Ad-1

Sunday, April 7, 2019

দেওয়ানী কার্যবিধি প্রাথমিক আলোচনাঃ

দেওয়ানী কার্যবিধি-১৯০৮
Code of Civil Procedure-1908
প্রাথমিক আলোচনাঃ
»দেওয়ানী কার্যবিধি ১৮৫৯ সালে প্রথম প্রণয়ন করা হয়।যা পাশ হয় ১৯০৮ সালের ২১ মার্চ। তবে এর কিছু ধারা ও আদেশে প্রতিকারের বিধান রয়েছে বিধায় এটিকে পদ্ধতিগত আইন (Procedural Law) বলা হয়। ১৮৮২ সালে দেওয়ানি কার্যবিধি নামে একটি আইন ছিল, যার কোন আদেশ ছিল না। ধারা ছিল ৬৫৩টি এবং বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে ২৬ মার্চ দেওয়ানী কার্যবিধি কার্যকর করা হয়।
মনে রাখা প্রয়োজনঃ
»দেওয়ানী কার্যবিধি সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০১২সালে।
এক নজরেঃ
ইংরেজি নাম- Code of Civil Procedure
১৯০৮ সালের ৫নং আইন
কার্যকাল- ১লা জানুঃ ১৯০৯
মোট ধারা- ১৫৮টি
আদেশ- ৫১টি
তফসিল- ৫টি
অধ্যায়- ১১টি
পদ্ধতিগত আইন (Procedural Law)

আইনের প্রকৃতিঃ সাধারণত আইনের প্রকৃতি ২ ধরনের-
১। পদ্ধতিগত আইন (Procedural Law)
২। তত্ত্বগত আইন (Substantive Law)

পদ্ধতিগত আইনঃ
»যে আইনে কোন মোকদ্দমা বা মামলার বিচার করার পদ্ধতি অর্থাৎ মামলা দায়ের থেকে শুরু করে চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত যে নিয়ম বা পদ্ধতিঅনুসরণের উল্লেখ থাকে সেই নিয়ম সংশ্লিষ্ট আইনকে পদ্ধতিগত আইন বলে।
[যেমন] ফৌজদারী কার্যবিধি, দেওয়ানী কার্যবিধি,সাক্ষ্য আইন, তামাদি আইন।
তত্ত্বগত আইনঃ
»যে আইনে কোনো অধিকার বা শাস্তিকে সংজ্ঞায়িত করে সেই আইনকে তত্ত্বগত আইন বলে।
[যেমন] দন্ডবিধি, সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন।দেওয়ানী কার্যবিধিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়-
ধারা ও আদেশ।

মনে রাখা প্রয়োজনঃ
»ধারাতে বলা আছে ক্ষমতার কথা পক্ষান্তরে আদেশে বলা আছে পদ্ধতির কথা।
»ধারা পরিবর্তন করতে পারে জাতীয় সংসদ,পক্ষান্তরে আদেশ পরিবর্তন করতে পারে মহামান্য হাইকোর্ট।
সংজ্ঞাসমূহ (Definitions)
[ধারা ২(১)] বিধি
[ধারা ২(২)] ডিক্রি
[ধারা ২(৩)] ডিক্রিদার
[ধারা ২(৪)] জেলা
[ধারা ২(৫)] বিদেশী আদালত
[ধারা ২(৬)] বিদেশী রায়
[ধারা ২(৭)] সরকারি উকিল
[ধারা ২(৮)] বিচারক
[ধারা ২(৯)] রায়
[ধারা ২(১০)] সাব্যস্ত দেনাদার
[ধারা ২(১১)] বৈধ প্রতিনিধি
[ধারা ২(১২)] অন্তর্বর্তীকালীন মুনাফা
[ধারা ২(১৩)] অস্থাবর সম্পত্তি
[ধারা ২(১৪)] আদেশ
[ধারা ২(১৫)] উকিল
[ধারা ২(১৭)] সরকারি কর্মকর্তা
[ধারা ২(১৮)] নিয়মাবলী
[ধারা ২(১৯)] কর্পোরেশনের শেয়ার
ধারা ২(২০)] স্বাক্ষর
[আদেশ ১(১)] (বাদি) যিনি আরজি দাখিলের মাধ্যমে নালিশ দায়ের করেন।
[আদেশ ১(৩)] (বিবাদি) যিনি জবাব দাখিল করেন।
[আদেশ ৪(১)] আরজি যে পদ্ধতিতে দাখিল করা হয়।
মোকদ্দমার পক্ষসমূহঃ
[আদেশ ১] দেওয়ানী মোকদ্দমায় সাধারণত ২ ধরনের পক্ষ থাকে-
» বাদি পক্ষ এবং
» বিবাদী পক্ষ।

মোকদ্দমার পক্ষভুক্তঃ
একটি দেওয়ানী মোকদ্দমার এক বা একাধিক বাদি বা বিবাদী থাকতে পারে-
»যিনি মোকদ্দমা দায়ের করেন তা হলো বাদী এবং
»যার বিপক্ষে মোকদ্দমা দায়ের করা হয় তা হলো বিবাদী
মনে রাখা প্রয়োজনঃ
» যার বিপক্ষে কোন প্রতিকার চাওয়া হয় না, তবে মোকদ্দমা নিষ্পত্তির জন্য তার উপস্থিতি প্রয়োজন তাকে বলা হয় মোকাবিলা বিবাদী।

উল্লেখ্য,
»মোকদ্দমার প্রয়োজনীয় পক্ষ
»মোকদ্দমার যথাপোযুক্ত পক্ষ।
মোকদ্দমার প্রয়োজনীয় পক্ষঃ
»মোকদ্দমায় কোন ব্যক্তির উপস্থিতি একান্ত প্রয়োজন এবং উক্ত উপস্থিতি ছাড়া কোন ডিক্রি দেওয়া যায় না তা হলো মোকদ্দমার প্রয়োজনীয় পক্ষ।
মোকদ্দমার যথাপোযুক্ত পক্ষঃ
»কোন মোকদ্দমায় কোন ব্যক্তির উপস্থিতি ছাড়া আদালত কার্যকরী কোন আদেশ দিতে পারে, কিন্তু পূর্নাঙ্গ বা চূড়ান্ত রায় দিতে পারে না তা হলো
মোকদ্দমার যথাপোযুক্ত পক্ষ।

[আদেশ ১(৯)] ভ্রান্তভাবে পক্ষভূক্ত করা বা না করা-
»পক্ষ-সমূহের অপসংযোগ।
»পক্ষ-সমূহের অসংযোগ।
উল্লেখ্য,
»যাদের পক্ষভূক্তির প্রয়োজন ছিল না, অথচ পক্ষভূক্ত করা হয়েছে তা পক্ষ-সমূহের অপসংযোগ।
»যাদের পক্ষভূক্তির প্রয়োজন ছিল, অথচ পক্ষভূক্ত করা হয়নি তা পক্ষ-সমূহের অসংযোগ।

[ধারা ২(২)] ডিক্রি
»ডিক্রি হলো আদালতের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত, যেটা চূড়ান্তভাবে মোকদ্দমার তর্কিত বিষয় নিয়ে পক্ষদ্বয়ের অধিকার নির্ণয় করে।ডিক্রি ২ প্রকার-
»প্রাথমিক ডিক্রি (Preliminary Decree)
»চূড়ান্ত ডিক্রি (Final Decree)
উল্লেখ্য,
»ডিক্রি তখনই প্রাথমিক হয়, যখন মামলা চূড়ান্ত নিষ্পত্তির জন্য আরও ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন থাকে।
»মামলা যখন চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হয়, তখন তাকে চূড়ান্ত ডিক্রি বলে।

মনে রাখা প্রয়োজনঃ
»আরজি নাকচ বা খারিজ ও ১৪১ ধারার প্রত্যার্পণের আদেশ ডিক্রির সমতুল্য।
»আরজির মাধ্যমে একটি দেওয়ানি মোকদ্দমা দায়ের করা হয় এবং ডিক্রির মাধ্যমে তা নিষ্পত্তি হয়।

[ধারা ২(৩)] ডিক্রিদার
»আদালত যার পক্ষে ডিক্রি প্রদান করেন তাকে ডিক্রিদার বলে।
মনে রাখা প্রয়োজনঃ
»আদালত যার বিপক্ষে ডিক্রি প্রদান করেন তাকে ডিক্রিদায়িক বলে।
[ধারা ২(৯)] রায়
»ডিক্রি বা আদেশ দেওয়ার জন্য আদালত যে যুক্তি প্রদর্শন করে তা হলো রায়।
মনে রাখা প্রয়োজনঃ
»ডিক্রির মূল ভিত্তি হলো রায়।
»রায় প্রদানের ৭ দিনের মধ্যে ডিক্রি প্রদান করতে হবে।
»আরজি দাখিল হতে ডিক্রির আগ পর্যন্ত সবই রায়।
[ধারা ২(৮)] বিচারক
»জজ অর্থ দেওয়ানি আদালতে সভাপতিত্বকারী অফিসার।
»মূল এখতিয়ার সম্পন্ন প্রধান দেওয়ানী আদালতে সভাপতিত্বকারি ব্যক্তি।
»আদালতের প্রধান কর্মকর্তা জজ এবং মূল কর্মকর্তা সেরেস্তাদার।
[ধারা ২(১৫)] উকিল
»অন্যের পক্ষে হাজির হয়ে যুক্তিতর্কের পেশ করার অধিকারী কোন ব্যক্তিকে উকিল বলে।
»মুক্তারও উকিলের অন্তর্ভূক্ত হবে। মোক্তার হলো ৭ বৎসর কোন ব্যক্তি কোন আইনজীবির সহিত আইন বিষয় পরিচালনা করেন।
[ধারা ২(৭)] সরকারি উকিল
»সরকারের ক্ষমতাপ্রাপ্ত সরকারের পক্ষে যিনি মামলা পরিচালনা করেন তাকে সরকারি উকিল বলে।
মনে রাখা প্রয়োজনঃ
»শুধুমাত্র দেওয়ানি মোকদ্দমার ক্ষেত্রে GP বলে।
[ধারা ২(১৪)] আদেশ
»আদেশ বলতে কোন দেওয়ানী আদালতের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত যা ডিক্রি নয়। মামলা চলাকালীন আদালত যে সব সিদ্ধান্ত দেন তা আদেশ।
আদেশ ২ প্রকার-
»আপিলযোগ্য আদেশ (Appealable Order)
»আপিলঅযোগ্য আদেশ (Non-Appealable Order)
[ধারা ২(১১)] বৈধ প্রতিনিধি
»বৈধ প্রতিনিধি বলতে সেই ব্যক্তিকে বুঝায় যিনি আইনত মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি পরিচালনা করেন এবং যিনি প্রতিনিধি হিসেবে মামলা করেন

No comments:

Post a Comment

Recent Post

ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯

১. ‘ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ ’ কবিতায় সালামের হাতে কেন অবিনাশী বর্ণমালা ঝরে ? ক. সংগ্রামী চেতনার কারণে     খ. দুঃখিনী মাতার অশ্রুজল দেখে গ. বরকত...

Most Popular Post