১. অ-ধ্বনির সংবৃত
উচ্চারণের নিয়ম লেখো পাঁচটি।
উত্তর:
অ-ধ্বনির
সংবৃত উচ্চারণের নিয়ম নিম্নরুপ।যথা:
১. 'অ'অথবা নিহিত 'অ'-ধ্বনির পর ই-কার বা উ-কার হলে, তবে অ-ধ্বনির উচ্চারণ সংবৃত হয়।যথা: অলি>ওলি,কবিতা>কোবিতা,বধু>বোধু ইত্যাদি।
২.'অ'অথবা নিহিত 'অ'-ধ্বনির পর ঋ-কার হলে,তবে
অ-ধ্বনির উচ্চারণ সংবৃত হয়।যথা:কর্তৃপক্ষ>কোর্তৃপকখো
ইত্যাদি।
৩. 'অ'অথবা নিহিত 'অ'-ধ্বনির সঙ্গে র-ফলা হলে, তবে
অ-ধ্বনির উচ্চারণ সংবৃত হয়।যথা:প্রমা>প্রোমা,প্রশ্ন>প্রোসনো ইত্যাদি।
৪.'অ'অথবা নিহিত 'অ'-ধ্বনির পর য-ফলা হলে, তবে
অ-ধ্বনির উচ্চারণ সংবৃত হয়।যথা:অদ্য>ওদদো,পদ্য>পোদদো ইত্যাদি।
৫.'অ'অথবা নিহিত 'অ'-ধ্বনি পর 'জ্ঞ' বা 'ক্ষ' হলে, তবে অ-ধ্বনির উচ্চারণ সংবৃত হয়।যথা:বক্ষ>বোকখো
ইত্যাদি।
***এক বাক্যে সহজে মনে রাখার উপায়:
★অ'-বা নিহিত'অ'
ধ্বনির পর ি/ু/ৃ/্র/্য/জ্ঞ/ক্ষ হলে, অ-ধ্বনির
উচ্চারণ সংবৃত হয়।এবার এটাকে ভেঙ্গে পাঁচটা নিয়ম বের করো।
উল্লেখ্য: নিহিত 'অ'- মানে
ব্যঞ্জন ধ্বনির মধ্যে লুকায়িত 'অ' - কে
বুঝায়।যেমন: ন=ন্+অ,প=প্+অ ইত্যাদি।
২. অ-ধ্বনির বিবৃত
উচ্চারণের নিয়ম লেখো পাঁচটি।
উত্তর
'অ' ধ্বনির উচ্চারণ অ-এর মতো হলে তাকে অ-বিবৃত বা স্বাভাবিক উচ্চারণ
বলে।অ-ধ্বনির বিবৃত উচ্চারণে ঠোঁট তেমন বাঁকা বা গোল হয় না।যেমন: কত,অমর,কলম।
'অ'-ধ্বনির বিবৃত উচ্চারণের নিয়ম নিম্নরুপ:
১. অ – এর নিজস্ব উচ্চারন স্বাভাবিক
বা বিবৃত হয় ।যেমন: যেমন: জল, সরল, দখল,ইত্যাদি।
২. শব্দের দ্বিতীয় স্বর 'অ','আ','ও' হলে আদ্য 'অ'-এর উচ্চারণ স্বাভাবিক বা বিবৃত হয়।যেমন: বলা,বন্ধ,ধর্ম,অজ,কথা ইত্যাদি।
৩. 'স'অথবা 'সম' উপসর্গযুক্ত শব্দের আদি 'অ'-ধ্বনি স্বাভাবিক বা বিবৃত হয়।যেমন: সস্ত্রীক, সহাস্য,সজীব,সংস্কৃত,সবিনয় ইত্যাদি।
৪. 'না' অর্থে শব্দের
আদিতে 'অ' বা 'অন'
থাকলে আদ্য 'অ'-ধ্বনি
স্বাভাবিক বা বিবৃত হয়।যেমন:অমূল্য,অমৃত,অস্থির,অসীম,অধর্ম ইত্যাদি।
৫. 'অ'-স্বরধ্বনি যুক্ত
এক -'অক্ষর' শব্দের 'অ'-এর উচ্চারণ স্বাভাবিক বা বিবৃত হয়।যেমন: রব,যম,জপ,নদ ইত্যাদি।
৩. অন্ত - 'অ' ধ্বনির সংবৃত উচ্চারণের ৫টি নিয়ম লেখো।
উত্তর :
১। বংলা ভাষায় ব্যবহৃত বেশ
কিছু দ্বিরুক্ত শব্দের অন্ত 'অ' এর উচ্চারণ 'ও'
এর মত হয়।
যেমন : বড় বড় >বড়ো
বড়ো, কাঁদ কাঁদ >কাঁদো কাঁদো
ইত্যাদি।
২। ১১ থেকে ১৮ পর্যন্ত সংখ্যাবাচক শব্দের শেষে 'অ' এর উচ্চারণ 'ও' এর মত হয়।যেমন: এগার>এগারো,বার>বারো,সতের>শতেরো ইত্যাদি।
৩। 'ত' এবং 'ইত' প্রত্যয়যোগে গঠিত শব্দের শেষে 'অ' এর উচ্চারণ 'ও' এর মত হয়।যেমন: চলিত>চলিতো,জ্ঞাত>জ্ঞাতো ইত্যাদি।
৪। বিশেষ্য শব্দের শেষে 'হ' থাকলে 'অ' এর উচ্চারণ 'ও' এর মত হয়।যেমন: দেহ >দেহো,বিবাহ >বিবাহো ইত্যাদি।
৫। 'তর' ও 'তম' প্রত্যয়যোগে গঠিত শব্দের শেষে 'অ' এর উচ্চারণ 'ও' এর মত হয়।যেমনঃ-দীর্ঘতর>দীর্ঘতরো, বৃহত্তর >বৃহততরো ইত্যাদি।
৬। দুই অক্ষর বিশিষ্ট কোন শব্দের শেষ বর্ণ 'অ'-
ধ্বনি থাকলে উক্ত 'অ'- এর
উচ্চারণ সংবৃত হয়।যেমন: কাল>কালো,মত>মতো, এত>এতো ইত্যাদি।
৭। শব্দের শেষ অক্ষর যুক্ত ব্যঞ্জন হলে, অন্ত
-অ সংবৃত হয়।যেমনঃ- অভিজ্ঞ>ওভিগগো,নম্র>নমরো ইত্যাদি
৪. ‘মধ্য-অ’ ধ্বনি উচ্চারণের পাঁচটি নিয়ম উদাহরণসহ লেখো।
উত্তর :
নিচে মধ্য-অ ধ্বনির পাঁচটি নিয়ম উদাহরণসহ দেওয়া হলো—
ক. মধ্য ‘অ’-এর পরে ‘ই’ বা ‘উ’ ধ্বনি থাকলে সেই অ-এর উচ্চারণ সংবৃত বা ও-এর মতো হয়। যেমন—কাকলি > কাকোলি, জলধি
> জলোধি, সকরুণ > শকোরুন্।
খ. মধ্য অ-এর পরের ধ্বনিতে ঋ-কার থাকলে সেই ‘অ’ ও-রূপে উচ্চারিত হয়। যেমন—লোকনৃত্য > লোকোনৃতেতা,
উপবৃত্ত > উপোবৃতেতা।
গ. মধ্য ‘অ’ এর পরের ধ্বনিতে
য-ফলা থাকলে সেই অ-এর উচ্চারণ ‘ও’ এর
মতো হয়। যেমন—অদম্য > অদোমেমা,
অসহ্য > অশোজেঝা, অগম্য
> অগোমেমা ইত্যাদি।
ঘ. মধ্য ‘অ’ এর পরে ক্ষ, জ্ঞ-এর দুটো যুক্ত ব্যঞ্জনের যেকোনো একটি থাকলে সেই ‘অ’ ও-রূপে উচ্চারিত হয়। যেমন—অদক্ষ>
অদোকেখা, অবজ্ঞা > অবোগ্গাঁ,
বিশেষজ্ঞ > বিশেশোগেগাঁ।
ঙ. মধ্য অ-এর আগে অ, আ, এ,
ও—এই চারটি স্বরধ্বনির যেকোনোটি থাকলে সেই ‘অ’ ও-রূপে উচ্চারিত হয়। যেমন—কমল
> কমোল্, কানন > কানোন্,
বেতন > বেতোন্, ওজন
> ওজোন্
৫. এ'-
ধ্বনির স্বাভাবিক বা সংবৃত উচ্চারণের নিয়ম লেখো।
উত্তর:
এ'- ধ্বনির স্বাভাবিক বা সংবৃত
উচ্চারণের নিয়ম নিয়ম নিম্নরুপ.....
১. শব্দের গোড়ায় এ বা এ-কার থাকলে এবং তারপর অ / অা ছাড়া অন্য
স্বরধ্বনি থাকলে এ-ধ্বনির স্বাভাবিক বা সংবৃত উচ্চারণ হয়।
যেমন:এতিম,বেলি,দেবী,নেতৃত্ব,মেরুদণ্ড ইত্যাদি।
২. শব্দের দ্বিতীয় অক্ষর বা সিলেবলে ই-ধ্বনি(ই/ঈ), উ-ধ্বনি (উ/ঊ)কিংবা ঋ-ফলা থাকলে এ- ধ্বনির উচ্চারণ সংবৃত বা স্বাভাবিক হয়।
যেমন:
এক [এ্যাক] কিন্তু একটি [একটি],একটু [একটু]
এমন [অ্যামন] কিন্তু এমনি [এমনি]
বেটা [ব্যাটা ] কিন্তু বেটি
নেড়া [ন্যাড়া ] কিন্তু নেড়ি
৩. একাক্ষর সর্বনাম শব্দের গোড়ায় থাকলে এ বা এ-কারের স্বাভাবিক বা
সংবৃত উচ্চারণ হয়।
যেমন: কে,যে,সে,কেউ ইত্যাদি।
৪. একাক্ষর বা এক সিলেবলের শব্দের গোড়ায় এ বা এ-কারের পর র,ল,শ ধ্বনির হলন্ত উচ্চারণ হলে এ-ধ্বনির স্বাভাবিক বা
সংবৃত উচ্চারণ হয়।
যেমন: শেষ,দেশ,বেল,তেল,কেশ ইত্যাদি।
৫. আদ্য যুক্তব্যঞ্জনে এ-কার থাকলে এ-ধ্বনির স্বাভাবিক উচ্চারণ হয়।
যেমন; শ্রেণি,প্রেরণ,স্নেহ,শ্বেত ইত্যাদি।
৬. ব-ফলা
এর উচ্চারণের নিয়ম লেখো পাঁচটি।
উত্তর:
১. শব্দের প্রথমে ব-ফলা থাকলে ব-ফলার
উচ্চারণ হয় না।যেমন:ত্বক >তোক,স্বদেশ>শদেশ ইত্যাদি।
২. শব্দের মাঝখানে ব-ফলা থাকলে ব-ফলার
উচ্চারণ হয় না,ব-ফলা
এর যুক্ত ব্যঞ্জনটি দ্বিত্ব উচ্চারণ হয়। যেমন: বিশ্বাস>বিশশাস,অনুস্বার>ওনুশশার ইত্যাদি।
৩. শব্দের শেষে ব-ফলা থাকলে ব-ফলার
উচ্চারণ হয় না,ব-ফলা
এর যুক্ত ব্যঞ্জনটি দ্বিত্ব উচ্চারণ হয়।যেমন:বিশ্ব>বিশশো,বিদ্বান>বিদদান ইত্যাদি।
৪. সন্ধির ফলে ত'-যদি 'দ'- হয়ে যায়, তার সঙ্গে ব-ফলা হলে, ব-ফলা এর উচ্চারণ হয়। যেমন:
উদ্বেল>উদবেল,(উৎ+বেল),উদ্বিগ্ন>উদবিগনো(উৎ+বিগ্ন) ইত্যাদি।
৫. সন্ধির ফলে 'ক'-যদি 'গ'- হয়ে যায়, তার সঙ্গে ব-ফলা হলে, ব-ফলা এর উচ্চারণ হয়। যেমন: দিগ্বিদিক
>দিগবিদিক,দিগ্বিজয় >দিগবিজয় ইত্যাদি।
৬. 'ব' ও
'ম' এর সঙ্গে ম-ফলা হলে ম-ফলা এর
উচ্চারণ হয়। যেমন: সাব্বাস,লম্বা ইত্যাদি।।
৭. ম--ফলা
এর উচ্চারণের নিয়ম লেখো পাঁচটি
উত্তর
ম-ফলা এর উচ্চারণের নিয়ম নিম্নরুপ :
১.শব্দের প্রথমে ম-ফলা থাকলে ম-ফলার উচ্চারণ
হয় না।
যেমন: স্মরণ>শোঁরণ,শ্মশান>শঁশান ইত্যাদি।
২. শব্দের মাঝখানে ম-ফলা থাকলে ম-ফলার
উচ্চারণ হয় না,বরং
ম-ফলা যুক্ত ব্যঞ্জনটি দ্বিত্ব উচ্চারণ হয়। যেমন: বিষ্ময় >বিশশোঁয়, কস্মিনকাল > কশশিঁনকাল
ইত্যাদি।
৩. শব্দের শেষে ম-ফলা থাকলে ম-ফলার
উচ্চারণ হয় না,বরং
ম-ফলা এর যুক্ত ব্যঞ্জনটি দ্বিত্ব উচ্চারণ হয়। যেমন: গ্রীষ্ম > গ্রিশশোঁ,পদ্ম> পদদো,আত্ম>আততো ইত্যাদি।
৪. ন,ট,ং,গ,ণ,ম,ল- এ বর্ণগুলোর যে কোন
বর্ণের সঙ্গে ম-ফলা যুক্ত হলে ম-ফলার উচ্চারণ হয়।
যেমন: বাগ্মী >বাগমি,জন্ম>জনমো,মৃন্ময় >মৃনময়
ইত্যাদি।
৫. যুক্তব্যঞ্জনের সঙ্গে ম-ফলা যুক্ত হলে, ম-ফলার উচ্চারণ হয় না। যেমন: যক্ষ্মা>জোক্খা,লক্ষ্মণ>লকখোন
ইত্যাদি।
No comments:
Post a Comment