Ad-1

Tuesday, October 30, 2018

শুদ্ধ-অশুদ্ধির প্রয়োগ-০২

 ১১.কারকের মাধ্যমে ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ:

বস্তুর প্রাণিবাচক শব্দে ‘কে’ বসে না। ব্যক্তির নামের সঙ্গেও ‘কে’ বসে না।কারকের ভুল ব্যবহারের মাধ্যমে ভাষার প্রয়োগ ও অপপ্রয়োগ ঘটানো হয়। যেমন:
১. সাপুড়ে সাপকে খেলায়।
শুদ্ধবাক্য : সাপুড়ে সাপ খেলায়।
২. একসময় আমের কাননে মিটিং বসেছিল।
শুদ্ধবাক্য : একসময় আম্রকাননে মিটিং বসেছিল।/একসময় আমের বাগানে মিটিং বসেছিল।
১২.সমোচ্চারিত শব্দের মাধ্যমে ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ:
সমোচ্চারিত শব্দের ভুল ব্যবহারের মাধ্যমে ভাষার প্রয়োগ ও অপপ্রয়োগ ঘটানো হয়। যেমন:
১. তাড়া আমরাতলায় বসে আমরা খাওয়ার সময় মালির তারা খেয়েছে।
শুদ্ধবাক্য : তারা আমড়াতলায় বসে আমড়া খাওয়ার সময় মালির তাড়া খেয়েছে।
২. সে ভুড়ি ভুড়ি খেয়ে ভুরিটি বাড়িয়েছে।
শুদ্ধবাক্য : সে ভুরি ভুরি খেয়ে ভুঁড়িটি বাড়িয়েছে।
১৩.শব্দদ্বিত্বের মাধ্যমে ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ:
ফলাফল/ফলে শব্দটি ঠিক ব্যবহার কিন্তু এর প্রতিশব্দ হিসেবে লেখা হয় ফলশ্রুতিতে’ তাহলে শব্দটি হবে ভুল। কারণ ‘ফলশ্রুতি’র ‘শ্রবণ’ কোন বিষয়ের ফল নয়। শব্দদ্বিত্বের ভুল ব্যবহারের মাধ্যমে ভাষার প্রয়োগ ও অপপ্রয়োগ ঘটানো হয়। যেমন:
১. ঘামজলে তার শার্ট ভিজে গেছে।
শুদ্ধবাক্য : ঘামে তার শার্ট ভিজে গেছে।
২. অশ্রুজলে তার কপল ভিজে গেছে।
শুদ্ধবাক্য : অশ্রুতে তার কপল ভিজে গেছে।
৩. ঘরটি ছিমছিমে অন্ধকার।
শুদ্ধবাক্য : ঘরটি ঘুটঘুটে অন্ধকার।

১৪.ভুল শব্দ ব্যবহারের মাধ্যমে ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ:
শব্দের পরে আরো শব্দ বসে শব্দেকে সঠিক করে অথবা বেশি শব্দ বসালে বাক্যটি ভুল হয়ে যায়। এভাবে অতিরিক্ত শব্দ ব্যবহারের মাধ্যমে ভাষার প্রয়োগ ও অপপ্রয়োগ ঘটানো হয়। যেমন:
১. পরবর্তীতে আপনি আসবেন।
শুদ্ধবাক্য : পরবর্তিকালে /পরবর্তী সময়ে আপনি আসবেন।
২. আমি অপমান হয়েছি।
শুদ্ধবাক্য : আমি অপমানিত হয়েছি।
৩. সূর্য উদয় হয়নি।
শুদ্ধবাক্য : সূর্য উদিত হয়নি।
৪. সত্য প্রমাণ হোক।
শুদ্ধবাক্য : সত্য প্রমাণিত হোক।
৬ তার কথার মাধুর্যতা নাই।
শুদ্ধবাক্য : তার কথার মাধুর্য/মধুরতা নাই।
৫. রাধা দেখতে খুব সুন্দরী ছিল।
শুদ্ধবাক্য : রাধা দেখতে খুব সুন্দর ছিল।
৬. এটি অপক্ক হাতের কাজ।
শুদ্ধবাক্য : এটি অপটু হাতের কাজ।
৭. স্বল্পবিদ্যা ভয়ংকরী।
শুদ্ধবাক্য : অল্পবিদ্যা ভয়ংকরী।
৮. অভাবে চরিত্র নষ্ট।
শুদ্ধবাক্য : অভাবে স্বভাব নষ্ট।
৯. বিদ্বান মূর্খ অপেক্ষা শ্রেষ্ঠতর।
শুদ্ধবাক্য : বিদ্বান মূর্খ অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।
১০. ছেলেটি শুধুমাত্র /কেবলমাত্র ১০টি টাকার জন্য মারামারি করল।
শুদ্ধবাক্য : ছেলেটি শুধু /মাত্র /কেবল ১০টি টাকার জন্য মারামারি করল।
১১. রবীন্দ্রনাথ ভয়ঙ্কর কবি ছিলেন।
শুদ্ধবাক্য : রবীন্দ্রনাথ বিখ্যাত কবি ছিলেন।
১৫. বাচ্যের মাধ্যমে ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ:

১. সূর্য পূর্বদিকে উদয় হয়।
শুদ্ধবাক্য : সূর্য পূর্বদিকে উদিত হয়।
২. আপনার কি মনে হয় না, বিধি লঙ্ঘন হয়েছে।
শুদ্ধবাক্য : আপনার কি মনে হয় না, বিধি লঙ্ঘিত হয়েছে।
৩. আপনার কাজের জন্য দেশের গৌরব লোপ পেয়েছে।
শুদ্ধবাক্য : আপনার কাজের জন্য দেশের গৌরব লুপ্ত হয়েছে।
১৬.এককথায় প্রকাশের মাধ্যমে ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ:
১. পারলে চারিদিকে প্রদক্ষিণ করো।
শুদ্ধবাক্য : পারলে চারিদিকে ঘোরো।/পারলে প্রদক্ষিণ করো।
১. সে হাতে কলমে ব্যবহারিক শিক্ষা গ্রহণ করেছে।
শুদ্ধবাক্য : সে হাতেকলমে শিক্ষা গ্রহণ করেছে। /সে ব্যবহারিক শিক্ষা গ্রহণ করেছে।
১৭.প্রবাদের মাধ্যমে ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ:
১. স্বল্প বিদ্যা ভয়ংকরী।
শুদ্ধবাক্য : অল্প বিদ্যা ভয়ংকরী।
২. আমি বাঁচলে বাপের নাম।
শুদ্ধবাক্য : আপনি বাঁচলে বাপের নাম।
৩. অনেক সন্ন্যাসিতে গাজন নষ্ট।
শুদ্ধবাক্য : অধিক সন্ন্যাসিতে গাজন নষ্ট।
৪. বেশি চালাকের গলায় দড়ি।
শুদ্ধবাক্য : অতি চালাকের গলায় দড়ি।
১৮.বাগধারার মাধ্যমে ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ:
১. পরীক্ষায় নকল করাও নদী চুরি।
শুদ্ধ : পরীক্ষায় নকল করাও পুকুর চুরি।
২. এমন লেখাপড়া করলে পরীক্ষায় মুরগির ডিম পাবা।
শুদ্ধ : এমন লেখাপড়া করলে পরীক্ষায় ঘোড়ার ডিম পাবা।
৩. গরুর ঘাস কাটো, পরীক্ষায় ভালো করতে পারলে না।
শুদ্ধ: ঘোড়ার ঘাস কাটো, পরীক্ষায় ভালো করতে পারলে না।
৪. একের লাঠি দশের বোঝা। 
শুঃ- দশের লাঠি একের বোঝা।
৫. দশচক্রে ঈশ্বর ভূত।
শুঃ- দশ চক্রে ভগবান ভূত।
৬. ঊনো ভাতে কুনো বল,ভরা পেটে জগদ্দল।
শুঃ- উন ভাতে দুনা বল, ভরা পেটে রসাতল।
৭. আমি তখনই বলেছিলাম যে কাঙালের কথা দেরিতে ফলে।
শুঃ- আমি তখনই বলেছিলাম যে কাঙালের কথা বাসি হলে ফলে।
৮. করিম স্বচ্ছ জলে মাছ শিকার করতে চায়।
শুঃ- করিম ঘোলা জলে মাছ শিকার করতে চায়।
৯. কথায় বলে মোটা বাঁশ ঘুন ধরে।
শুঃ- কথায় বলে কাঁচা বাঁশ ঘুন ধরে।
১০. সারা জীবন ভূতের মজুরি খেটে মরলাম।
শুঃ- সারা জীবন ভূতের বেগার খেটে মরলাম।
১১. মনে রেখো,এক পৌষে শীত যায় না।
শুঃ- মনে রেখো, এক মাঘে শীত যায় না।

No comments:

Post a Comment

Recent Post

ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯

১. ‘ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ ’ কবিতায় সালামের হাতে কেন অবিনাশী বর্ণমালা ঝরে ? ক. সংগ্রামী চেতনার কারণে     খ. দুঃখিনী মাতার অশ্রুজল দেখে গ. বরকত...

Most Popular Post