★সূচনা:
"তোমরা সৎপথে থেকো।মাতৃভূমিকে ভালোবেসো।তোমরা শুধু সামরিক বাহিনীকে নও,এটা
আমাদের জনগণের বাহিনী।"- বঙ্গবন্ধু।
বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ অর্জন স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালে বাঙালির
স্বাধীনতা আন্দোলনে সেনা,নৌ,বিমান বাহিনী সম্মিলিতভাবে হানাদার বাহিনীর ওপর আক্রমণ
করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে।সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের রক্ত বেসামরিক জনগণের
রক্তের সাথে ১৯৭১ সালে এক নদীর এক স্রোতে মিশে গেছে।কেউ কোনোদিন আর পৃথক করতে পারবে
না।তাদের আত্মত্যাগ অজর, অমর,অক্ষয়,অব্যয় হয়ে থাকবে মহাপ্রলয়ের শেষ রজনী পর্যন্ত।
★বাংলাদেশে
সশস্ত্র বাহিনী:
"জনগন শান্তিতে ও নিশ্চিন্তে নিদ্রা যাপন করে,কারণ তারা জানে দেশের সশস্ত্র
বাহিনী তাদের পক্ষে লড়তে সদা প্রস্তুত।"
জর্জ অরওয়েল।
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী আমাদের গর্ব ও জাতীয়ঐক্যের প্রতীক।দেশের
স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন,মুক্তিযুদ্ধোত্তর দেশ গঠন,প্রাকৃতিক
দুর্যোগ মোকাবেলা এবং জাতিসংঘ মিশনে সততা ও দক্ষতার সাথে সশস্ত্র বাহিনীর দায়িত্ব পালনের
কারণে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল।মূলত সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীকে
নিয়েই সশস্ত্র বাহিনী। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তাঁদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাঁদের
আত্মত্যাগের ফলে আমরা আমাদের স্বাধীনতা পেয়েছি।অবশ্য বেসামরিক মানুষেরও অবদান কম নয়।সশস্ত্র
বাহিনী দেশের প্রয়োজনে ও সকল সময় জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং ভবিষ্যতেও যে কোন সংকটে
দেশের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্যও সদা প্রস্তুত।
★মুক্তিযুদ্ধে
বিমান বাহিনীর ভূমিকা:
"আল্লাহর পথে সীমান্ত পাহারা দেয়া দুনিয়া
ও দুনিয়ার উপর যা কিছু আছে তার চাইতে উত্তম।"
সহিহ বুখারি ও মুসলিম।
বিমান বাহিনী আমাদের আকাশের সীমান্ত পাহারা দেয় এবং মুক্তিযুদ্ধে
বিমান বাহিনীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে গ্রুপ ক্যাপ্টেন
এ কে খন্দকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী গঠিত হয়।ভারত সরকার বাংলাদেশকে মর্টার
এয়ারক্রাফট, একটা ডাকোটা, ও দুটো হেলিকপ্টার প্রদান করে।এর ভিত্তিতে ১৯৭১ সালের ২৮
সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী পথচলা শুরু।দেরিতে পথচলা শুরু হলেও মুক্তিযুদ্ধে
ব্যাপক ভূমিকা রেখেছিল বিমান বাহিনী।মুক্তিযুদ্ধে ভারতের বিমান ও হেলিকপ্টারকে ব্যাপক
সংস্কারের মাধ্যমে সামরিক যুদ্ধ বিমানে রূপান্তরিত করে পাক হানাদার বাহিনীর উপর অসংখ্য
সফল আক্রমণে তাদের যুদ্ধ করার ক্ষমতা বহুলাংশে হ্রাস করে।পাকিস্তান যখন বাংলাদেশের
উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল তখন পশ্চিম পাকিস্তানে বিমান বাহিনীতে চাকরিরত অবস্থান বাংলাদেশকে
বাঁচাতে বাংলাদেশের লোক এগিয়ে আসেন এবং ১১৩১ জন বীরযোদ্ধা নিয়মিতভাবে মুক্তিযুদ্ধে
অংশগ্রহণ করে বাহিনীকে করেছেন গর্বিত।তাঁদের মধ্যে একজন বীরশ্রেষ্ঠসহ
২২জন বীরযোদ্ধা মুক্তিযুদ্ধে সাহসী অবদানের জন্য বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ
খেতাবে ভূষিত হন।দেশমাতৃকার শ্রেষ্ঠ সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট ল্যাফটেনেন্ট মতিউর রহমান
১৯৭১ সালের ২০ আগস্ট পাকিস্তানের মশরুর বিমান ঘাঁটি থেকে একটি টি-৩৩ বিমান ছিনতাই করে
মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের পরিকল্পনা করেন।কিন্তু বিমানটি পাকিস্তান - ভারত সীমান্তে
বিধ্বস্ত হলে তিনি মতিউর রহমান শাহাদত বরণ করেন।নবগঠিত বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সদস্যগণ
১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর মধ্যরাতে পাক-হানাদারদের উপর প্রথমে অটার বিমান এবং এ্যালুয়েট
হেলিকপ্টারের মাধ্যমে আক্রমণ পরিচালনা করে।১৯৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এভাবে ৪৫টির
অধিক বিমান অভিযান সাফল্যের সাথে পরিচালনা করা হয়।বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে চট্টগ্রামের
ইস্টার্ণ রিফাইনারি তেল ডিপো,নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল তেল ডিপো, সিলেট,শ্রীমঙ্গল,কুমিল্লার
দাউদকান্তি, নরসিংদী এবং ভৈরববাজারসহ বিভিন্ন এলাকার সফল অপারেশনের মাধ্যমে পাক হানাদার
বাহিনীর বিপুল ক্ষতি সাধন করতে সক্ষম হয়।এর ফলে শত্রুর অপারেশনাল কার্যক্রমের ক্ষমতাসহ
যুদ্ধ পরিচালনারর মনোবল হ্রাস পায় যা আমাদের মহান বিজয় অর্জনকে ত্বরান্বিত করে।তাদের
এই সাহসী পদক্ষেপ বাংলার স্বাধীনতা যুদ্ধে যোগ করে নতুন মাত্রা।
★মুক্তিযুদ্ধে
সেনা বাহিনীর ভূমিকা :
"মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি,
একটি ফুলের জন্য মোরা অস্ত্র ধরি।"
১০-১৫ জুলাই ১৯৭১ অনুষ্ঠিত সেক্টর কমান্ডার ও উর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাদের
সাথে সরকারের বৈঠক ও সম্মিলনের তৃতীয় দিন অর্থাৎ ১২জুলাই, একটি নিয়মিত বাহিনী বা বাংলাদেশ
সেনাবাহিনী গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অংশগ্রহণকারী পাকিস্তান সেনাবাহিনী,
ইপিআর ও পুলিশের বাঙালি সদস্যগণের সমন্বয়ে সেনাবাহিনী গঠিত হয়।সেনাবাহিনীর নিয়মিত ব্যাটালিয়নকে
তিনচি ব্রিগেডে বিভক্ত করা হয়।সেনাবাহিনীর তির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মেজর জিয়াউর রহমান,মেজর
সফিউল্লাহ ও মেজর খালেদ মোশাররফের নামের আদ্যক্ষর দিয়ে যথাক্রমে জেড ফোর্স,এস ফোর্স
এবং কে ফোর্স নিয়ে ব্রিগেড ফোর্সগুলো গঠিত হয়।তাঁরা বেসামরিক মানুৃষকে অস্ত্র চালনা
শিখিয়ে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করে এবং প্রত্যক্ষভাবেও অনেকে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
★মুক্তিযুদ্ধে
নৌবাহিনীর ভূমিকা:
"আমাদের সুবিশাল সমুদ্র এলাকা ও সামুদ্রিক সম্পদ রক্ষায় একটি সুপ্রশিক্ষিত
ও শক্তিশালী নৌবাহিনী অত্যাবশ্যক। "
[বঙ্গবন্ধু, ১০ডিসেম্বর ১৯৭৪]
পাকিস্তান নৌবাহিনীর আট বাঙালি সদস্যের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের
আগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে ২৩ এপ্রিল থেকে ৮ মে পর্যন্ত তাদেরকে বাংলাদেশ সরকার ভারতীয়
নৌবাহিনীর সহায়তায় কমান্ডো ট্রেনিং প্রদান করে।পরবর্তিতে নৌকামান্ডোর সংখ্যা হয় ৫১৫
জনে।২ আগস্ট থেকে নৌকামান্ডোর গেরিলা হামলা শুরু এবং কমান্ডো বাহিনীই ১৫ আগস্ট 'অপারেশন
জ্যাকপট'- পরিচালনা করেন।নৌকামান্ডো গঠনের মধ্য দিয়ে 'বাংলাদেশ নৌবাহিনী'- গঠনের প্রারম্ভিক
প্রক্রিয়া শুরু হয়।২১ নভেম্বর ১৯৭১ বাংলাদেশ বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
★মুক্তিযুদ্ধে
পুলিশের ভূমিকা:
স্বাধীনতা অর্জনের জন্য প্রতিরোধের যুদ্ধক্ষেত্র থেকে প্রথম যে বুলেটটি
পাকিস্তানীদের দিকে নিক্ষিপ্ত হয়েছিল তা ছিল রাজারবাগ পুলিশেরই।পাকিস্তানী হানাদার
কর্তৃক রাজারবাগ ও ঢাকা আক্রান্ত হওয়ার সংবাদটি প্রথম রাজারবাগের ওয়্যারলেস বেইজ থেকেই
সমগ্র বাংলাদেশ প্রচার করা হয়।ফলে ঢাকা আক্রান্ত হওয়ার সংবাদ জানতে পেরে বাংলাদেশের
অধিকাংশ থানা ফাঁড়ির পুলিশ তাদের অস্ত্র ও গুলি সরিয়ে ফেলতে সমর্থ হয় যা পরবর্তিতে
ব্যাপকহারে মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহান করা হয়েছিল।যুদ্ধ চলাকালে রাজারবাগের মুক্তিকামী পুলিশ
সদস্যরা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে, অনেক জায়গায় সাধারণ জনগণকে অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেয়,তাদের
মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য অনুপ্রাণিত, উদ্বুদ্ধ করে এবং নিজেরাও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ
করে মহান মুক্তিযুদ্ধে।।
★সশস্ত্র
বাহিনীর উপর অমানুষিক নির্যাতন :
কোন অভিযানে ধরা পড়া সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যের উপর চালানো হয় অমানুষিক
নির্যাতন। তাদের নিষ্ঠুর ও লোমহর্ষক অত্যাচারের মধ্যে চোখ উপড়ে ফেলা, মাথায় আঘাত করে
চূর্ণ-বিচূর্ণ করা,মুখ তেথলে দেওয়া,বেয়নেট ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে হৃৎপিন্ড উপড়ে ফেলা,আঙ্গুরে
সূঁচ ফুটানো,নখ উপড়ে ফেলা,শরীরের চামড়া কেটে লবণ ও মরিচ দেওয়া ছিল খুবই সাধারণ ঘটনা,তবুও
তাদের থেকে কোন তথ্য বের না হওয়ায় হত্যা করে নদী,জলাশয়ে,গর্তে ফেলে রাখত পাকিস্তানীরা।
★উপসংহার:
"যুদ্ধ জয়ে ইচ্ছা ছাড়া যুদ্ধে যাওয়া ধ্বংসাত্মক। "
ডগলাস ম্যাকঅার্থার।
সত্যিই বাংলাদেশের সবাই স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিল বলেই আমরা এতো
কম সময়ে মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করি।বাঙালিরা 'বীর বাঙালি অস্ত্র ধর,বাংলাদেশ স্বাধীন কর'-
স্লোগানের মাধ্যমে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের দিকে চূড়ান্তভাবে অগ্রসর হয় এবং সফলও
হয়।আজ আমাদের দায়িত্ব এক সমুদ্র রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশকে সুখী সমৃদ্ধ দেশ
হিসেবে পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠা করা।
নাইস
ReplyDeleteVery good
DeleteThanks....today is 16 December, 2020... i'm using it for today's online competition...of essay
DeleteThank you for your beautiful work.Really appreciating
DeleteNice
ReplyDeleteNice
DeleteVery nice. it help me for complete my preparation
ReplyDeleteVery nice
ReplyDeletenice
ReplyDeleteএই রচনাটি কত শব্দের মধ্যে লেখা হইছে কেউ বলবেন দয়া করে।
ReplyDelete1000000000000000000000000000000000000000000000 shubder
Deletevery nice
ReplyDeleteThanks
😄🇧🇩
😊
ReplyDelete
ReplyDeletethanks😊
very very nice
ReplyDeleteIt’s helpful for us.
ReplyDeleteঅসাধারণ
ReplyDeleteNic
ReplyDeleteNice
ReplyDeletevery nice
ReplyDeleteBeautiful.
ReplyDeleteVery nice.It help me to the complete preparation
ReplyDeleteসুন্দর হয়েছে
ReplyDeletenice
ReplyDeleteভাইয়া আপনারা ভূমিকায় ষষ্ঠ লাইনে সালটি ভুল লিখেছেন অনুগ্রহ করে ঠিক করে দেবেন। উদ্যোগটি প্রশংসনীয়।
ReplyDeleteCorrected Thanks
Deleteরচনা টা পড়ে খুব ভালোলেগেছে
ReplyDeleteখুব ভালো
ReplyDeleteখুব ভালো
ReplyDelete😇😇😇😇😇🇧🇩🇧🇩🇧🇩🇧🇩
ReplyDeleteNice
ReplyDeleteNice
ReplyDeleteমাশাআল্লাহ .আরো বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ ও হাদিস কিতাব এর উক্তি বা বাণী লিখুন .
ReplyDeleteবেশি নাম্বার আসবে ইনশাল্লাহ
Bery nice
ReplyDeleteIt helps me for my armed force essay 🥰🥰🥰🥰
nice post
ReplyDeleteBhalo kintu arektu unnoti dorker
ReplyDeleteVery nice thanks
ReplyDeleteThanks vai onak balo hoyasa
ReplyDeletevlo
ReplyDeleteধন্যবাদ
ReplyDeleteএটি অনেক কার্জকরী