আবেগ-শব্দ (Interjection):
আবেগ-শব্দের
সাহায্যে মনের নানা ভাব বা আবেগকে প্রকাশ করা হয়। এ ধরনের শব্দে তীব্র আবেগ, অনুভূতি
ও মনােভাব ব্যক্ত হয়। যেমন : বাহ্! কী চমক্কার রং ! আরে ! আপনি কখন এলেন? প্রথাগত ব্যাকরণে এগুলি অনন্বয়ী, মনােভাববাচক বা
অন্তর্ভাবাত্মক অব্যয় নামে পরিচিত। এ ধরনের শব্দ বাক্যের অন্য পদগুলাের সঙ্গে
সম্পর্কিত না হয়ে আলগা বা স্বাধীনভাবে বাক্যে বসে।
আবেগ-শব্দের
শ্রেণিবিভাগ মানুষের আবেগ বিচিত্র, সব যে শব্দের আকার পায়, তাও নয়। তবু প্রকাশ অনুসারে আবেগ-শব্দকে কয়েক ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন :
১. সিদ্ধান্তবাচক আবেগ-শব্দ (assertive interjection) : এ
ধরনের আবেগ-শব্দের সাহায্যে অনুমােদন, সম্মতি, সমর্থন ইত্যাদি ভাব প্রকাশ করা হয়। যেমন : হুঁ, মনে
হচ্ছে একটা ষড়যন্ত্রের আভাস পাচ্ছি। বেশ, তাহলে রাতেই রওনা
করুন। না, কাউকে আমি এখান থেকে নড়তে দেব না। উঁহু, ওসব ঝামেলাতে আমি নেই।'
২. প্রশংসাবাচক আবেগ-শব্দ (appreciative interjection) : এ
ধরনের আবেগ-শব্দ প্রশংসা প্রকাশে ব্যবহৃত হয়। যেমন : শাবাশ ! একটা খেলার মতাে
খেলা দেখালে। বাঃ! বড় চমৎকার ছবি এঁকেছ তাে।
৩. বিরক্তিসূচক আবেগ-শব্দ (interjection of disgust) : এ ধরনের
আবেগ-শব্দ অবজ্ঞা, ঘৃণা, বিরক্তি ইত্যাদি মনােভাব
প্রকাশে ব্যবহৃত হয়। যেমন : ছিঃ ছিঃ এ তুমি কী বললে ! কী জ্বালা, আর কতক্ষণ অপেক্ষা করব!
৪. ভয় ও যন্ত্রণাবাচক আবেগ-শব্দ (interjection of fear or suffering) : এ
ধরনের আবেগ-শব্দ আতঙ্ক, যন্ত্রণা, কাতরতা
ইত্যাদি প্রকাশ করে। যেমন: উঃ এত অশান্তি কি সহ্য হয় ! আঃ কী কষ্টই না পাচ্ছি!
৫. বিস্ময়সূচক আবেগ-শব্দ (interjection of surprise) : এ
ধরনের আবেগ-শব্দ বিস্মিত বা আশ্চর্য হওয়ার ভাব প্রকাশ করে। যেমন : আরে, তুমি কবে দেশে ফিরলে! অ্যা, বলছ কী? তুমিই লটারি জিতেছ!
৬. করুণাসূচক
আবেগ-শব্দ (interjection of pity) : এ ধরনের আবেগ-শব্দ
করুণা,
সহানুভূতি ইত্যাদি মনােভাব প্রকাশ করে। যেমন : আহা! মা-মরা মেয়েটার
কী কষ্ট! হায়! হায়! এখন ওদের কে দেখবে।
৭. সম্বােধনসূচক আবেগ-শব্দ (vocative interjection) : এ ধরনের
আবেগ-শব্দ সম্বােধন বা আহ্বান করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। যেমন : হে বন্ধু , তােমাকে
অভিনন্দন। ওরে, তুই কোথায় চললি?
৮. আলংকারিক আবেগ-শব্দ (figurative interjection) : এ
ধরনের আবেগ-শব্দ বাক্যের অর্থের পরিবর্তন না ঘটিয়ে কোমলতা, মাধুর্য
ইত্যাদি।
No comments:
Post a Comment