উত্তর : বিশেষ্যের পরিবর্তে যে শব্দ ব্যবহৃত হয়, তাকে সর্বনাম বলে।যেমন—উর্মি একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। সে নিয়মিত কলেজে যায়। তার একটি ল্যাপটপ আছে।
সর্বনামকে প্রধানত তিনটি মানদণ্ডের ভিত্তিতে ভাগ করা যায়। যথা—
১. অর্থগতভাবে
২. অন্বয়গতভাবে এবং
৩. পক্ষভেদে।
১. অর্থগতভাবে সর্বনামের শ্রেণিবিভাগ—
ক. ব্যক্তিবাচক সর্বনাম : যে সর্বনাম বাক্যের পক্ষ বা পুরুষ নির্দেশ করে, তাকে ব্যক্তিবাচক সর্বনাম বলে। যেমন—আমি, আমার, তুমি তোমার, সে, তোমরা, তারা, তিনি ইত্যাদি।
খ. আত্মবাচক সর্বনাম : কর্তা নিজেই কোনো কাজ করেছে—এ ভাবটি জোর দিয়ে বোঝানোর জন্য যে সর্বনাম ব্যবহৃত হয়, তাকে আত্মবাচক সর্বনাম বলে। যেমন—স্বয়ং নিজে, খোদ, স্ব স্ব, আপনি ইত্যাদি।
গ. পারস্পরিক সর্বনাম : দুই পক্ষের সহযোগ বা পারস্পরিকতা বোঝাতে যে সর্বনাম ব্যবহৃত হয়, তাকেই পারস্পরিক সর্বনাম বলে। যেমন—পরস্পর পরিচিত। ওরা নিজেরা নিজেরাই সমস্যা মিটিয়ে ফেলবে।
ঘ. সকলবাচক সর্বনাম : ব্যক্তি, বস্তু বা ভাবের সমষ্টি বোঝাতে যে সর্বনাম ব্যবহৃত হয়, তাকেই সকলবাচক সর্বনাম বলে। যেমন—সবাই কফি খেতে চাচ্ছে। সকলেই সাহায্য পেয়েছে।
ঙ. অন্যবাচক সর্বনাম : নিজ ভিন্ন অন্য কোনো অনির্দিষ্ট ব্যক্তিকে বোঝাতে যে সর্বনাম ব্যবহৃত হয়, তাকেই অন্যবাচক সর্বনাম বলে। যেমন—অপরে পারলে তুমি কেন পারবে না? অন্যের কথা বলো না।
চ. নির্দেশক সর্বনাম : যে সর্বনাম বক্তার নিকট থেকে কাছের বা দূরের কিছু নির্দেশ করে, তাকে নির্দেশক সর্বনাম বলে। যেমন—এ, ও, ইনি, উনি ইত্যাদি।
ছ. অনির্দিষ্ট সর্বনাম : অনির্দিষ্ট বা পরিচয়হীন কোনো কিছু বোঝাতে যে সর্বনাম ব্যবহার করা হয়, তাকে অনির্দিষ্ট সর্বনাম বলে।যেমন—এখানে কেউ নেই। আমার কিছু বলার নেই।
২. অন্বয়গতভাবে সর্বনামের শ্রেণিবিভাগ—
ক. প্রশ্নবাচক সর্বনাম : প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রশ্নের জন্য যে সর্বনাম ব্যবহৃত হয়, তাকে প্রশ্নবাচক সর্বনাম বলে। যেমন—কে যাবে? কারা খাবে?
খ. সংযোগবাচক সর্বনাম : যে সর্বনাম দ্বারা দুটি বাক্যে সংযোগ ঘটানো হয়, তাকে সংযোগবাচক সর্বনাম বলে। যেমন—হাটে গিয়ে দেখি যে, সে চলে গেছে। আমি বলি কী, তুই আজ থেকেই যা।
গ. সাপেক্ষ সর্বনাম : পরস্পর নির্ভরশীল যে যুগল সর্বনাম দুটি বাক্যাংশের সংযোগ ঘটায়, তাদের সাপেক্ষ সর্বনাম বলে। যেমন—যত চাও তত লও। যার কাজ তারই সাজে। যেমন কর্ম তেমন ফল।
৩. পক্ষভেদে সর্বনামের শ্রেণিবিভাগ—
ক. বক্তাপক্ষ : যে সর্বনাম দ্বারা বাক্যের বক্তা ও তার সমগোত্রীয়দের নির্দেশ করা হয়, তা এই শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত। যেমন—আমি, আমরা, আমাকে, আমাদিগকে, আমার, আমাদের, মোর, মোরা ইত্যাদি।
খ. শ্রোতাপক্ষ : যে সর্বনাম দ্বারা বক্তার সামনে প্রত্যক্ষভাবে উপস্থিত শ্রোতা ও তার সমগোত্রীয়দের নির্দেশ করা হয়, তা এই শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত। যেমন—তুই, তুমি, তোরা, তোকে, তোমার, তোমরা, তোমাকে ইত্যাদি।
গ. অন্যপক্ষ : যে সর্বনাম দ্বারা বক্তার সামনে অনুপস্থিত শ্রোতা ও তার সমগোত্রীয়দের নির্দেশ করা হয়, তা এই শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত।যেমন—সে, তারা, তাহারা, তাদের, তাহাকে, তিনি, তাঁকে, তাঁরা, তাঁদের ইত্যাদি।
No comments:
Post a Comment