আমিরুল মুমিনিন উমর ফারুক রা.-এর শাসনামল।
এক মহিলার স্বামী বিদেশ চলে যায়। এর কিছুদিন পর দেখা যায় মহিলা গর্ভবতী। প্রতিবেশীরা মহিলাকে সন্দেহ করতে থাকে যে, সে জিনা করে গর্ভবতী হয়েছে। সমাজের লোকজন গিয়ে আমিরুল মুমিনিনের কাছে অভিযোগ করেন। উমর রা. মহিলাকে ডেকে পাঠান। মহিলার জবানবন্দিতে তিনি সন্তুষ্ট হতে পারলেন না। স্বামীর বিদেশ যাওয়ার সময় মিলিয়ে মহিলাকে জিনাকারীই সাব্যস্ত করা হলো। রায় দেওয়া হলো মৃত্যুদণ্ডের।
মুআজ ইবনে জাবাল রা. বাধ সাধলেন। বললেন--আমিরুল মুমিনিন, আপনি মহিলাকে তার দোষে মৃত্যুদণ্ড দিতে পারেন। কিন্তু তার পেটে থাকা শিশুর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের অধিকার তো আপনার নেই।
মুআজ রা.-এর সংশোধনীর পরিপ্রেক্ষিতে উমর রা. মহিলাকে সন্তান প্রসব ও দুগ্ধদান পর্যন্ত অবকাশ দিলেন।
যথাসময়ে মহিলা সন্তান প্রসব করলেন এবং সে কিছুটা বড়ো হলো। ইত্যবসরে মহিলার স্বামী বিদেশ থেকে ফিরে এসে দেখলেন, তার স্ত্রীর ঘরে একটি পুত্র সন্তান। শিশুটি অবিকল তার মতোই হয়েছে।
সে তার স্ত্রীর বিচার ও দণ্ডের কথা জেনে শিশুটিকে কোলে নিয়ে আমিরুল মুমিনিনের কাছে এলেন। সকলেই দেখল, শিশুটি অবিকল তার পিতার চেহারা পেয়েছে। লোকটি বললেন, আমিরুল মুমিনিন! আল্লাহর কসম! এ তো আমারই ছেলে!
উমর রা. রায় পরিবর্তন করে মহিলাকে বেকসুর খালাস দিলেন এবং বললেন--“মুআজ না থাকলে উমর ধ্বংস হয়ে যেত!”
সাইয়িদুনা উমর ফারুক রা.-এর জীবনের অন্তিম মুহূর্ত যখন ঘনিয়ে এলো, শাহাদাতের পেয়ালা যখন তাঁর সামনে উপস্থিত, তখন লোকেরা পরবর্তী খলিফা মনোনয়নের বিষয়টি তাঁর সামনে উত্থাপন করেন। তিনি বলেন--
“আজ যদি মুআজ ইবনে জাবাল বেঁচে থাকতেন, আমি তাঁকেই খলিফা বানিয়ে যেতাম। আল্লাহ তায়ালা আমাকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বলতাম, আমি এমন এক ব্যক্তিকে খলিফা বানিয়ে এসেছি, যার ব্যাপারে রাসূল সা. বলেছেন, কিয়ামতের দিন সকল আলিমের চেয়ে মুআজ ইবনে জাবাল দুই তির নিক্ষেপের দূরত্ব পরিমাণ সামনে প্রাগ্রসর থাকবে।”
No comments:
Post a Comment