Ad-1

Thursday, May 11, 2017

শবে বরাতের ফজিলত


শবে বরাতের ফজীলত ও আমল:-
বছরের একটি ফজীলতপূর্ণ রাত হচ্ছে লাইলাতুন মিন নিসাফি শা’বান তথা লাইলাতুল বারাআত বা শবে বারাআত। এ লাইলাতুল বরাতে নিহিত রয়েছে মুমিন-মুসলিমের মুক্তি ও কল্যাণের বিভিন্ন উপকরণ। তাই এ রাতকে বলা হয়েছে লাইলাতুল বারাআত বা মুক্তির রাত। 
অন্যদিকে পবিত্র মাহে রমজানের পূর্বের মাস হওয়ার কারণে শাবান মাসকে বলা হয়েছে রমজান শরীফের প্রস্তুতির মাস।
লাইলাতুল বারাআতের অনেক তাৎপর্য, ফযীলত ও বরকত রয়েছে। মহানবী ( সা ) এরশাদ করেনঃ শাবান মাস হল আমার মাস আর পবিত্র রমজান মাস হল মহান আল্লাহ তাআলার মাস। তিনি আরও বলেন, তোমরা শাবানের চাঁদ সঠিকভাবে হিসাব রাখ।কেননা শাবানের চাঁদের হিসাব ঠিক হলে, রমজানের চাঁদের হিসাব সঠিক হতে সহায়ক হবে। ( মিশকাত শরীফ-১১৫পৃ )

শা’বান মাসের ১৪তম তারিখের দিবাগত রাত হচ্ছে- লাইলাতুল বারাআত বা শবে বারাআত। লাইলাতুল বারাআত হচ্ছে-গুনাহ থেকে মুক্তি লাভের রাত্রি। অর্থাৎ, এ রাত্রে ইবাদত-বন্দেগী করার মাধ্যমে মুমিন-মুসলামনদের গুনাহ মাফ হয়ে থাকে এবং মর্যাদা বৃদ্ধি হয়ে থেকে।

শা’বান এবং শবে বারাআতের করণীয় সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ ( সা ) এরশাদ করেন,
শাবান মাসের রোযা আমার নিকট অন্য মাসের তুলনায় অধিক প্রিয়। যখন তোমাদের নিকট শাবানের রাত্রি ( শবে বারাআত ) উপস্থিত হবে, তখন তোমরা সেই রাতটি জাগ্রত থাক ( নামাজ পড়ে, কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করে, তাসবীহ পড়ে, যিকির করে, দুআ করে ) এবং দিনের বেলা রোযা রাখ। কারণ, এ রাতে মহান আল্লাহ সূর্যাস্তের পর থেকে ফজর পর্যন্ত দুনিয়ার আসমানে তাশরীফ আনেন এবং তিনি ঘোষণা করেন- আছে কি এমন কোন ব্যক্তি যে, তার গুনাহ মাফীর জন্য আমার নিকট প্রার্থনা করবে? আমি তার গুনাহ সমূহ মাফ করে দিব। আছে কি এমন কোন রিযিক প্রার্থনাকারী, যে আমার নিকট রিযিক প্রার্থনা করবে? আমি তার রিযিকের ব্যবস্থা করে দিব। আছে কি এমন কোন বিপদগ্রস্ত, যে আমার নিকট বিপদ থেকে মুক্তি চাইবে? আমি তাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করব। এভাবে পূর্ণ রাত মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে ঘোষণা হতে থাকে এবং বান্দাদের উপর রহমত বৃষ্টির ন্যায় নাজিল হতে থাকে।( ইবনে মাজাহ শরীফ )
হযরত আয়েশা সিদ্দীক ( রা ) বর্ণনা করেন, মহানবী ( সা ) আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, হে আয়েশা! তুমি কি জান? আজ রাত ( নিসফে শাবান ) কী? হযরত আয়েশা ( রা ) বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি তো জানি না, দয়া করে বলুন। মহানবী ( সা ) বললেন, আজ রাতে আগামী বছরে যে সমস্ত বনী আদম জমীনের বুকে জন্মগ্রহণ করবে এবং আরা মৃত্যুবরণ করবে, তাদের তালিকা লিপিবদ্ধ করা হয়। বিশেষ করে বান্দাদের আমলনামা মহান আল্লাহর নিকট প্রকাশ করা হয়।

হযরত আয়েশা ( রা ) থেকে বর্ণিত অপর একটি হাদীসে মহানবী ( সা ) বলেন, আমি এক রাতে মহানবী ( সা )-কে বিছানায় পেলাম না। তাই আমি অত্যন্ত পেরেশান হয়ে খোঁজাখুঁজি আরম্ভ করলাম। খুঁজতে খুঁজতে দেখি, তিনি জান্নাতুল বাকীর মধ্যে মহান আল্লাহর প্রার্থনায় মগ্ন। তখন তিনি আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে আয়েশা! আমার নিকট হযরত জিবরাইল ( আ ) উপস্থিত হয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, আজ রাত হল নিসফে শাবান ( অর্থাৎ, লাইলাতুল বারাআত )। এ রাতে আল্লাহ তাআলা অধিক পরিমাণে জাহান্নামবাসী লোকদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। এমনকি কালব বংশের বকরীগুলোর লোম সমপরিমাণ গুনাহগার বান্দা হলেও। ( মিশকাত শরীফ-১১৫ পৃ )

হযরত মুআয ইবনে জাবাল ( রা ) বলেন, রাসূলে করীম ( সা ) এরশাদ করেছেন, আল্লাহ তাআলা অর্ধ শাবানের রাতে ( শাবানের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাতে ) সৃষ্টির দিকে ( রহমতের ) দৃষ্টি দেন এবং মুশরীক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত সবাইকে ক্ষমা করে দেন।

উক্ত হাদীসগুলো দ্বারা প্রমাণিত হচ্ছে যে, এ রাতে আল্লাহর তাআলার পক্ষ থেকে মাগফিরাতের দ্বার ব্যাপকভাবে উন্মুক্ত করা হয়। কিন্তু শিরকী কর্মকান্ডে লিপ্ত ব্যক্তি এবং অন্যের ব্যাপারে হিংসা বিদ্বেষ পোষণকারী মানুষ এই ব্যাপক রহমত, মাগফিরাত ও সাধারণ ক্ষমা থেকে বঞ্চিত থাকে।

যদি শবে বরাতের ব্যাপারে অন্য কোন হাদীস নাও থাকত, তবুও এ হাদীসটিই এ রাতের ফজীলত ও মর্যাদা প্রমাণ করার জন্য এবং এ রাতে মাগফিরাতের উপযোগী নেক আমলের গুরুত্ব প্রমাণিত হওয়ার জন্য যথেষ্ট হত। তদুপরি দশজন সাহাবী থেকে শবে বরাতের ফজীলত, মর্যাদ ও আমল সম্পর্কে হাদীস বর্ণিত রয়েছে। অবশ্য এর কোন কোনটির সনদ দূর্বল। আর এই সনদগত দূর্বলতার কারণে কেউ কেউ বলে দিয়েছেন, এ রাতের ফজীলত ভিত্তিহীন। 

কিন্তু মুহাদ্দিসগণ ও ফকীহগণের ফয়সালা হল, কোন একটি হাদীস যদি সনদগতভাবে দূর্বল হয়, তারপর বিভিন্ন হাদীস দ্বারা তা সমর্থিত হয়, তাহলে এ সমর্থনের কারণে তার দূর্বলতা দূর হয়ে যায়।
(ফাতহুল কাদীর, ১ম খন্ড-৪৬৭পৃ, ইসলাহী খুতুবাত, ৪র্থ খন্ড-২৬৬ পৃ )

ফুকাহায়ে কেরামের দৃষ্টিতে শবে বরাতঃ (মাসিক পত্রিকা- আদর্শ নারী থেকে সংগৃহীত )ফিকহে হানাফীঃ
আল্লামা শামী, ইবনে নুজাইম, আল্লাম শরমবুলালী, শাইখ আব্দুল হক দেহলভী, মাওলানা আশরাফ আলী থানভী, মাওলানা আব্দুল হক লাখনভী, মুফতী মুহাম্মদ শফী, মুফতী তাকী উসমানীসহ উলামায়ে হানাফীয়ার রায় হল, শবে বরাতে শক্তি সামর্থ্য অনুযায়ী জাগ্রত থেকে একাকীভাবে ইবাদত করা মুস্তাহাব। তবে এর জন্য জামাআত বদ্ধ হওয়া যাবে না।
( আদ-দুররুল মুখাতার, ২য় খন্ড-২৪-২৫পৃ, আল বাহরুর রায়িক, ২য় খণ্ড-৫২ পৃ, মা সাবাতা বিসসুন্নাহ-৩৬পৃ, মারাকিল ফালাহ-২১৯পৃ )

ফিকহে শাফেয়ীঃ ইমাম শাফেয়ী ( র)-এর মতে, শাবানের ১৫তম রাতে অধিক অধিক দুআ কবুল হয়ে থাকে। ( কিতাবুল উম্ম, ১ম খণ্ড-২৩১পৃ )

ফিকহে হাম্বলীঃ শাইখ ইবনে মুফলী হাম্বলী ( র ), আল্লাম মনসুর আল বাহুতী, ইবনে রজর হাম্বলী প্রমুখ হাম্বলী উলামায়ে কেরামের মতে শবে বরাতে ইবাদত করা মুস্তাহাব। ( আল মাবদা, ২য় খণ্ড-২৭পৃ, কাশফুল কিনা,১ম খণ্ড-৪৪৫পৃ, লাত্তায়িফুল মাআরিফ-১৫১পৃ )

ফিকহে মালেকীঃ ইবনে হাজ্ব মালেকী ( রহমতুল্লাহি আলাইহি ) বলেন, সালফে সালেহীনগণ এ রাতকে যথেষ্ট সম্মান করতেন এবং এর জন্য পূর্ব থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। ( আল মাদখাল,১ম খণ্ড-২৯২পৃ )

শবে বরাতের আমল:-
রাতে ইবাদত করা
হযরত আলা ইবনে হারিস ( র ) থেকে বর্ণিত, হযরত আয়িশা ( রা ) বলেন,একবার রাসূল ( সা ) নামাযে দাঁড়ান এবং এত দীর্ঘ সিজদা করেন যে, আমার ধারণা হয় তিনি হয়ত মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি তখন উঠে তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম। তখন তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল। যখন তিনি সিজদা থেকে উঠলেন এবং নামাজ শেষ করলেন, তখন আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে আয়েশা বা ও হুমাইরা! তোমার কি এ আশংকা হয়েছে যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তোমার হক নষ্ট করবেন? আমি বললাম, তা নয়, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার দীর্ঘ সিজদা দেখে আমার আশংকা হয়েছিল, আপনি মৃত্যু বরণ করেছেন কিনা। নবীজী ( সা ) জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি জান এটা কোন রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ( সা ) ভাল জানেন। রাসূল ( সা ) বললেন, এটা হল অর্ধ শাবানের রাত। আল্লাহ তাআলা অর্ধ শাবানে তাঁর বান্দাদের প্রতি নজর দেন এবং ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন, অনুগ্রহপ্রার্থীদের প্রতি অনুগ্রহ করেন। আর বিদ্বেষ পোষণকারীদেরকে ছেড়ে দেন তাদের অবস্থাতেই। ( বায়হাকী, ৩য় খন্ড-৩৮২পৃ )

এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হল, এ রাতে দীর্ঘ নফল নামাজ পড়া উত্তম, যাতে সিজদাও দীর্ঘ হবে। এছাড়াও এ রাতে কুরআন তেলাওয়াত, যিকির আযকার ইত্যাদি আমল করা যায়।

পরদিন রোযা রাখা
হযরত আলী ( রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ( সা) বলেছেন,পনেরো শাবানের (চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত) যখন আসে, তখন তোমরা রাতটি ইবাদত বন্দেগীতে কাটাও এবং দিনে রোযা রাখ। কেননা এ রাতে সূর্যাস্তের পর আল্লাহ তাআলা প্রথম আসমানে আসেন এবং বলেন, কোন ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছে কি? আমি তাকে ক্ষমা করবো। আছে কি কোন রিযিকপ্রার্থী? আমি তাকে রিযিক দিব। এভাবে সুবহে সাদিক পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা মানুষের প্রয়োজনের কথা বলে তাদেরকে ডাকতে থাকেন।
( সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস-১৩৮৪, বাইহাকী-শুআবুল ঈমান, হাদীস-৩৮২৩ )
এই রিওয়াতটির সনদ যইফ। কিন্তু মুহাদ্দিসীনে কেরামের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হল, ফাযায়েলের ক্ষেত্রে যইফ হাদীস গ্রহণযোগ্য। তাছাড়া শাবান মাসে বেশী বেশী নফল রোযা রাখার কথা বহু হাদীসে এসেছে এবং আইয়ামে বীজ তথা প্রতি চন্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোযা রাখার বিষয়টি সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। ( ইসলাহী খুতুবাত, ৪র্থ খন্ড-২৬৬পৃ )

ইবাদত করতে হবে নির্জনে
এ বিষটি মনে রাখতে হবে, এ রাতের আমলসমূহ বিশুদ্ধ মতানুসারে সম্মিলিত নয়; নির্জনে একাকীভাবে করণীয়। পুরুষদের জন্য তো ফরয নামাজ অবশ্যই মসজিদে আদায় করতে হবে। তারপর তারা এবং মহিলারা যা কিছু নফল পরার তা নিজ নিজ ঘরে একাকী পড়বেন। এসব নফল আমলের জন্য দলে দলে মসজিদে এসে সমবেত হওয়ার কোন প্রমাণ হাদীসে নেই। আর সাহাবায়ে কেরামের যুগেও এর রেওয়াজ ছিল না। (ইকতিযাউস সিরাতুল মুস্তাকিম,২য় খন্ড-৬৩১পৃ, মারাকিল ফালাহ-২১৯পৃ )

শাইখুল ইসলাম মুফতী তাকী উসিমানী ( দামাম বারকাতুম ) বলেন, ইমাম আযম আবু হানীফা ( র ) বলেছেন, নফল ইবাদত এমনভাবে করবে যে, সেখানে কেবল তুমি আছ, আর আছেন আল্লাহ। তৃতীয় কেউ নেই। সুতরাং, যে কোন নফল ইবাদতের ক্ষেত্রেই শরীয়তের অন্যতম মূলনীতি হল, তাতে জামাআত করা মাকরুহে তাহরীমী ও নিষিদ্ধ। ( ইসলাহী খুতুবাত, ৪র্থ খণ্ড-২৬৮পৃ )

হযরত আশরাফ আলী থানভী ( র )-এর মতঃ তিনি বলেন হাদীসে শবে বরাতের তিনটি কাজ সুন্নত মত করাকে সওয়াব ও বরকত লাভের উপায় বলা হয়েছে।
প্রথমতঃ পনেরো তারিখ রাতে কবরস্থানে গিয়ে মৃতদের জন্য দোয়া ও ইস্তেগফার করা। সাথে সাথে গরীব মিসকীনদের কিছু দান করে সে দানের সওয়াবটুকু ঐ মৃতদের নামে বখশে দিলে আরও ভাল হয়। সেই মুহূর্তে হাতে না থাকলে, অন্য সময় গোপনে কিছু দান করে দেওয়া উচিত।

দ্বিতীয়তঃ রাত জেগে একা একা বা বিনা আমন্ত্রণে জড়ো হয়ে যাওয়া দু চারজনের সাথে ইবাদতে মশগুল থাকা।

তৃতীয়তঃ শাবানের পনেরো তারিখ নফল রোযা রাখা।এ রাতের কিছু ভিত্তিহীন কাজকর্ম (মাসিক আদর্শ নারী থেকে সংগৃহীত )

ইসলামে এ রাতের নামাজের বিশেষ কোন নিয়মনীতি নির্ধারিত নেই। কিন্তু কেউ কেউ শবে বরাতের জন্য আলাদ পদ্ধতির নামাজ আছে বলে মনে করেন। কিন্তু এ বিশেষ পদ্ধতির নামাজ সম্পর্কে যে রেওয়াতগুলো আছে, তা সবই অমূলক ও মওযু। হাদীস শরীফের কোন কিতাবে এসব রিওয়াতের নাম নিশানা পর্যন্ত নেই।

এছাড়া, এ রাতে খিচুড়ি বন্টন, হালুয়া রুটি প্রথা, মসজিদ ইত্যাদি আলোকসজ্জা করা ইত্যাদি নাজায়িয ও বিদআত কাজ। এগুলো শয়তানের ধোঁকা। মানুষকে আসল কাজ থেকে বিরত রাখার জন্য শয়তান এসব অযথা কাজ-কর্মে মানুষকে লাগিয়ে দেয়। এসব থেকে আমাদেরকে দূরে থাকতে হবে।

আর খেয়াল রাখতে হবে, এ রাতে জাগ্রত থাকতে গিয়ে ফজরের নামাজ ফওত না হয়ে যায়। কেননা, এ সারারাত বিশেষ আমলও ফজরের ফরজ নামাজের বিকল্প বা সমতুল্য হতে পারবে না। যেহেতু, ফজরের নামাজ হচ্ছে ফরজ আর এ রাতের বিশেষ ইবাদত বন্দেগী হচ্ছে নফল।

তথ্য প্রযুক্তির এ যুগে অনেকে এ শবে বরাত নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে বিতর্ক করতেছে।অত বিতর্কে না জড়ানোটা খুব ভালো।
শবে বরাতের ব্যাপারে যে হাদিসগুলো আছে সেগুলোর সনদ একটু দুর্বল।কিন্তু দুর্বল হলেও যেহেতু হাদিসের বিপরীত আমল না করার কোন হাদিস নেই,সেহেতু এ হাদিসগুলোর ওপর আমল করা যায়। এ ব্যাপারে পূর্বেও উল্লেখ করা হয়েছে।
তাছাড়া শবে বরাতের গুরুত্ব সম্পর্কে দুর্বল হাদিস আছে।গুরুত্ব নেই এরকম তো কোন হাদিস কোন হাদিস পাইনি।তাই এ রাতে ইবাদত করা উত্তম।

তবে শবে বরাত বলে কোন নামায নেই।অন্যান্য নফল ইবাদত যেমন: নফল নামায,জীবনের কাযা নামায,অর্থ ও ব্যাখ্যাসহ কোরান তেলাওয়াত,বা শুধু কোরান পড়া,যিকির আযকার করা যেতে পারে এবং তা এ রাতে করাও উত্তম।না করলে গুনাহ হবে তা নয়।আবার বলছি,এশা ও ফজরেরর নামায জামাতে আদায় করার চেষ্টা করুন।

অনেকেই বলে এ রাতে ইবাদত করা বিদআত হবে,
বেদআত হোক তাতে সমস্যা কি?
বেদআত দুই প্রকার,
১. ভালো বিদআত বা বিদআতে হাসানাহ।
২.খারাপ বিদআত বা বিদআতে সাইয়্যাহ।
ভালোটা ভালো,,,
খারাপটা খারাপ
যেহেতু এটা ভাল,, সেহেতু এটা করলে সমস্যা কি?
আবার খট্টররা বলবে,,,বেদআত বেদআতই,,, এটা আবার প্রকার হবে কেন?
আরে ভাই এত দাত বা বেদআত করে লাভ নেই,এ রাতে ইবাদত করলে গুনাহ হবে,এরকম কোন দলিল আছে??
উত্তর যদি হয় : না,,,,,
তা হলে আমি ইবাদত করবো,আগামিকাল রোযা রাখব। আপনার সমস্যা আছে?

অত তর্ক বুঝি না,ইবাদত বুঝি,তাই ইবাদত করবো।গুনাহ হলে বলো,কোথায় লেখা আছে।

সুতারাং তর্ক না করে ইবাদত করো।।

সঠীক নিয়মে এ রাতে আমল করেই কেবল উপরোক্ত ফজীলতের অধিকারী হওয়া যাবে। আর বিশেষ করে সারা জীবনের গুনাহ থেকে তওবা করে এ রাতে আত্মশুদ্ধির প্রত্যয় গ্রহণ করা এবং সেই অনুযায়ী সারাজিবন চলা আমাদের কর্তব্য।
[আল্লাহ সকলকে তাঁর ইবাদত বা গোলামী করার তৌফিক দান করুন।আ...মীন...

No comments:

Post a Comment

Recent Post

ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯

১. ‘ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ ’ কবিতায় সালামের হাতে কেন অবিনাশী বর্ণমালা ঝরে ? ক. সংগ্রামী চেতনার কারণে     খ. দুঃখিনী মাতার অশ্রুজল দেখে গ. বরকত...

Most Popular Post