Ad-1

Monday, January 7, 2019

রিট কি? কত প্রকার ও কি কি?

বাংলাদেশের আইন ব্যাবস্থা রীট কি(WhatisWrit) ?রীট কত প্রকার ও কি কি?

রীট (Writ) শব্দের অর্থ হল আদালত বা যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ঘোষিত বিধান বা আদেশ। রীটের উৎপত্তি ও বিকাশ ইংল্যান্ডে। প্রথমে রীট ছিল রাজকীয় বিশেষাধিকার(royal prerogative)। রাজা বা রানী বিচারের নির্ধারক হিসাবে (fountainofjustice)রীট জারী করতে পারত। একমাত্র রাজা বা রানীর রীট জারী করার অধিকার ছিল বলে একে প্রথমে বিশেষাধিকার রীট বলা হত। রাজা বা রানী তাদের কর্মচারী বা অফিসারদের কার্যবালি পালনে বাধ্যকরার জন্য বা কোন অবৈধ কাজ হতে বিরত রাখার জন্য রীট জারী করতেন।পরবর্তি কালে রাজা বা রানীরএই বিশেষাধিকার নাগরিকদের অধিকারে চলে আসে। নাগরিকগণ সরকারী কর্মকর্তাদের আচরণ ও কাজে ক্ষুদ্ধ হয়ে রাজার কাছে আসত এবং রাজা বা রানী তাদের বিশেষ অধিকার বলে রীট জারী করত।
পরবর্তি কালে রাজা বা রানীর প্রতিনিধি হিসাবে ইংল্যান্ডে দু’ধরনের আদালত গঠিত হয়।
যেমন, চ্যান্সারী আদালত (court of chancery) এবং কিংস বেঞ্চ(kings bench) এসব আদালত নাগরিকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে রীট জারী করত।
বাংলাদেশের সংবিধান হাইকোর্ট বিভাগকে শুধুমাত্র একটি ক্ষেত্রে আদি এখতিয়ার দিয়েছে, সেটি হল রীট জারীর এখতিয়ার।
সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগ কারো মৌলিক অধিকার লংঘিত হলে তা বলবৎ করতে পারে এবং বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনাকে কার্যকর করতে পারে।হাইকোর্ট বিভাগের এই এখতিয়ারকে রীট জারীর এখতিয়ার বলে। অর্থাৎ রীট শুধু মাত্র হাইকোর্ট বিভাগ জারী করতে পারে।কারো মৌলিক অধিকার লংঘিত হলে সংবিধানের৪৪ অনুচ্ছেদ প্রদত্ত অধিকার বলে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে মৌলিক অধিকার বলবত করার জন্য রীট পিটিশন দায়ের করতে পারে এবং হাইকোর্ট বিভাগ ১০২ অনুচ্ছেদ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মৌলিক অধিকার বলবত করার জন্য কতিপয় আদেশ-নির্দেশ জারী করতে পারে, তাকে রীট বলে।
বিভিন্ন প্রকারের রীটঃ পাঁচ ধরনের রীট রয়েছে।যেমনঃ
পাঁচ ধরনের রিট আছে:

১। বন্দী প্রদর্শন রিট (Writ of habeas corpus) :

কোনো ব্যক্তিকে সরকার বা অন্য কেউ আটক করলে কি কারণে তাকে আটক করা হয়েছে তা জানার জন্য বন্দীকে আদালতে হাজির করার যে নির্দেশ দেওয়া হয় তাই বন্দী প্রদর্শন রিট।

২। পরমাদেশ বা হুকুমজারি রিট(Writ of mandamus):

কোনো অধ:স্তন আদালত, ট্রাইব্যুনাল, ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি তার আইনগত দায়িত্ব পালন করতে অস্বীকার করে কিংবা ব্যর্থ হয় তাহলে উচ্চতর আদালত যে আদেশের মাধ্যমে উক্ত আইনগত দায়িত্ব পালন করতে উক্ত আদালত বা ট্রাইব্যুনালকে বাধ্য করে তাকে হুকুমজারী রিট বা পরমাদেশ বলে।

৩। নিষেধাজ্ঞামূলক রিট(Writ of prohibition) :

কোনো অধস্তন আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা কোনো কর্তৃপক্ষ, সংস্থা বা ব্যক্তি তার এখতিয়ার বর্হিভূত কাজ করতে উদ্দ্যত হয়েছে কিংবা ন্যায় নীতি ভঙ্গ করতে যাচ্ছে। এ অবস্থায় উচ্চতর আদালত যে আদেশের মাধ্যমে উক্ত ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষকে ঐ কাজ করা থেকে বিরত রাখেন তাকে নিষেধাজ্ঞামূলক রিট বলে। নিষেধাজ্ঞামূলক রিটকে বিচার বিভাগীয় রিটও বলা হয়।

৪। উৎপ্রেষণ রিট(Writ of certiorari) :

দুটি উদ্দেশ্যে উচ্চতর আদালত উৎপ্রেষণ রিট জারী করতে পারে- ক) অধ:স্তন কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা ব্যক্তি বা সংস্থা কর্তৃক কৃত ক্ষমতা বহির্ভূত কাজকে বাতিল বা নাকচ করে দেয়া। খ) অধ:স্তন আদালত বা ট্রাইব্যুনালের কোনো মামলা শুনানীর জন্য উচ্চতর আদালত নিজেই গ্রহণ করে এ রিট জারী করতে পারে।

৫। কারণ দর্শাও রিট(Writ of quo-warranto).:

কোনো ব্যক্তি যদি এমন কোনো সরকারি পদ দাবী করে, যে পদের যোগ্যতা তার নাই অথবা অবৈধভাবে যদি কোনো সরকারি পদ দখল করে বসে থাকে, তাহলে উচ্চতর আদালত যে আদেশের মাধ্যমে উক্ত ব্যক্তিকে তার পদ দখলের বা দাবীর কারণ দর্শাও নির্দেশ দিয়ে থাকে তাকে কারণ দর্শাও রীট বলে।

No comments:

Post a Comment

Recent Post

ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯

১. ‘ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ ’ কবিতায় সালামের হাতে কেন অবিনাশী বর্ণমালা ঝরে ? ক. সংগ্রামী চেতনার কারণে     খ. দুঃখিনী মাতার অশ্রুজল দেখে গ. বরকত...

Most Popular Post