Ad-1

Tuesday, August 8, 2017

রচনাঃ টেলিভিশন


ভূমিকা :
 ‘টেলিভিশন’ এমনই এক জাদুর বাক্স, যা বর্তমান পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষের মধ্যে বিনোদনের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে। বেতার যন্ত্র ও চলচ্চিত্রের পর টেলিভিশনই হচ্ছে অত্যাশ্চর্য আবিষ্কার।
নামকরণ :
ল্যাটিন শব্দ ‘টেলি’ (ঞবষব) এবং ‘ভিসিও’ (ঠরংরড়) থেকে টেলিভিশন শব্দটি এসেছে। ‘টেলি’ শব্দের অর্থ দূরত্ব এবং ‘ভিসিও’ শব্দের অর্থ দেখা। অর্থাৎ যে যান্ত্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে দূরের কোনো দৃশ্যকে দেখতে পাওয়া যায়, তাকে টেলিভিশন বলে।
আবিষ্কার :
জার্মান বিজ্ঞানী পল নিপকও সর্বপ্রথম টেলিভিশন যন্ত্রের উদ্ভাবন সম্পর্কে তাঁর অভিমত ব্যক্ত করেন। এর ওপর ভিত্তি করে ১৯২৫ সালে ইংরেজ বিজ্ঞানী জন বেয়ার্ড টেলিভিশন আবিষ্কার করেন। বহু পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ১৯৪৫ সালে এ যন্ত্রটি পূর্ণরূপ লাভ করে।
সম্প্রচার :
সর্বপ্রথম ব্যবসায়িক ভিত্তিতে টেলিভিশন চালু করে লন্ডনের ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশন (বিবিসি)। আমাদের বাংলাদেশে টেলিভিশন চালু হয়েছে ১৯৬৫ সালে। প্রথমে ঢাকার ডিআইটি (রাজউক) ভবন থেকে টেলিভিশনের সম্প্রচার শুরু হয়। পরে চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুর, খুলনা ও ময়মনসিংহে উপকেন্দ্র স্থাপিত হওয়ায় সমগ্র বাংলাদেশ টেলিভিশন প্রচারের আওতায় এসেছে। ১৯৯৬ সালে চট্টগ্রামে পূর্ণাঙ্গ টেলিভিশন ভবন নির্মিত হয়েছে এবং সেখানে একটি পৃথক কেন্দ্র চালু হয়েছে।
টেলিভিশনের ব্যবহার :
টেলিভিশন প্রায় সব দেশেই ব্যাপকভাবে প্রচলিত। আমাদের দেশে টেলিভিশন মূলত খবর ও বিনোদনের মাধ্যম হিসেবেই কাজ করছে। স্যাটেলাইট টিভি ও ডিশ অ্যান্টেনার মাধ্যমে এ দেশের টিভি দর্শকরা বিনোদনের অনেক সুযোগ পাচ্ছে।
টেলিভিশনে শিক্ষা :
শিক্ষার্থীদের দিকনির্দেশনা, বিষয়ভিত্তিক দক্ষতা বৃদ্ধি, ভাষা শিক্ষা প্রভৃতি ক্ষেত্রে টেলিভিশন শিক্ষকের মতো ভূমিকা পালন করছে। দেশের আপামর জনগোষ্ঠীকে গণশিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় আনার ক্ষেত্রে টেলিভিশনের কার্যকারিতা অনেক।
জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম :
বর্তমান বিশ্বের প্রচারমাধ্যম হিসেবে টেলিভিশন বিশেষ স্থান করে নিয়েছে। তথ্যের পাশাপাশি ছবি ও সংলাপ সরাসরি প্রচার করে এটি। সারা বিশ্বের মানুষ বস্তুনিষ্ঠ ও নির্ভরযোগ্য সংবাদমাধ্যম হিসেবে এ যন্ত্রের ওপর ক্রমে নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে।
উপকারিতা :
 টেলিভিশন থেকে আমরা বহু উপকার পেয়ে থাকি। আমাদের কৃষিপ্রধান দেশে কৃষির মান উন্নয়নে টেলিভিশন রাখছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। দেশের জনগণকে সচেতন ও দায়িত্বশীল হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আমাদের টেলিভিশন এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে। জনসংখ্যা ও বেকার সমস্যা মোকাবেলা করায় টেলিভিশন বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে গণসচেতনতা সৃষ্টি করেছে। স্বাস্থ্য সম্পর্কেও প্রদান করছে বিশেষ জ্ঞান। দেশ-বিদেশের খবর প্রচার ছাড়াও সাংস্কৃতিক চেতনা বিকাশে যেমন—সংগীত, নৃত্য, আবৃত্তি, বিতর্ক, নাটক ইত্যাদিতে রাখছে অনন্য ভূমিকা।
অপকারিতা :
 সুষ্ঠু ও সুচারুভাবে যদি টেলিভিশনকে পরিচালিত না করা হয়, তাহলে পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে এর কুফল দেখা দেয়। কুরুচিপূর্ণ নাচ, গান, নাটক ইত্যাদি জনগণের নৈতিক চরিত্রের স্খলন ঘটায়। অতিরিক্ত টেলিভিশন দেখলে ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার যথেষ্ট ক্ষতি হয় এবং দৃষ্টিশক্তিরও অপচয় সাধিত হয়।
উপসংহার :
 বর্তমানে টেলিভিশন বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রচারমাধ্যম। তাই আমাদের টেলিভিশনের অনুষ্ঠানের মান আরো বাড়াতে হবে।

No comments:

Post a Comment

Recent Post

ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯

১. ‘ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ ’ কবিতায় সালামের হাতে কেন অবিনাশী বর্ণমালা ঝরে ? ক. সংগ্রামী চেতনার কারণে     খ. দুঃখিনী মাতার অশ্রুজল দেখে গ. বরকত...

Most Popular Post