ভ যার

ভার্যাপ্রিয় = ভার্যা প্রিয় যার               সতীর্থ = সমান তীর্থ যার

বিশালাক্ষ = বিশাল অক্ষি যার           সলজ্জ = লজ্জার সাথে বর্তমান

সপরিবার = পরিবারের সাথে বর্তমান       কানাকানি = কানে কানে যে কথা

হাতাহাতি = হাতে হাতে যে লড়াই       চোখাচোখি = চোখে চোখে যে দেখা

মাতামাতি = মেতে মেতে যে আনন্দ         বেতার = তার নাই যার

বেহিসাবী = হিসাব নেই যার             অপয়া = পয় নেই যার

বেআব্রু = আব্রু নেই যার                  অবোধ = বোধ নেই যার

একমণে = এক মণ ওজন যার           চতুষ্কোণ = চার কোন যার

দশগজি = দশগজ পরিমাণ যার         চৌচালা = চৌচালা আছে যার

আয়তলোচন = আয়ত লোচন যার       গজানন = গজের ন্যায় আনন যার

মীনাক্ষি = মীনের ন্যায় অক্ষি যার       হাতেখড়ি = হাতে খড়ি দেয়া হয় যে অনুষ্ঠানে

গায়ে হলুদ = গায়ে হলুদ দেয়া হয় যে অনুষ্ঠানে 

চুলাচলি = চুলে চুলে যে লড়াই

গলাগলি = গলে গলে যে ভাব            দলাদলি = দলে দলে বিভক্তি

তর্কাতর্কি = তর্কে তর্কে যে লড়াই       বেয়াদব =- আদব নেই যার

নির্মম = মমতা নেই যার                অনন্ত = অন্ত নেই যার

নির্লজ্জ = লজ্জা নেই যার                 নিষ্ককলঙ্ক = কলঙ্ক নেই যার

অনুসূয়া = নেই অসূয়া (ঈর্ষা)             দুপেয়ে = দু পায়া যার

শতমূলী = শতমূল যার                   পঞ্চানন = পঞ্চ আনন যার

ক্ষুরধারা = ক্ষুরের মতো ধার যা         বিশগজি = বিশ গজ পরিমাণ যার

সবান্ধব = বান্ধবের সাথে বর্তমান        সজল = জলের সাথে বর্তমান

সফল = ফসলসহ বর্তমান যে            সভক্তি = ভক্তি সাথে বর্তমান

Recent Post

ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯

১. ‘ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ ’ কবিতায় সালামের হাতে কেন অবিনাশী বর্ণমালা ঝরে ? ক. সংগ্রামী চেতনার কারণে     খ. দুঃখিনী মাতার অশ্রুজল দেখে গ. বরকত...

Most Popular Post