রাজাকার, দাড়ি টুপি ও অন্যান্য কুপানো সামগ্রী
এই ছবিটা বাংলাদেশের মহান মুঅক্তিযুদ্ধের একটা গুরুত্বপূর্ণ ছবি। কিন্তু এই ছবিকে "বাঙালী" জাতীয়তাবাদী শাহবাগীরা মিসইউজ করে এই ছবির ক্রেডিবিলিটি নষ্ট করে দিছে।
ছবিটার শাহবাগী তাফসীর হল- একজন পাকিস্তানি সৈনিক একজন লোককে নিরীক্ষণ করছে সে "মুসলমানি" করছে কি না?
এই প্রশ্নের মাঝে তারা তাদের "বাঙালী জাতীয়তাবাদী " প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করেছে, যা প্রকারান্তরে ইসলামোফোবিয়া।
ছবিটার মূল সোর্স ভারতীয় ফটোগ্রাফার কিশোর পারেখ, যিনি মুক্তিযুদ্ধের এরকম ২২ টা গুরুত্বপূর্ণ ছবি দিয়ে একটা বই লিখেছেন। বইটার নাম হলো "Bangladesh : A Brutal Birth"। এই বইয়ের ২২ পৃষ্ঠায় (আমার সংগ্রহে কাছে যেটা আছে) এই ছবির (চিত্র ১) বর্ণনায় লেখা আছে-
"Indian troops grimly round up villagers suspected to be Pakistani spies they peer into Lungis in search of weapons."
খুব সহজেই বুঝা যাচ্ছে যে, একজন ভারতীয় সৈন্য একজন মানুষকে নিরীক্ষা করছে তার লুঙ্গির আড়ালে কোন অস্ত্র আছে কি না? সেই বর্ণনা ঠিক উল্টো করে "ভারতীয় সৈন্য" এর জায়গায় পাকিস্তানি সৈন্য এবং "অস্ত্র আছে কিনা" পরীক্ষা করার পরিবর্তে "মুসলমান বা হিন্দু কি না" বসিয়ে দেয়া হলো।
এই কাজটা করেছে দৈনিক বাংলা পত্রিকা তাদের ডিসেম্বর ১৯৭২ এর "জেনোসাইড ইস্যু" সং্খ্যায়। এই ছবির নিচে তারা লিখে দেয় "ওরা মানুষ, বর্বরদের কাছে সেটা বড় কথা নয়- বড় কথা ছিলো ওরা হিন্দু না মুসলমান। তাই উলঙ্গ করে দেখছে।" (চিত্র ২)
নমুনা স্বরূপ এই ধারার একটা ফেইসবুক পোস্ট (চিত্র ৩) সং যুক্ত করা হলো।
এই ছবির সত্যতা নিয়ে গবেষণা করেছেন ড. নায়ানিমা মুখার্জি, যিনি একজন লেখক ও নৃবিজ্ঞানী। তিনি কিশোরের ছেলের ইন্টারভিউ নেন এবং তিনি তাত মাধ্যমে নিশ্চিত হন এই ছবির ক্যাপশন একটা প্রোপাগান্ডা। তিনি বলেন ব্যবহৃত অস্ত্রটির নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে সৈন্যটা একজন ভারতীয়। এই বিষয় নিয়ে তার গবেষণার শিরোনাম হলো " The absent piece of skin: Gendered, racialized
and territorial inscriptions of sexual violence
during the Bangladesh war" যা কেম্ব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে ২০১১ সালে প্রকাশিত হয়।

No comments:
Post a Comment